ইরান কি চাপে! ছবি: সংগৃহীত।
ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানির প্রতিনিধিদের সঙ্গে শুক্রবার বৈঠকে বসবেন বলে জানালেন ইরানের বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি। তাঁকে উদ্ধৃত করে এই খবর প্রকাশ করেছে ইরানের সরকারি সংবাদমাধ্যম। আরাকচি এ-ও জানালেন, এই তিন দেশের অনুরোধে জেনেভায় বৈঠকে বসবেন তিনি। সেই বৈঠকে থাকবেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ কূটনীতিকও। ইরান এই বৈঠকে রাজি হওয়ার পরেই জল্পনা, তবে কি আমেরিকা, ইজ়রায়েল-সহ পশ্চিমের দেশগুলির চাপে নত হতে চলেছে ইরান! ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচিতে কি ইতি টানতে চলেছে তারা, সেই নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।
সূত্রের খবর, সুইৎজ়ারল্যান্ডের জেনেভায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ কূটনীতিক কাজা কাল্লাসের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানির প্রতিনিধিরা। তার পরেই তাঁরা ইরানের বিদেশমন্ত্রী আরাকচির সঙ্গে বৈঠকে বসতে পারেন। ইজ়রায়েল-ইরানের মধ্যে সংঘাতের আবহে সক্রিয় হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। জার্মান প্রশাসনের একটি সূত্র বলছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং তিন দেশের প্রতিনিধির সঙ্গে ইরানের যে বৈঠক হতে চলেছে, তাতে সহযোগিতায় রয়েছে আমেরিকাও। বৈঠকের উদ্দেশ্য হল, ইরানের থেকে প্রতিশ্রুতি আদায়। বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং নাগরিকদের স্বার্থ ছাড়া আর কোনও কাজে পরমাণু শক্তি ব্যবহার করা হবে না, ইরানের থেকে এই প্রতিশ্রুতি আদায় করতে চায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলি। জার্মানির প্রশাসনের একটি সূত্রকে উদ্ধৃত করে এমনটাই জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স।
ওই সূত্রই বলছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ওই মহাদেশের তিন দেশের সঙ্গে ইরানের বৈঠকের পরে বিশেষজ্ঞ স্তরে আলোচনা হতে পারে। পরমাণু অস্ত্র তৈরি বন্ধ করা নিয়ে প্রতিশ্রুতি শুধু খাতায়-কলমে নয়, যাতে কার্যকরও করা হয়, বৈঠকে সেই বিষয় নিয়েও আলোচনা হতে পারে বলে ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে।
ইজ়রায়েল বার বার দাবি করেছে, পরমাণু অস্ত্র তৈরি করছে ইরান এবং তা ক্ষতিসাধন করতে পারে। ইরান সেই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে। আমেরিকা এখনও ‘বন্ধু’ ইজ়রায়েলের পাশে দাঁড়িয়ে সরাসরি হামলা চালায়নি ইরানে। তবে সেই সম্ভাবনা কখনওই উড়িয়েও দেয়নি। সরাসরি যুদ্ধে না জড়িয়েও ইরানে হামলার পথ খুঁজছে আমেরিকা, এমনটাই বলছে রিপোর্ট। এই আবহে জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্ৎজ় ইজ়রায়েলকে সমর্থন জানিয়েছেন। তেহরানকে একহাত নিয়ে তিনি জানিয়েছেন, ইরানিদের এ বার পিছু হঠা উচিত। বুধবার জার্মানির বিদেশমন্ত্রী ইয়োহান ভাডেফুল ইরানের নেতাদের সমঝোতার পথ খোঁজার আর্জি জানিয়েছেন। পাশাপাশি বলেছেন, ‘‘আলোচনার টেবিলে সব সময়ই বসা যায়। দেরি হয় না।’’ শুক্রবারের বৈঠকে ইরানকে কি সেই আলোচনার টেবিলেই নিয়ে আসতে চলেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও তার তিন দেশ, সে দিকেই থাকবে নজর।