অফিসে মারভিয়া। নিজস্ব চিত্র
পাকিস্তানের রূপান্তরকামী আন্দোলনের মুখ এখন তিনি। সে দেশের প্রথম রূপান্তরকামী সংবাদপাঠক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করার পরেই তাঁকে কুর্নিশ জানিয়েছিল সারা বিশ্ব। সেই মারভিয়া নিজের দেশে রূপান্তরকামীদের অধিকার রক্ষার বিল পাশ হওয়ায় উচ্ছ্বসিত। বৃহস্পতিবার হোয়াটসঅ্যাপে মারভিয়া মালিকের প্রতিক্রিয়া, ‘‘দারুণ দিন, ঐতিহাসিক মুহূর্ত।’’
মাস দেড়েক আগে লাহৌরের এক সংবাদ চ্যানেলে কাজে যোগ দেন মারভিয়া। তাঁর কথায়, ‘‘চাকরি পেয়ে চোখে জল এসে গিয়েছিল। যেন নতুন জন্ম হল। আমাদের দেশে রূপান্তরকামীদের যে অবস্থার মুখোমুখি হতে হয়। তা সবারই জানা। তাই আবেগ ধরে রাখতে পারিনি।’’ নিজের দেশে রূপান্তরকামীদের অধিকারের আন্দোলনকে আরও জোরদার করাই বরাবর লক্ষ্য ছিল মারভিয়ার। সেই লড়াইয়ে আরও সহায়ক হতে পারে নতুন আইন। তাই মারভিয়া বলছেন, ‘‘এই প্রাপ্তি সত্যিই উৎসব করার মতো।’’
মারভিয়ার জীবনে এই উৎসবের দিন অবশ্য এসেছে অনেক ঝড়ঝাপটা সামলে। আর পাঁচজন রূপান্তরকামীর মতোই তাঁর জীবনেও ছিল উপেক্ষা। নিজের পরিজনেরাও তাঁকে আপন করতে পারেননি। তবে বন্ধুরা পাশে ছিলেন। সাংবাদিকতা নিয়ে পড়াশোনা শেষ করে মডেলিংও করেছেন মারভিয়া। তবে গণমাধ্যমে কাজ করা লক্ষ্য ছিল বরাবরই। এই চাকরির খবর পেয়েই তিনি আবেদন করেন। এখন গর্বিত তাঁর পরিজনেরাও। মারভিয়ার কথায়, ‘‘এ আমার বিশাল প্রাপ্তি।’’
যে চ্যানেলে তিনি কাজ করেন, সেই ‘কোহিনুর নিউজে’র বার্তা নির্দেশক বিলাল আশরফ জানাচ্ছেন, মারভিয়াকে কাজে নেওয়ার সিদ্ধান্তে যে বিশ্ব জুড়ে আলোড়ন হবে, তা তাঁরা একেবারেই ভাবেননি। বিলালের কথায়, ‘‘তথাকথিত মূলস্রোতের বাইরে থাকা মানুষেরা যে কারও থেকে কম যান না, মারভিয়ার কৃতিত্বই তাঁর প্রমাণ। আর নতুন আইন মারভিয়ার মতো অনেককে প্রাপ্য অধিকার দিতে সাহায্য করবে। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে সেই অধিকারকে অবজ্ঞা করা হয়েছে।’’ এই অবজ্ঞার বিরুদ্ধেই আরও লড়তে চান মারভিয়া। তিনি জানিয়েছেন, রূপান্তরকামীদের অধিকারের আন্দোলনকে আরও জোরদার করাই তাঁর লক্ষ্য। বলেন, ‘‘বিশ্বের যে কোনও জায়গার প্রান্তিক মানুষই যদি আমার লড়াইয়ে অনুপ্রেরণা পান, তা হলেই তা সার্থক।’’