ইংল্যান্ডের রাস্তায় ছুটছে ঝালমুড়ি এক্সপ্রেস

প্রথম দিনেই মারকাটারি বিক্রি। তারপর আর চলা থামেনি ডানকানের ঝালমুড়ি এক্সপ্রেসের! কোনও পাকাপোক্ত ঠিকানা নেই, লন্ডন এবং তার আশপাশের শহরে ঘুরে বেড়ান তিনি। তাঁর টুইটার অ্যাকাউন্ট ফলো করলেই জানা যায়, কখন, কোথায় থাকবে ‘ঝালমুড়ি এক্সপ্রেস’।

Advertisement

শ্রাবণী বসু

লন্ডন শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৮ ০২:৩৪
Share:

ঝালমুড়ি বানাচ্ছেন ডানকান। ছবি: টুইটার

প্রথমে নিলেন এক হাতা মুড়ি। তাতে মেশালেন ছোলা আর বাদাম ভাজা। সঙ্গে দিলেন শশা কুচি, পেঁয়াজ কুচি, আদা কুচি, লেবুর রস। দু’-এক ফোঁটা সর্ষের তেলও। তার পর

Advertisement

বেশ নেড়েচেড়ে সেটা খবরের কাগজের ঠোঙায় ঢেলে খদ্দেরের হাতে ধরিয়ে দিলেন।

না, লোকাল ট্রেন বা কলকাতার রাস্তা নয়। ইংল্যান্ডের বিভিন্ন শহরে এ ভাবেই বিক্রি হচ্ছে ঝালমুড়ি। সৌজন্যে, এক ব্রিটিশ শেফ— অ্যাঙ্গাস ডেনুন ডানকান। খাস কলকাতা থেকেই তিনি শিখেছেন এই ঝালমুড়ি বানানোর কৌশল।

Advertisement

নেহাতই ঘটনাচক্রে ডানকানের কলকাতায় পা দেওয়া। সেটা ২০০৪-এর কথা। অস্ট্রেলিয়া থেকে ব্রিটেনে ফিরছিলেন ডানকান। উড়ানের স্টপওভার ছিল কলকাতা। সেটাই কল্লোলিনীর সঙ্গে তাঁর প্রথম পরিচয়। ডানকানের কথায়, ‘‘কলকাতা সম্পর্কে চিরকাল খারাপ খারাপ কথা শুনে এসেছি। আবর্জনা, পকেটমার, লোডশেডিং। কিন্তু শহরটা ঘুরে দেখতে গিয়ে চমকে গেলাম।’’ নিউ মার্কেটে প্রথম খেয়েছিলেন ঝালমুড়ি। এবং প্রথম আস্বাদনেই প্রেম!

দেখুন ভিডিয়ো:

তবে তখনও ডানকান ভাবেননি, এই ভাললাগাকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন। স্ট্রিট ফুডের উপর তথ্যচিত্র বানানোর ইচ্ছে ছিল লন্ডনের কভেন্ট গার্ডেনের নামজাদা এক রেস্তরাঁর এই শেফের। সেই স্বপ্ন পূরণ করতেই ২০১৪ সালে চাকরি ছেড়ে দেন তিনি। সে বছরই ফের আসেন কলকাতা।

সেই ছবি দিনের আলো দেখেনি। নির্দেশক হিসেবেও কেরিয়ার সাজাতে পারেননি ডানকান। শেষমেশ রান্নার জগতেই ফিরে যান তিনি। তবে আর রেস্তরাঁ নয়। এ বার নিজেই ফুডভ্যান নিয়ে নেমে পড়েন। ঠিক করেন, এমন এক ‘ফাস্ট ফুড’ বিক্রি করবেন, যা আর পাঁচটা চটজলদি খাবারের থেকে অনেকটাই আলাদা। তবু মনে মনে একটা ভয় ছিল— ফ্রায়েড ফিশে অভ্যস্ত ব্রিটিশ রসনায় কি সাড়া জাগাতে পারবে ঝালমুড়ি!

প্রথম দিনেই মারকাটারি বিক্রি। তারপর আর চলা থামেনি ডানকানের ঝালমুড়ি এক্সপ্রেসের! কোনও পাকাপোক্ত ঠিকানা নেই, লন্ডন এবং তার আশপাশের শহরে ঘুরে বেড়ান তিনি। তাঁর টুইটার অ্যাকাউন্ট ফলো করলেই জানা যায়, কখন, কোথায় থাকবে ‘ঝালমুড়ি এক্সপ্রেস’। শুধু ঝালমুড়ি নয়, চাট এবং ভেলপুরিও বিক্রি করেন ডানকান। বিয়ে বা অন্য অনুষ্ঠানেও ডাক পড়ে তাঁর, অতিথিদের ঝালমুড়ি খাওয়ানোর জন্য।

আরও পড়ুন: ‘এ ভাবে প্রাণটা চলে গেল?’, ডুকরে উঠলেন মনীষার মা

এক মেমসাহেবের হাতে ঝালমুড়ির ঠোঙা তুলে দিয়ে ডানকান বললেন, ‘‘ভাল স্বাদের কোনও দেশ হয় না। আমার এই ঝালমুড়ি খেলেই তা বুঝতে পারবেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন