যুগলে: প্রেমিক কোমুরোর সঙ্গে মাকো। রবিবার। রয়টার্স
রাজত্ব, রাজপ্রাসাদ, এমনকী ‘রাজকুমারী’র অধিকারটুকুও যে তাঁকে ছাড়তে হবে, তিনি জানতেন। কারণ পাত্র কোনও রাজপুত্র নন, একেবারেই সাধারণ নাগরিক। জাপানের রাজপরিবারে এটাই দস্তুর। তবু ভালবাসার মানুষের জন্য এ আর এমনকী!
রবিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে বিয়ের খবরটা ঘোষণা করে ফেললেন জাপানের রাজকুমারী মাকো। বললেন, ‘‘ভালবেসে এমন সিদ্ধান্ত নিতে পেরে আমি ভীষণ খুশি।’’
হবু স্বামী ২৫ বছরের কেই কোমুরো ল’ফার্মে কাজ করেন। দেশের পর্যটন সংক্রান্ত একটি প্রতিযোগিতায় জিতে এক সময়ে ‘প্রিন্স অব দ্য সি’ হয়েছিলেন। মাকোর সঙ্গে সম্পর্কটা দানা বেঁধেছিল তিন বছর আগে। এ দিনও সাংবাদিক বৈঠকে পাশাপাশি বসেছিলেন দু’জনে। কেই বললেন, ‘‘ও অনেকটা চাঁদের মতো, নিশ্চুপে আলো ছড়ায়।’’ মিষ্টি হেসে মাকোও বললেন, ‘‘আর ও আমার সূর্য।’’
জুলাইয়েই বিয়ের ঘোষণা হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সে সময়ে বন্যাবিধ্বস্ত ছিল দেশের দক্ষিণ অংশ। তাই পরিস্থিতি বিচার করে স্থগিত রাখা হয়েছিল বিয়ের তোড়জোড়। আজ রাজবাড়ির তরফে এক আধিকারিক জানালেন, সব ঠিক থাকলে ২০১৮ সালের গ্রীষ্মেই বিয়ের অনুষ্ঠান হবে।
রাজা আকিহিতোর দ্বিতীয় পুত্র আকিশিনোর মেয়ে বছর পঁচিশের মাকো। বাবা-ঠাকুরদা বা জেঠু, সকলেই রাজপরিবারের বাইরে বিয়ে করেছেন। কিন্তু শুধুমাত্র মেয়েদের ক্ষেত্রেই নিয়মটা হল, দেশের সাধারণ নাগরিককে বিয়ে করলে ‘রাজকন্যা’র অধিকার খোয়াতে হবে। মাকো বলেন, ‘‘ছোট থেকেই জানতাম নিয়মটা। তা বলে রাজপরিবারের কোনও দায়িত্ব এখনও পর্যন্ত এড়িয়ে যায়নি। সমস্ত কর্তব্য পালন করেছি।’’
এ নিয়ে বিতর্কও শুরু হয়েছে। নিয়মকানুনে আটকে কেন মেয়েরাই আত্মত্যাগ করবে? কেন একুশ শতকেও আইন বদলাবে না? প্রাচীনপন্থীরা অবশ্য ‘পরিবর্তন’ মানতে নারাজ। এমনকী প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবেও দু’শতকের রীতিনীতি বদলের বিপক্ষে।