ইদের আগেই ইরাকে বিস্ফোরণ, নিহত ১২০

রমজানের শেষ রাত। শেষ মুহূর্তের কেনাকাটি সারতে ইদের বাজারে তখন থিকথিকে ভিড়। হঠাৎই প্রবল শব্দ। নিমেষে পাল্টে গেল উৎসবের ছবিটা। রাজধানী বাগদাদের খুব কাছে দিয়ালা প্রদেশে আত্মঘাতী গাড়িবোমা বিস্ফোরণে প্রাণ হারালেন ১২০ জন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

বাগদাদ শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৫ ০২:৩০
Share:

বিস্ফোরণে বিধ্বস্ত খান বানি সাদ শহরের পথ। ছবি: এএফপি।

রমজানের শেষ রাত। শেষ মুহূর্তের কেনাকাটি সারতে ইদের বাজারে তখন থিকথিকে ভিড়। হঠাৎই প্রবল শব্দ। নিমেষে পাল্টে গেল উৎসবের ছবিটা।

Advertisement

রাজধানী বাগদাদের খুব কাছে দিয়ালা প্রদেশে আত্মঘাতী গাড়িবোমা বিস্ফোরণে প্রাণ হারালেন ১২০ জন। যাঁদের অধিকাংশই মহিলা ও শিশু। জখম ১৭০। টুইটারে বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট (আইএস)। ইরাকের উত্তরে হাওয়িজায় সম্প্রতি সুন্নি মুসলিমদের উপর হামলার বদলা নিতেই এই বিস্ফোরণ বলে দাবি তাদের।

দিয়ালার খান বানি সাদ শহরে শুক্রবার রাতে বিস্ফোরণটি হয়। মূলত শিয়া মুসলিমদেরই বাস সেখানে। পুলিশ জানিয়েছে, স্থানীয় সময় রাত আটটা নাগাদ বিস্ফোরক ঠাসা ছোট একটি ট্রাক ভরা বাজারে এসে দাঁড়ায়। তাতে অন্তত ৩ টন বিস্ফোরক ছিল। বিস্ফোরণে গুঁড়িয়ে গিয়েছে দোকানপাট। উড়ে গিয়েছে সংলগ্ন বাড়িগুলির ছাদ। দোকানগুলির ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে যায় ছিন্নভিন্ন দেহগুলি। পরিষেবার অভাবে রক্তাক্ত অবস্থায় বিস্ফোরণস্থলেই ছটপট করতে করতে মারা যান আরও অনেকে। সব্জির পেটিতে করে জখম শিশুদের তাড়াতাড়ি সরিয়ে ফেলতে সক্ষম হন স্থানীয়রা। বাকিদের অগত্যা অ্যাম্বুল্যান্সের অপেক্ষায় থাকতে হয়। ঘণ্টাখানেক পর এলাকা ঘিরে ফেলে নিরাপত্তাবাহিনী।

Advertisement

প্রশাসনিক উদাসীনতার অভিযোগে তত ক্ষণে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছেন স্থানীয়রা। এলাকার থানা, চৌকি ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা। ভাঙচুর করা হয় পুলিশের একাধিক গাড়ি। আগুনও লাগিয়ে দেওয়া হয় কয়েকটিতে। একে বিস্ফোরণ, তায় বিক্ষোভ। সব মিলিয়ে ফাঁপরে পড়ে প্রশাসন। শনিবার সকালের মধ্যে দিয়ালা জুড়ে মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত বাহিনী। বাড়তি অনেক চেক পোস্টও বসানো হয়। ইরাকের পার্লামেন্টের স্পিকার বলেন, ‘‘এই ঘটনা সাম্প্রদায়িকতার নোংরা রূপ। তীব্র নিন্দা করছি।’’ ঘটনার প্রতিবাদে আগামী তিন দিন শোক পালনের কথা ঘোষণা করেছে প্রদেশ সরকার। সেই সঙ্গে উৎসবের মরসুমে আর কোনও হামলা এড়াতে পার্ক, বিনোদন কেন্দ্রগুলি বন্ধ রাখার নির্দেশও দিয়েছে।

গত বছর অগস্টে এই দিয়ালাতেই একটি সুন্নি মসজিদে জঙ্গি হানায় নিহত হয়েছিলেন ৬৪ জন। আইএস-এর কাছে এলাকার উপজাতি সম্প্রদায়ের মানুষ বশ্যতা স্বীকার না করায় ওই হামলা চালানো হয়েছিল বলে দাবি করা হয়। চলতি বছর গোড়ায় ইরাকের সেনা ফের দখল নেয় দিয়ালার। শহর, গ্রামগুলি থেকে আইএস জঙ্গিদের রীতিমতো উপড়ে ফেলে আধাসেনা। তার পরেও হামলা থামেনি। ইরাকের প্রায় তিন ভাগ অংশই এখন আইএস-এর দখলে। বাদবাকি প্রদেশগুলিও কব্জা করার জন্য বারবার আক্রমণ করছে তারা।

শনিবার রাত পর্যন্ত দিয়ালায় দেহ উদ্ধারের কাজ চালিয়েছে ইরাকি সেনা। দলাপাকানো দেহগুলি সরাসরি সৎকারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেগুলি এতটাই বিকৃত যে নিহতদের অধিকাংশের পরিচয় জানাতে পারছেন না উদ্ধারকারী দলের কেউ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন