Soap

সাবানেও ‘বর্ণবিদ্বেষ’!

একটি পাঁচতারা হোটেলের ওয়াশরুমে আবিষ্কৃত হয়েছে এই খুড়োর কল। সেনসর-লাগানো স্বয়ংক্রিয় কলের নীচে হাত পাতলেই সাবান বেরিয়ে আসে। সেখানে কোনও বিশেষত্ব নেই। কিন্তু, এই কল যে বর্ণবিদ্বেষী! সে হাতের বর্ণ চেনে। ফরসা-হাত পাতলে সে অকৃপণ। সাবান বের হচ্ছে গলগলিয়ে। কিন্তু বিপত্তি কালো-হাত পাতলেই।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০১৭ ১৮:২৪
Share:

যন্ত্র নিথর।— ছবি চুকওয়ুএমেকা আফিকবো-এর টুইটার সূত্রে।

বর্ণবিদ্বেষী সাবান, না বর্ণচোরা যন্ত্র!

Advertisement

শোরগোল সোশাল মিডিয়ায়। পোস্ট হতে না হতেই ভাইরাল। হবে না-ই বা কেন! এমন বর্ণবিদ্বেষী সাবান তো কস্মিনকালে দেখা তো দূরের কথা, শোনেওনি কেউ কানে।

নাইজেরিয়ার চুকওয়ুএমেকা আফিকবো নামে এক যুবক টুইটারে এমন ভুতুড়ে কিংবা সেয়ানা যন্ত্রসাবানের ছবি পোস্ট করার পর দিনভর হইচই সোশ্যাল মিডিয়ায়। ইতিমধ্যেই দেড় লক্ষ বার রি-টুইট হয়েছে ছবিটি। উঠেছে মন্তব্যের ঝড়।

Advertisement

বিষয়টি কী?

একটি পাঁচতারা হোটেলের ওয়াশরুমে আবিষ্কৃত হয়েছে এই খুড়োর কল। সেনসর-লাগানো স্বয়ংক্রিয় কলের নীচে হাত পাতলেই সাবান বেরিয়ে আসে। সেখানে কোনও বিশেষত্ব নেই। কিন্তু, এই কল যে বর্ণবিদ্বেষী! সে হাতের বর্ণ চেনে। ফরসা-হাত পাতলে সে অকৃপণ। সাবান বের হচ্ছে গলগলিয়ে। কিন্তু বিপত্তি কালো-হাত পাতলেই। যন্ত্র নিথর। সাবানের স-ও বের হচ্ছে না। কালো-হাতে সাদা টিস্যুপেপার জড়িয়ে নিলেই যন্ত্র সাবান দিচ্ছে অকাতরে। কাগজ সরিয়ে নিলেই সে চুপ। শোরগোলের প্রেক্ষিতে নড়ে বসেছে হোটেল কর্তৃপক্ষ। বলছে, যান্ত্রিক ত্রুটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এই ভিডিও ঘিরেই কৌতূহল

কিন্তু, নিন্দুকরা বলছে, যন্ত্রের কোনও দোষ নেই। যন্ত্রী তাকে যেমন চালাচ্ছে, সে তেমনই চলছে।

আরও পড়ুন: স্ত্রী কেন সামনে হাঁটছে! ডিভোর্স দিলেন স্বামী

তবে, বিষয়টি যে পুরোপুরি প্রযুক্তিগত কোনও ত্রুটির ফলেই হয়েছে তা বুঝিয়ে দিয়েছেন পদার্থবিদর। কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞানের অধ্যাপক পার্থপ্রতীপ রায় জানালেন, এ গুলি আদতে সেন্সর নির্ভর৷ পদার্থ বিজ্ঞানের ভাষায় যাকে বলে এলডিআর বা লাইট ডিপেন্ডেণ্ট রেজিস্টেন্স৷ সাধারণ ভাবে হাত পাতলে এর থেকে নির্গত রশ্মি আটকে যায়৷ তখনই সার্কিটের সঙ্গে একটা যোগসূত্র তৈরি হয়৷ সাবান বা জল পরার পরিস্থিতি তৈরি হয়৷ আবার অনেক ক্ষেত্রে আলোর প্রতিসরণ-প্রতিফলনকেও কাজে লাগিয়ে এমন কাজ করা যেতে পারে৷ এ ক্ষেত্রে এমনটাই হতে পারে৷ সম্ভবত, ওই সাবানের বাক্স থেকে এমন রঙের রশ্মি বের হচ্ছিল যাকে কালো রঙ শুষে নিচ্ছিল, ফলে প্রতিফলন হচ্ছিল না৷ সাদা বা অন্য রঙের ক্ষেত্রে প্রতিফলন সহজে সম্ভব হচ্ছিল। 

আরও পড়ুন: চিন-ভারত ‘জন্মশত্রু’ নয়: সুর নামাল বেজিংও

আবার পদার্থবিদ তথা অ্যামিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কলকাতা ক্যাম্পাসের উপাচার্য ধ্রুবজ্যোতি চট্টোপাধ্যায় মনে করেন, “আলোর তরঙ্গের যে শক্তি রয়েছে, তার সাহায্যে সেন্সর খুলে যাবে কি খুলে যাবে না সেটা ঠিক হয়৷ সাদা আলো বিচ্ছুরিত হলে সেন্সর খুলে যায় ও সাবান বেরিয়ে আসে৷ কিন্তু, কালো আলোর যেহেতু বিচ্ছুরণ শক্তি নেই, সেটা সেন্সরকে খোলার নির্দেশ দিতে পারে না৷ ফলে সাবান বেরতে পারে না৷ এ ক্ষেত্রে হয়তো তেমন কিছু হয়েছিল৷”

তবে কারণ যাই হোক, কৌতূহলের কিন্তু বিরাম নেই৷

(এই লেখায় প্রথমে অ্যামিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জায়গায় অমেঠী বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলকাতা ক্যাম্পাসের উপাচার্য -এর বদলে কলকাতার উপাচার্য লেখা হয়েছিল)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন