MALAYSIA

Malaysia Flood: মালয়েশিয়ার বন্যায় ঘরছাড়া বাইশ হাজার

বন্যা ত্রাণে ইতিমধ্যেই ২.৩৭ কোটি ডলার প্যাকেজের ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী ইয়াকুব।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

কুয়ালা লামপুর শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০২১ ০৬:০৬
Share:

বন্যায় ডুবেছে মালয়েশিয়ার সেলাঙ্গর প্রদেশের বিস্তীর্ণ এলাকা। রবিবার। ছবি রয়টার্স।

দক্ষিণ ভারতের ধাঁচে বছরের শেষে মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে প্রতি বছরই বৃষ্টি হয় মালয়েশিয়ায়। কিন্তু এ বার গত ৪৮ ঘণ্টায় রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে মালয়েশিয়ার ছ’টি প্রদেশে। যার ফলে গত কয়েক বছরের বৃষ্টিপাতের রেকর্ড তছনছ হয়ে গিয়েছে। দেশ জুড়ে ঘরছাড়া অন্তত ২২ হাজার বাসিন্দা। তবে তাঁদের সকলকেই নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।

Advertisement

গত কাল গভীর রাতে সাংবাদিক বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী ইসমাইল সাবরি ইয়াকুব। সাংবাদিকদের তিনি জানান, শুক্রবার থেকে যে মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়েছে, তা দু’দিনেই এক মাসের বৃষ্টির রেকর্ডকে ছাপিয়ে গিয়েছে। যার ফলে বেশির ভাগ নদীই উপচে পড়ছে। গ্রামীণ এলাকা তো বটেই, বেশ কিছু শহরও গত দু’দিন ধরে জলের তলায়। হাইওয়েগুলিতে কোমর সমান জল। অনেক জায়গায় আটকে পড়েছে গাড়ি, বাস এমনকি ট্রাকও।

পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়াবহ পাহাং প্রদেশের। শুধুমাত্র সেখানেই ১০ হাজার মানুষকে নিজেদের ঘরবাড়ি ছাড়তে হয়েছে। রাজধানী কুয়ালা লামপুর সংলগ্ন সেলাঙ্গরের পরিস্থিতিও শোচনীয়। সেখানে প্রায় ৫ হাজার বাসিন্দাকে সরিয়ে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জানাচ্ছেন, সেলাঙ্গরের এমন পরিস্থিতি দেখে তিনি বিস্মিত। তাঁর কথায়, ‘‘সেলাঙ্গরে কখনও বন্যা হতে দেখিনি। সেখানেও পরিস্থিতি প্রায় হাতের বাইরে চলে গিয়েছে। সর্বত্র জল জমে রয়েছে।’’ আজ নতুন করে পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে পেরাক প্রদেশের।

Advertisement

বন্যা ত্রাণে ইতিমধ্যেই ২.৩৭ কোটি ডলার প্যাকেজের ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী ইয়াকুব। তিনি জানিয়েছেন, বন্যা দুর্গতদের সাহায্যার্থে কাজ করছেন প্রায় ৬৬ হাজার পুলিশ ও দমকলকর্মী। তাঁর আরও বক্তব্য, আপাতত রাস্তা, বাড়ি বা গাড়ির মধ্যে আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়াই মূল লক্ষ্য প্রশাসনের। তবে
উদ্ধারকারীরা জানাচ্ছেন, ক্ষতিগ্রস্ত ছ’টি প্রদেশের ডুবে যাওয়া বাড়িগুলি থেকে প্রায় সবাইকেই উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।

বৃষ্টির জন্য জল শোধনের কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছে সেলাঙ্গরের তিনটি কেন্দ্রে। ফলে আগামী কয়েক দিন ওই প্রদেশের কোনও বাড়িতেই জল পৌঁছবে না বলে জানানো হয়েছে। রাজধানী কুয়ালা লামপুর ও তার সংলগ্ন এলাকার ডজনখানেক বাস রুট বন্ধ। ট্রেন পরিষেবাও বন্ধ থাকায় বন্দর শহর ক্লাংয়ের সঙ্গে সব যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে।

খাবার ডেলিভারির কাজ করেন সেলাঙ্গরের শাহ আলম শহরের বাসিন্দা রোকিদা ইউসুফ। কাজের সূত্রে গত কাল দুই কন্যা ও নাতি নাতনিকে নিয়ে সেলাঙ্গরের শহরতলিতে আটকে পড়েছিলেন রোকিদা। প্রায় ৩০ ঘণ্টা পরে তাঁকে উদ্ধার করেন দমকলকর্মীরা। বছর ষাটেকের রোকিদা জানিয়েছেন, গত তিরিশ বছরে সেলাঙ্গরে এমন ভয়াবহ বন্যা দেখেননি তিনি।

সাত বছর আগে, ২০১৪ সালের বন্যায় মালয়েশিয়ায় ঘরছাড়া হয়েছিলেন ১ লক্ষ ১৮ হাজার মানুষ। গত কয়েক দশকের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা ছিল সেটি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন