নেপালের ক্ষমতা আপাতত সেনাবাহিনীর হাতে। ছবি: রয়টার্স।
নেপালে আটকে থাকা ভারতীয়দের দেশে ফেরাতে বিশেষ বিমান চালাবে এয়ার ইন্ডিয়া। বুধবার এবং বৃহস্পতিবার বিশেষ বিমান চলবে দিল্লি থেকে কাঠমান্ডু পর্যন্ত। তবে বিমান সংস্থা জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার থেকে পরিষেবা পুরোপুরি স্বাভাবিক হবে।
নেপালের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে সে দেশের সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কিকে বেছে নিল জেন জ়ি। বুধবার আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা কাঠমান্ডুতে সভা করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
নেপাল জুড়ে রাতের কারফিউ জারি করল সেনাবাহিনী। বিকেল ৫টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত মানুষকে রাস্তায় বেরোতে নিষেধ করা হয়েছে।
নেপালের অসামরিক বিমান পরিবহণ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ত্রিভুবন বিমানবন্দরে বুধবার থেকে পরিষেবা স্বাভাবিক হবে। বিমানবন্দরে পৌঁছোনোর আগে বিমান সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যাত্রীদের।
নেপালের অশান্তিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৫, আহত ৬০০-র বেশি। বুধবার এমনটাই জানিয়েছে কাঠমান্ডুর স্বাস্থ্য মন্ত্রক।
অশান্ত নেপালে আটকে পড়া ভারতীয়দের দেশে ফেরাতে তৎপর ভারত সরকার। নেপালের সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। সূত্রের খবর, কাঠমান্ডু বিমানবন্দরেই আটকে আছেন ৪০০-র বেশি ভারতীয়। তাঁদের ফেরাতে নয়াদিল্লি থেকে বিশেষ বিমান পাঠানো হবে।
রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস জানিয়েছেন, নেপালের পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে। দ্রুত শান্তি ফেরানোর বার্তা দিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার থেকেই নেপালের বিভিন্ন জেল থেকে পালানো শুরু করেছেন বন্দিরা। নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ানোর ছবিও প্রকাশ্যে এসেছে। জানা গিয়েছে, ভারতে ঢোকার চেষ্টা করেন জেলপালানো বন্দিরা। তবে সশস্ত্র সীমান্ত বল (এসএসবি) সেই চেষ্টা রুখে দেয়।
শাসনভার হাতে নেওয়ার পরেই নেপাল জুড়ে ধরপাকড় শুরু করল সে দেশের সেনাবাহিনী। মঙ্গলবার রাত ১০টা থেকে বুধবার সকাল ১০ পর্যন্ত হিংসা, লুটপাটের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ২৭ জনকে গ্রেফতার করল সেনা।
নেপালের সেনাপ্রধানের সঙ্গে মধ্যরাতে আলোচনায় বসেন বিক্ষোভকারীরা। তাঁদের দাবিদাওয়া শোনেন সেনাপ্রধান। বুধবার নেপালের রাষ্ট্রপতি রামচন্দ্র পৌডেলের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের আলোচনা হতে পারে। সেই প্রস্তুতি চলছে। এই আলোচনা বৈঠকে মধ্যস্থতা করবে নেপালের সেনাবাহিনী।
ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দখল নিয়েছে নেপালের সেনাবাহিনী। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, বিক্ষোভকারীরা ত্রিভুবন বিমানবন্দর দখলের চেষ্টা করছেন বলে জানা যায়। তার পরেই বিমানবন্দর চারপাশ থেকে ঘিরে ফেরে সেনাবাহিনী। বর্তমানে আংশিক স্থগিত রয়েছে পরিষেবা। ইন্ডিগো ও নেপাল এয়ারলাইন্স ইতিমধ্যেই দিল্লি- কাঠমান্ডু বিমান পরিষেবা স্থগিত রেখেছে। প্রতিদিন এয়ার ইন্ডিয়ার ছয়টি বিমান এই পথেই (দিল্লি-কাঠমান্ডু) পরিষেবা দেয়। তবে মঙ্গলবার ওই বিমান সংস্থা চারটি বিমান বাতিল করেছে।
পড়শি দেশের পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে ভারত সরকার। নেপালের পরিস্থিতি নিয়ে মঙ্গলবারই মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি জানান, পড়শি রাজ্যে শান্তি-শৃঙ্খলা স্থাপন জরুরি। সে দেশের বাসিন্দাদেরও শান্তি বজায় রাখতে আর্জি জানিয়েছেন তিনি।
ভারত-নেপাল সীমান্তেও কড়াকড়ি শুরু হয়েছে। সীমান্তের ক্রসিং পয়েন্ট বন্ধ করা হয়েছে। নেপালের সঙ্গে ভারতের প্রায় ১,৭৫১ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। ভারতের উত্তরাখণ্ড, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, সিকিম এবং পশ্চিমবঙ্গ-সহ পাঁচ রাজ্য নেপালের সীমান্তবর্তী। নেপালের বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে পাঁচ রাজ্যের সীমান্তেই তৎপরতা বেড়েছে।
প্রধানমন্ত্রী ওলির ইস্তফার পর বর্তমানে নেপালের দায়িত্বে সেনা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে একাধিক পদক্ষেপ করেছে তারা। নেপাল সরকারের প্রধান সচিবালয় ভবন নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে সেনাবাহিনী। দেশে লুটপাট চালালে, ভাঙচুর করলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে, এমনটাই জানিয়েছে নেপালের সেনাবাহিনী। দেশের নাগরিকদেরও সহযোগিতা চেয়েছে তারা। সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে নেপাল সরকারের প্রধান সচিবালয় ভবনও।
ছাত্র-যুব বিদ্রোহে অশান্ত নেপাল। সমাজমাধ্যমের উপর নেপাল সরকারের নিষেধাজ্ঞার পরই অশান্তির আগুন ছড়াতে শুরু করে ভারতের পড়শি দেশে। সোমবার থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভ অন্য চেহারা নেয় মঙ্গলবার। সমাজমাধ্যমের উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেও কোনও লাভ হয়নি। অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে নেপাল। দুর্নীতি, স্বজনপোষণ, আর্থিক বৈষম্যের মতো বিষয়গুলি সামনে চলে আসে। আন্দোলনকারীদের রোষের মুখে পড়ে নেপাল সরকার। নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির পদত্যাগও আগুন থামাতে পারেনি। বুধবার সকাল থেকে নতুন করে উত্তেজনা না ছড়ালেও থমথমে পরিস্থিতি নেপালে।