কুর্দ শিশুদের অপহরণ করে প্রশিক্ষণ জঙ্গিদের

তৈল শোধনাগার নিয়ে লড়াই তো চলছিলই। এ বার প্রাকৃতিক গ্যাস সমৃদ্ধ শহর মনসুরিয়ত আল জাবালের দিকেও এগোল আইএসআইএস। বাগদাদ থেকে এক ঘণ্টার দূরত্বের এই শহরে চারটি প্রাকৃতিক গ্যাসসমৃদ্ধ এলাকা রয়েছে। বাগদাদের উত্তর এবং পশ্চিমের বিশাল এলাকা এমনিতেই এখন জঙ্গি-কবলে। এ দিন মনসুরিয়ত আল জাবালে ঢুকে ফের নিজেদের শক্তি জাহির করল আইএসআইএস।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

বাগদাদ শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০১৪ ০২:৫১
Share:

তৈল শোধনাগার নিয়ে লড়াই তো চলছিলই। এ বার প্রাকৃতিক গ্যাস সমৃদ্ধ শহর মনসুরিয়ত আল জাবালের দিকেও এগোল আইএসআইএস। বাগদাদ থেকে এক ঘণ্টার দূরত্বের এই শহরে চারটি প্রাকৃতিক গ্যাসসমৃদ্ধ এলাকা রয়েছে। বাগদাদের উত্তর এবং পশ্চিমের বিশাল এলাকা এমনিতেই এখন জঙ্গি-কবলে। এ দিন মনসুরিয়ত আল জাবালে ঢুকে ফের নিজেদের শক্তি জাহির করল আইএসআইএস।

Advertisement

এর মধ্যেই দেশের ভাইস প্রেসিডেন্ট খাদের আল খুজায়েই ১ জুলাই থেকে পার্লামেন্টের অধিবেশন শুরুর ডাক দিলেন আজ। ইরাকি টেলিভিশনে এই খবর জানিয়ে বলা হয়েছে, ৩০ দিনের মধ্যে প্রেসিডেন্ট ঠিক করা হবে। আর তার পরে আরও দু’সপ্তাহের মধ্যে ঠিক করা হবে দেশের প্রধানমন্ত্রী। নতুন সরকার গড়তে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে দ্রুত পদক্ষেপ করতে চাইছে ইরাক প্রশাসন। যদিও প্রধানমন্ত্রী নুরি আল মালিকি নির্বাচনের পক্ষপাতী নন। কিন্তু সুন্নি জঙ্গিদের নিয়ন্ত্রণে স্থায়ী সরকার গঠন ছাড়া আর কোনও রাস্তা আপাতত খোলা নেই ইরাকের কাছে।

কিছুটা অপরিকল্পিত ভাবেই এ দিন বাগদাদে হাজির হন ব্রিটেনের বিদেশমন্ত্রী উইলিয়াম হেগ। তিনি বলেন, “অস্তিস্ত্বের সঙ্কটে ভুগছে ইরাক। রাজনৈতিক ঐক্য ছাড়া ইরাক এই সমস্যা থেকে বেরোতে পারবে না।” হেগও এই সফরে মার্কিন বিদেশসচিব জন কেরির মতো নুরি আল মালিকির পাশাপাশি দেখা করবেন কুর্দিশ আঞ্চলিক নেতা মাসুদ বারজানির সঙ্গে।

Advertisement

জঙ্গি দমনে ইরাক যত রকম উপায়ের কথাই ভাবুক না কেন, আইএসআইএস কিন্তু আত্মঘাতী জঙ্গি তৈরিতে শিশুদের বেছে নিচ্ছে সেই দেশ থেকেই। কিছু দিন আগে মানবাধিকার সংগঠনের পর্যবেক্ষক দল জানিয়েছিল, সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে কী ভাবে শিশুদের কাজে লাগানো

হচ্ছে। একেবারে একই ছবি খুঁজে পাওয়া গেল এ ক্ষেত্রেও। ১৪০ জনেরও বেশি কুর্দিশ স্কুলপড়ুয়াকে অপহরণ করে সিরিয়ার নিয়ে গিয়ে আত্মঘাতী জঙ্গি হওয়ার প্রশিক্ষণ দিচ্ছে আইএসআইএস জঙ্গিরা। এদের বয়স ১৪ থেকে ১৬। আইএসআইএস নিয়ন্ত্রিত মানবিজ শহরে রেখে ছেলেদের পড়ানো হচ্ছে ইসলামি ধর্মগ্রন্থ। এই দল থেকে অবশ্য পালাতে পেরেছে কয়েকটি কিশোর। তার মধ্যে ১৫ বছরের মহম্মদ জানিয়েছে, প্রথম দিনই মুখোশ পরা জঙ্গিরা তাকে একটি ভিডিও দেখায়। যাতে দেখা যাচ্ছে, এক জনের মুণ্ডচ্ছেদ করা হচ্ছে। জঙ্গিরা তাকে হুঁশিয়ারি দেয়, কেউ পালানোর চেষ্টা করলে তারও ওই পরিণতি হবে। তবে মহম্মদ আর তার বন্ধু কোনওক্রমে পালাতে সক্ষম হয়।

গত মাসে সিরিয়ার আলেপ্পো শহর থেকে স্কুলের পরীক্ষা শেষে বাসে ফিরছিল এক ঝাঁক ছেলেমেয়ে। ওই সময়েই তাদের অপহরণ করে জঙ্গিরা। মহম্মদ বলেছে, “আমরা খুব ভয় পেয়ে যাই। বাড়ি যাব বলে আনন্দে ছিলাম। কিন্তু আমাদের কেন তুলে নিয়ে গেল, বুঝিনি।”

মানবিজের একটি মসজিদে তাদের নিয়ে গিয়ে হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয় কম্বল। একটি ছোট ঘরে ১৭টি ছেলেকে একসঙ্গে শুতে বাধ্য করা হয়। তার পর ভোরে উঠেই প্রার্থনা। কয়েক ঘণ্টা ধরে শরিয়া আইন পাঠ। বাকি দিন ভয়ানক সব ভিডিও দেখা। তাতে কেবল বীভৎস কায়দায় মেরে ফেলার দৃশ্য। অপহৃত একটি ছেলের বাবা কুর্দিশ নেতা।

তিনি বলেন, “ওরা ছেলেদের মাথা খাচ্ছে। আমরা ওদের এক রকম ভাবে বড় করছিলাম। এ বার মানসিক ভাবে ওদের কী হবে, জানি না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন