মঞ্চে উপস্থিত (বাঁ দিক থেকে) অমিতাভ বচ্চন, ডেভিড ক্যামেরন এবং অরুণ জেটলি। শনিবার। — নিজস্ব চিত্র।
পড়ুয়াদের কণ্ঠে ধ্বনিত হচ্ছে ‘রঘুপতি রাঘব রাজা রাম।’ মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর ‘দ্য ওয়ার্ল্ড অব টুমরো’ থেকে পাঠ করছেন অমিতাভ বচ্চন। রয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। এমন আবহেই গাঁধীমূর্তির উন্মোচন করলেন ভারতের অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি।
রোদ ঝলমলে দিন। মঞ্চে জেটলি, ক্যামেরন, অমিতাভ ছাড়াও গাঁধীর পৌত্র তথা পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গাঁধী। মঞ্চের প্রেক্ষাপট গেরুয়া, সাদা, সবুজ। ন’ফুটের ব্রোঞ্জ মূর্তিটি তৈরি করেছেন ভাস্কর ফিলিপ জ্যাকসন। তিনি জানিয়েছেন, ১৯৩১ সালে এক বার লন্ডনে এসেছিলেন গাঁধী। ১০ ডাউনিং স্ট্রিটের সিঁড়িতে সে সময় গাঁধীর যে ছবি তোলা হয়েছিল, সেই ছবিই এই মূর্তি তৈরির অনুপ্রেরণা।
গাঁধীর ন’ফুটের ব্রোঞ্জ মূর্তি যে চত্বরে রয়েছে, সেই একই চত্বরে রয়েছে নেলসন ম্যান্ডেলা ও আব্রাহাম লিঙ্কনের মূর্তি। রয়েছে উইনস্টন চার্চিলের মূর্তি, যিনি এক সময় গাঁধীকে ‘অর্ধনগ্ন ফকির’ বলেছিলেন। পার্লামেন্ট স্কোয়ারে তখন সার সার মাথা। জলদগম্ভীর বচ্চন-কণ্ঠ। ‘দ্য ওয়ার্ল্ড অব টুমরো’র একটি অংশ পাঠ করছেন ব্রিটেনেও অসম্ভব জনপ্রিয় অভিনেতাটি “ভবিষ্যৎ সম্পর্কে এত ভাবনা কোনও দিনও হয়নি।
সব সময়ই কি হিংসা, দারিদ্র্য, দুঃখই থাকবে? ধর্মের প্রতি বিশ্বাস অটুট হবে, নাকি পৃথিবীতে অধর্ম বিরাজ করবে?” ১২৫ বছরেরও বেশি আগে লন্ডনে প্রথম পা দিয়েছিলেন গাঁধী। সে প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন অরুণ জেটলি। ক্যামেরন বলেন, “পার্লামেন্ট স্কোয়ারে গাঁধীর মূর্তি স্থাপন করে আমাদের দেশে গাঁধীকে পাকাপাকি জায়গা দিলাম আমরা।” তবে গাঁধীর পৌত্রের কথায় কিছুটা রাজনীতির ছোঁয়া। গোপালকৃষ্ণ গাঁধী বললেন, “ব্রিটেনে যখন গাঁধী মূর্তির উন্মোচন হচ্ছে, তখন ভারতে কেউ কেউ তাঁর হত্যাকারীর মন্দির তৈরির কথা ভাবছেন।”