প্রতিরক্ষা সচিব ম্যাটিস এবং জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান, দু’জনেই কাঠগড়ায় তুলেছেন পাক গুপ্তচর সংস্থাকে। ছবি: রয়টার্স।
পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর বিরুদ্ধে সরাসরি আঙুল তুলল আমেরিকা। সন্ত্রাসের সঙ্গে স্পষ্ট যোগ রয়েছে পাক গুপ্তচর সংস্থার সঙ্গে। মার্কিন সেনেটের আর্মড সার্ভিসেস কমিটির সামনে এমনই বয়ান দিলেন আমেরিকার জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ-এর চেয়ারম্যান জোসেফ ডানফোর্ড। মঙ্গলবার তিনি এই বয়ান দিয়েছেন বলে ওয়াশিংটনের সংবাদপত্র ‘দ্য হিল’ সূত্রের খবর। ওই একই কমিটির সামনে বয়ান দিয়েছেন মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব জেমস ম্যাটিসও। সন্ত্রাস প্রসঙ্গে আইএসআই-এর বিরুদ্ধে তাঁর বয়ান আরও চড়া। পাক সরকারের নীতিতে নয়, নিজেদের নীতিতে চলছে আইএসআই, দাবি ম্যাটিসের।
আরও পড়ুন: সব রোহিঙ্গাকে সন্ত্রাসবাদী বলা হয়নি, সুর বদলেও আপত্তি বহাল রাখল কেন্দ্র
মার্কিন সেনেটের আর্মড সার্ভিসেস কমিটির সামনে আমেরিকার আফগান নীতি সংক্রান্ত বিষয়ে ব্যাখ্যা দিচ্ছিলেন জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান ডানফোর্ড। সেই ব্যাখ্যায় স্বাভাবিক ভাবেই সন্ত্রাসের প্রসঙ্গ এসেছে এবং অবধারিত ভাবে তাতে জড়িয়ে গিয়েছে পাকিস্তানের নাম। আফগানিস্তানে যে সব সন্ত্রাসবাদী নাশকতা চলছে, তার পিছনে যে মূলত পাকিস্তান ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠনগুলিরই হাত, সে কথা আমেরিকা আগেও বহু বার বলেছে। এ বার সেনেটের কমিটিকে দেওয়া বয়ানেও শীর্ষ মার্কিন সামরিক কর্তা জানালেন, আফগানিস্তানে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের নেপথ্যে পাকিস্তানই। খুব স্পষ্ট করে ডানফোর্ড বলেছেন, ‘‘এটা আমার কাছে খুব স্পষ্ট যে, আইএসআই-এর সঙ্গে জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির যোগ রয়েছে।’’ পাকিস্তানের সরকার বা কোনও সরকারি সংস্থা সন্ত্রাসে মদত দেয় না বলে ইসলামাবাদ বার বারই দাবি করছে। কিন্তু আমেরিকা সে দাবিতে বিন্দুমাত্র বিশ্বাস রাখছে না বলেও ডানফোর্ড জানিয়েছেন।
সেনেটের আর্মড সার্ভিসেস কমিটির সামনে বয়ান দিচ্ছেন ম্যাটিস এবং ডানফোর্ড। এই বয়ানই অস্বস্তি বাড়িয়েছে ইসলামাবাদের। খবর মার্কিন মিডিয়া সূত্রের। ছবি: রয়টার্স।
মার্কিন সেনেটের আর্মড সার্ভিসেস কমিটির সামনে দেওয়া বয়ানে ডানফোর্ড যা বলেছেন, মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব জেমস ম্যাটিসের বয়ানও কিন্তু তার সঙ্গে মিলে গিয়েছে। আইএসআই-এর বিরুদ্ধে ম্যাটিসের সুর নাকি আরও চড়া। তিনি কমিটিকে জানিয়েছেন, পাকিস্তানের সরকার সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে চাইলেও, গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই সরকারের নির্দেশ মানছে না। আইএসআই নিজেদের নীতি নিজেরা তৈরি করছে এবং সন্ত্রাসবাদীদের সাহায্য করছে। কমিটিকে অনেকটা এমনই জানিয়েছেন তিনি। খবর রাশিয়া টুডে সূত্রের।
আরও পড়ুন: ‘ফ্রিডম অব অক্সফোর্ড’ সম্মান হারালেন সু চি
ম্যাটিস এবং ডানফোর্ড মঙ্গলবার সেনেট কমিটির পাশাপাশি হাউজ আর্মড সার্ভিসেস কমিটির সামনেও বয়ান দিয়েছেন। সেখানেও তাঁরা একই কথা বলেছেন বলে খবর। তবে পাকিস্তানকে এখনও কিছুটা সুযোগ দিতে চান ম্যাটিস। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে পাকিস্তান যদি লড়াই জোরদার করে, তা হলে কঠোর পদক্ষেপ না করার পক্ষপাতী ম্যাটিসরা। কিন্তু এর পরেও যদি পাকিস্তান সন্ত্রাসে মদত দেওয়া বহাল রাখে, তা হলে পাকিস্তানকে দেওয়া ‘মেজর নন-ন্যাটো আলায়ি’ তকমা কেড়ে নিতেও পিছপা হবে আমেরিকা। কমিটিকে এমনই জানিয়েছেন মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের শীর্ষকর্তারা।