জেরুসালেম কার, খোঁচা এর্দোগানের

ইস্তানবুলে একটি ধর্মীয় সম্মেলনে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিচেপ তাইপ এর্দোগান বলেন— ‘‘জেরুসালেম প্যালেস্তাইনের বেদখল হয়ে যাওয়া রাজধানী, ইজরায়েলের নয়।’’

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ইস্তানবুল শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:৪১
Share:

জেরুসালেম। ইনসেটে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এর্দোগান।

জেরুসালেমকে ‘ইজরায়েলের রাজধানী’র স্বীকৃতি দিয়ে পুরনো ঘা খুঁচিয়ে দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শহরটি কার, তা নিয়ে ফুঁসছিল মুসলিম দুনিয়া। আজ ইস্তানবুলে একটি ধর্মীয় সম্মেলনে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিচেপ তাইপ এর্দোগান বলেন— ‘‘জেরুসালেম প্যালেস্তাইনের বেদখল হয়ে যাওয়া রাজধানী, ইজরায়েলের নয়।’’

Advertisement

জেরুসালেম কার, দশকের পর দশক ধরে সে প্রশ্নে উত্তাল ইজরায়েল ও প্যালেস্তাইনের সম্পর্ক। প্রাচীন শহরটি একই সঙ্গে মুসলিম, ইহুদি ও খ্রিস্টানদের পবিত্রভূমি হিসেবে পরিচিত। অভিযোগ, ১৯৮০-তে এক রকম দখল করে জেরুসালেমকে নিজেদের রাজধানী ঘোষণা করে ইজরায়েল। প্যালেস্তাইন যা মেনে নেয়নি। মান্যতা দেয়নি বাকি দুনিয়াও। প্যালেস্তাইনের দাবি, ইজরায়েলের দখল করে রাখা পূর্ব জেরুসালেম ভবিষ্যতে তাদের রাজধানী হবে। আর ইজরায়েলের বক্তব্য, জেরুসালেমকে তারা ভাগ হতে দেবে না।

৬ ডিসেম্বর হঠাৎই ট্রাম্প ঘোষণা করেন, জেরুসালেমকে ইজরায়েলের রাজধানীর স্বীকৃতি দিচ্ছে আমেরিকা। সেই অনুযায়ী শীঘ্রই তেল আভিভ থেকে জেরুসালেমে সরানো হবে মার্কিন দূতাবাস। শুধু ইজরায়েলই এই ঘোষণাকে ‘সাহসী সিদ্ধান্ত’ বলে প্রশংসা করে। এর নিন্দা করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন জানায়, আমেরিকা পশ্চিম এশিয়াকে ভয়ানক পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে দিল। ট্রাম্পের সিদ্ধান্তকে যে তাঁরা কেউ মানেন না, সে কথা জানিয়ে রাষ্ট্রপ্রধানদের বক্তব্য, ইজরায়েল ও প্যালেস্তাইন নিজেরাই জেরুসালেম-বিতর্ক মিটিয়ে নিক। কোনও তৃতীয় দেশের নাক গলানোর কী আছে!

Advertisement

আরও পড়ুন: করাচি থেকে এসেছে বিমান, পাল্টা চাপে মোদী

যদিও সে কথায় ক্ষোভ মেটেনি। ক্ষোভের আঁচ পড়েছে ইস্তানবুলের ধর্মীয় সম্মলনে। বিভিন্ন মুসলিম দেশের রাষ্ট্রপ্রধান-সহ ৫৭ সদস্যের ওই সম্মেলনে আজ ট্রাম্পের সিদ্ধান্তকে সম্পূর্ণ খারিজ করে দিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এর্দোগান। জেরুসালেম প্রসঙ্গে মুসলিম দুনিয়াকে একজোট হওয়ার ডাক দিয়েছেন প্যালেস্তাইনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। তিনি বলেন, ‘‘এখন থেকে পশ্চিম এশিয়ার শান্তিপ্রক্রিয়ায় আমেরিকার
ভূমিকাকে আমরা আর মানি না।’’ বরং পশ্চিম এশিয়ায় শান্তি ফেরাতে রাষ্ট্রপুঞ্জকে এগিয়ে আসার ডাক দিয়েছেন তিনি। শ্লেষের সুরে বলেছেন, ওয়াশিংটনের আর ‘ক্ষমতা’ নেই।

আব্বাসের বক্তব্য, প্যালেস্তাইন শান্তিপূর্ণ ভাবে জেরুসালেম-বিতর্ক মেটাতে চেয়েছিল। কিন্তু আমেরিকা যা করল, তার পর আর তাকে ‘নিরপেক্ষ মধ্যস্থতাকারী’ হিসেবে মেনে নেওয়া যাবে না। রাষ্ট্রপুঞ্জই বরং হস্তক্ষেপ করুক। সম্মেলনে উপস্থিত থাকতে পারেননি সৌদি রাজা সলমন। যদিও একই সুরে তিনিও বলেন, ইজরায়েলের দখল করে রাখা পূর্ব জেরুসালেম প্যালেস্তাইনেরই রাজধানী হওয়া উচিত। ‘‘মুসলিম রাষ্ট্রনেতাদের এই দাবি অযৌক্তিক,’’ মন্তব্য করেছেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন