জল্পনার শেষ। উইকিলিকস-প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের পাশে দাঁড়াল রাষ্ট্রপুঞ্জের তদন্তকারী প্যানেল। তাদের বক্তব্য, ইকুয়েডর দূতাবাসের ‘বন্দিদশা’ থেকে মুক্তি দেওয়া হোক অ্যাসাঞ্জকে। শুধু তা-ই নয়, ‘স্বাধীনতা ক্ষুন্ন’ করে যে ভাবে তাঁকে আটকে রাখা হয়েছে, তার জন্য দেওয়া হোক ক্ষতিপূরণও।
গত কালই ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের একাংশ দাবি করেছিল, অ্যাসাঞ্জের সমর্থনে মত প্রকাশ করবে রাষ্ট্রপুঞ্জ। যদিও তাতে জল্পনা থামেনি। অ্যাসাঞ্জের সমর্থনে আজ রাষ্ট্রপুঞ্জের তদন্তকারী প্যানেলও জানায়, ‘‘কার্যত গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে অ্যাসাঞ্জকে।’’ এই ঘোষণার পর অ্যাসাঞ্জ অবশ্য কী করবেন বলে ঠিক করেছেন, তা জানা যায়নি।
ব্রিটেনের বিদেশ দফতরের বক্তব্য, ‘‘রাষ্ট্রপুঞ্জের ওই রিপোর্টে কোনও কিছু বদলে যাচ্ছে না। বরং এ বার সরকারি ভাবে ওই মতামতের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে।’’ বিদেশ সচিব ফিলিপ হ্যামমন্ডের কথায়, ‘‘রাষ্ট্রপুঞ্জের যুক্তি হাস্যকর। অ্যাসাঞ্জ তো নিজেই বিচারব্যবস্থার হাত থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। যখন ইচ্ছে উনি বেরিয়ে আসতে পারেন ইকুয়েডরের দূতাবাস থেকে। কিন্তু ওঁকে সুইডেনের হাতে তুলে দেওয়া হবেই।’’
২০১০ সালে অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার দু’টি পৃথক অভিযোগ আনেন দুই মহিলা। এর মধ্যে এক জন ধর্ষণের অভিযোগ করেন। জেরা করার জন্য অ্যাসাঞ্জকে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানায় সুইডেন। উইকিলিকস-প্রতিষ্ঠাতার অবশ্য দাবি ছিল, তাঁকে ফাসানো হয়েছে। মার্কিন সেনাবাহিনীর বেশ কিছু গোপন নথি ফাঁস করে দেওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে এই ষড়যন্ত্র করেছে আমেরিকা। সুইডেন আসলে তাঁকে গ্রেফতার করে আমেরিকার হাতে তুলে দেওয়ার ফন্দি এঁটেছে। এর পরই ২০১২ সালে লন্ডনের ইকুয়েডর দূতাবাসে আশ্রয় নেন অ্যাসাঞ্জ। মেট্রোপলিটন পুলিশ ঘোষণা করে, দূতাবাস থেকে বেরোলেই অ্যাসাঞ্জকে গ্রেফতার করা হবে। কারণ, যৌন হেনস্থার মামলাটি পরে তুলে নেওয়া হলেও ধর্ষণের মামলা বহাল রয়েছে।
মেট্রোপলিটন পুলিশ আজও জানিয়েছে, ইউরোপে অ্যাসাঞ্জের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা এখনও বহাল রয়েছে। অতএব ব্রিটেন এখনও তাঁকে সুইডেনের হাতে তুলে দিতে বাধ্য।