ছবি: সংগৃহীত
জেমস ক্যামেরনের বিখ্যাত ছবি ‘টাইটানিক’-এর দৃশ্য— জাহাজ তখন ডুবে যাচ্ছে। লাইফবোটে ওঠার জন্য হুড়োহুড়ি ডেকে। সে দিকে না গিয়ে একটি ঘরে ছোট্ট ছেলেমেয়েকে ঘুম পাড়িয়ে দিচ্ছেন মা। অন্য ঘরে, পরস্পরকে জড়িয়ে ধরে শেষ চুম্বন করলেন বৃদ্ধ দম্পতি। এত দিন সবাই ভাবতেন, এই দৃশ্যগুলি নিছকই নাটকীয়। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, ১৯১২-এর ১৪ এপ্রিল রাতের সেই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার সময়ে এক বৃদ্ধ দম্পতির ভালবাসার নজিরই জায়গা করে নিয়েছিল ছবিটিতে।
জানা গিয়েছে, ফ্রান্সে ছুটি কাটিয়ে টাইটানিকের প্রথম শ্রেণিতে আমেরিকায় ফিরছিলেন ইসিডর স্ট্রস (৬৭) ও তাঁর স্ত্রী ইসা (৬৩)। সে রাতে রাতের খাবার খেয়ে শুয়ে পড়েন স্ট্রস দম্পতি। হিমশৈলে ধাক্কা খাওয়ার পরে টাইটানিকের ডেকে হুটোপাটি শুরু হলে প্রথম শ্রেণির বাকি যাত্রীদের সঙ্গে স্ট্রস দম্পতির জন্যও লাইফবোটের ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু ইসাকে লাইফবোটে তুললেও ওঠেননি ইসিডর। নিজের জায়গা দিয়ে দেন অন্য মহিলা যাত্রী ও বাচ্চাদের। স্বামীকে ফেলে বাঁচতে চাননি ইসাও। বারণ সত্ত্বেও লাইফবোট থেকে নেমে পড়েন তিনি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, লাইফবোট যখন ডুবন্ত টাইটানিক থেকে ক্রমশ দূরে সরে যাচ্ছে, তখনও রেলিংয়ের ধারে পরস্পরকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে দেখা গিয়েছিল ওই বৃদ্ধ-বৃদ্ধাকে। পরে ইসিডরের দেহ উদ্ধার করা হলেও খোঁজ মেলেনি ইসার।
সে দিনই নজির গড়েন স্ট্রস দম্পতি। যা থেকে অনুপ্রাণিত ছবির সেই দৃশ্য, যেখানে জ্যাককে ছেড়ে যেতে নারাজ রোজ লাইফবোটে ওঠার পরেও ফিরে আসেন জাহাজে।