ছেলে নমল রাজাপক্ষ গত কালই জানিয়েছিলেন, মাহিন্দা রাজাপক্ষ আজ ইস্তফা দেবেন। রনিল বিক্রমসিংহের শিবির তবু ভরসা রাখতে পারছিলেন না। ভাবটা, না আঁচালে বিশ্বাস নেই। অবশেষ হাল ছাড়লেন রাজাপক্ষ। প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে আজ ইস্তফা দিলেন। স্বস্তি ইউএনপি শিবিরে। আগামিকাল সকালে ফের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন রনিল। পরের দিন ৩০ সদস্যের মন্ত্রিসভা।
কলম্বোর নিম্ন আদালত রাজপক্ষকে প্রধানমন্ত্রীর পদ আঁকড়ে না থাকার নির্দেশ দিয়েছিল আগেই। সেই রায়ের উপরে স্থগিতাদেশ চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন রাজাপক্ষ। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট স্থগিতাদেশ দিতে অস্বীকার করে গত কাল। এর পরে গদি আঁকড়ে থাকার কোনও পথ খুঁজে পাননি রাজাপক্ষ। আপাতত আগামী নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় ফেরার অপেক্ষায় রইলেন তিনি। এ দিন ইস্তফা দেওয়ার পরে জাতির উদ্দেশে ভাষণে খোলাখুলিই সে কথা জানিয়েছেন রাজাপক্ষ। জানিয়েছেন, আগামী সাধারণ নির্বাচনে জিতে আসার আগে প্রধানমন্ত্রী পদে থাকতে চান না। অহেতুক গদি আঁকড়ে থেকে প্রেসিডেন্ট মৈত্রীপালা সিরিসেনাকেও বিপাকে ফেলতে চান না।
পার্লামেন্টে যে রনিলের ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টি (ইউএনপি)-ই সংখ্যাগরিষ্ঠ, সে কথা স্বীকার করে নিলেও রাজাপক্ষর দাবি, এই গরিষ্ঠতা বেশি দিন থাকবে না। দেশের মানুষ সরকারের পরিবর্তন চাইছে। আপাতত তা মুলতুবি রইল মাত্র। এখনই নির্বাচন না হলেও আগামী দিনে মানুষের প্রত্যাশা পূরণ হবেই। কেউ আটকাতে পারবে না।
গত ২৬ অক্টোবর রনিলকে সরিয়ে প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা গদিতে বসিয়েছিলেন রাজাপক্ষকে। তিনি গরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে না পারায় পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে জানুয়ারিতে ভোটও ঘোষণা করে দেন প্রেসিডেন্ট। চরম রাজনৈতিক অচলাবস্থা তৈরি হয় দ্বীপরাষ্ট্রে। রাজাপক্ষর দাবি, ২৬ অক্টোবরের পর থেকে যা ঘটেছে তাতে দেশ উপকৃত হয়েছে। কী ভাবে? সেই ব্যাখ্যা মেলেনি রাজাপক্ষর ভাষণে।
সিরিসেনার সিদ্ধান্তগুলির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দলগুলি যে মামলা করেছে, সুপ্রিম কোর্টে তার শুনানি হবে সোমবার। তার আগেই দেশের সব রাজনৈতিক দলকে নিজেদের বক্তব্য লিখিত ভাবে আদালতে জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
রনিলের দল ইউএনপি জানিয়েছে, দীর্ঘ আলোচনার পরে প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা বিক্রমসিংহেকে প্রধানমন্ত্রী পদে ফেরাতে মত দিয়েছেন। ইউএনপি-র সাধারণ সম্পাদক এবি কারিয়াওয়াসাম জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্টের সচিবালয় জানিয়েছে, কাল সকালেই বিক্রমসিংহে প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নেবেন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবর, সোমবার শপথ নেবে ৩০ সদস্যের মন্ত্রিসভা।