মূর্তি ভাঙায় মত্ত জঙ্গিরা। গত মাসে মসুলের জাদুঘরে এ ভাবেই তাণ্ডব চালিয়েছিল আইএস। —ফাইল চিত্র।
চোরাচালানের অভিযোগ উঠেছিল আগেই। এ বার খোলাবাজারে লুঠের সামগ্রী বিক্রির কৌশল নিল ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গি গোষ্ঠী। ইরাক এবং সিরিয়া থেকে লুঠ হওয়া কয়েক হাজার বছরের প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন বিকোচ্ছে অনলাইনে কেনাবেচার একটি সংস্থায়। প্রাচীন কিছু মুদ্রার পাশাপাশি তালিকায় রয়েছে দুর্লভ কিছু অলঙ্কার এবং স্থাপত্যও। পশ্চিম সিরিয়ার আপামিয়া শহর থেকে খোয়া যাওয়া এমনই দু’টি মুদ্রার সম্প্রতি দেখা মিলেছে ওই ওয়েবসাইটে। অনুমান, দু’টিই প্রাচীন গ্রিক সভ্যতার নির্দশন। শুধু বিজ্ঞাপন দেওয়াই নয়, অনলাইনে মুদ্রাদু’টির দামও ধার্য করেছে জঙ্গিরা। একটির দাম ৫৭ ইউরো, অন্যটি ৯০।
এ মাসের শুরুতেই টাইগ্রিস নদীর তীরে অ্যাসিরীয় শহর নিমরুদে হামলা চালায় জঙ্গিরা। ধ্বংসের পাশাপাশি চলে ব্যাপক লুঠপাটও। তার দিন কয়েক আগেই একই ধরনের তাণ্ডবের সাক্ষী হয় মসুলের জাদুঘর। মনে করা হচ্ছে, এ সব জায়গা থেকেই চোরাচালান হয়ে দুর্লভ সব প্রত্নসামগ্রী আসছে অলনাইনে। চাহিদার চেয়ে জোগান বেশি হওয়ায়, দাম অবশ্য কমের দিকেই।
জেরুজালেমের দাবি, চোরাপথে এর আগেও প্রত্নসামগ্রী বিক্রি করেছে জঙ্গিরা। এ বার সরাসরি আন্তর্জাতিক বাজার ধরতে চাইছে জঙ্গিরা। বরাত মিলছে কোথা থেকে? প্রশাসন সূত্রের খবর, পড়শি কিছু দেশ থেকেই নিয়মিত ‘অর্ডার’ আসছে। এমনিতেই প্রতিদিন ঘরছাড়া হচ্ছে বহু মানুষ, চোরাকারবারিরা ভিড়ছে তাদের দলেই। হাতে-হাতেই পাচার হয়ে যাচ্ছে মুদ্রার মতো ছোটখাটো প্রত্নসামগ্রী। তার পর সেখান থেকে পারস্য উপসাগরীয় বিভিন্ন দেশ হয়ে অনলাইন-বাজারে।
বিষয়টি সামনে আসায় নড়ে বসেছে অনলাইন সংস্থাটিও। এক কর্তা জানান, “বেশ কিছু সামগ্রী আমরা সরিয়ে ফেলেছি ওয়েবসাইট থেকে। তবু কী ভাবে এমনটা হল, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” প্রশাসনের অনুমান, সেনা হামলায় দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে জঙ্গিদের। ক্রমশ তাই এই ধরনের লুঠপাট ও বিক্রিতে মরিয়া আইএস।
চলছে তিকরিতের পুনর্দখল নিয়ে জঙ্গি-সেনা সংঘর্ষও। ইরাকি সেনার তরফে আজই দাবি করা হয়েছে, আগামী সপ্তাহের মধ্যেই সেখান থেকে নির্মূল হবে আইএস। সম্প্রতি একটি ভিডিও পেশ করেও জঙ্গিদের বার্তা দিয়েছে তারা। মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা সিআইএ-র অবশ্য অন্য মত। সংস্থার ডিরেক্টর জন ব্রেন্নন ওয়াশিংটন বলেন জানান, “অস্ত্র ও অর্থে আইএস আজ রীতিমতো শক্তিশালী। চাইলেই এদের রাতারাতি শেষ করা সম্ভব নয়।”