২০১৫ সাল থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে লন্ডনে হামলা কমানোর অভিযান।
শুরুটা হয়েছিল এ বছরের গোড়া থেকেই। তার পর থেকে প্রায় প্রতি সপ্তাহে তরুণদের উপর ছুরি নিয়ে একের পর এক হামলা ঘটেই চলেছে লন্ডনে। এই হামলার ঘটনাগুলি নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে ব্রিটিশ পুলিশ-প্রশাসন। কী ভাবে এই হামলা বন্ধ করা যায়, এখন সেই পথই খুঁজছে তারা।
সিটি হল থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, চলতি বছরেই এই ধরনের হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২৭ জন। নিহতদের প্রত্যেকেরই বয়স পঁচিশের নীচে। আবার গত বছর এপ্রিল মাস থেকে চলতি বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত পুলিশের কাছে ১২ হাজার ১০০টি ছুরি নিয়ে হামলার অভিযোগ জমা প়ড়েছে। ওই সব হামলায় জখম হয়েছেন মোট ৪৪০০ জন।
গত পাঁচ বছরের মধ্যে এই সংখ্যাটা সবচেয়ে বেশি।
যদিও ২০১৫ সাল থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে হামলা কমানোর অভিযান। কিন্তু তাতেও কোনও লাভ হয়নি বলেই এ নিয়ে ফের আলোচনা হবে। আগে সকলের মতামত নেবে সরকার। তার পর খতিয়ে দেখে স্কুল-কলেজ বা প্রকাশ্যে ছুরি ব্যবহারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে।
এক শিক্ষামূলক সংগঠনের প্রধান জানিয়েছেন, এই হামলায় যাঁরা জখম হচ্ছেন, হয় তাঁরা পুরোপুরি ভাবে প্রতিবন্ধী হয়ে যাচ্ছেন, না হলে তাঁদের দেহে ক্ষতচিহ্ন রয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো আবার মানসিক সমস্যার শিকার হচ্ছেন। অর্থাৎ এ ধরনের হামলার পরে কেউ সুস্থ হয়ে যাচ্ছেন বলে এটা নয় যে, তিনি স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাচ্ছেন। ফলে দিনের পর দিন এই ধরনের হামলাই ভাবিয়ে তুলছে।
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, এ ধরনের হামলার সঙ্গে কি সন্ত্রাসের কোনও যোগ রয়েছে? আর কেনই বাড়ছে এই হামলা? লন্ডন মেট্রোপলিটান পুলিশের এক প্রাক্তন কর্তা জানাচ্ছেন, এ ধরনের বেশির ভাগ ঘটনার সঙ্গে সংগঠিত অপরাধের কোনও যোগ নেই। ওই পুলিশকর্তার মতে, নিরাপত্তার স্বার্থে অনেকেই নিজেদের কাছে ছুরি রাখছেন। আর এই ধরনের ঘটনাতে তাঁরাই কোনও না কোনও ভাবে জড়িত থাকেন।
এই ধরনের হামলা কমানোর জন্য স্কুলে স্কুলে অভিযানও চালাচ্ছে পুলিশ। সেখানে গিয়ে পড়ুয়াদের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে। এমনকী যে সব স্কুলগুলিতে এই ধরনের ছুরি নিয়ে হামলা হচ্ছে, সেখানে মেটাল ডিটেক্টর লাগানোরও ব্যবস্থা করেছেন লন্ডনের মেয়র সাদিক খান। হামলা কমানোর প্রসঙ্গে মঙ্গলবার অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী অ্যাম্বার রুড আবার কিছু প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, বেআইনি ভাবে আগ্নেয়াস্ত্র নিজেদের কাছে রাখা চলবে না। বন্ধ করতে হবে বেআইনি ভাবে অস্ত্র বেচাকেনাও।