নেতানিয়াহুর শুভেচ্ছা, অনাড়ম্বর বেথলেহেম

বিতর্কের সঙ্গে সঙ্গে জেরুসালেম একই সঙ্গে তিন ধর্মাবলম্বী মানুষের কাছে খুবই পবিত্র স্থান। মুসলিম, খ্রিস্টান আর ইহুদিরা জেরুসালেমের মাটিকে তীর্থ ক্ষেত্র বলে মনে করেন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

জেরুসালেম শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:৫১
Share:

ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। ছবি: এপি।

মাত্র কয়েক দিন আগে সিদ্ধান্তটি নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। বিতর্কিত ভূখণ্ড জেরুসালেমকে ইজরায়েলের রাজধানী ঘোষণা করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। খুব শীঘ্রই তেল আভিভ থেকে মার্কিন দূতাবাস জেরুসালেমে সরিয়ে আনার কথাও জানিয়ে রেখেছেন ট্রাম্প। আর তাঁর এই ঘোষণার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দেশ প্যালেস্তাইন আর ইজরায়েলের মধ্যে অশান্তির শেষ নেই। তবে বড়দিনের ঠিক আগেই খোশমেজাজে পাওয়া গেল ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে।

Advertisement

এক ভিডিও বার্তায় ইজরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বড়দিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন দেশবাসীকে। সেই সঙ্গেই বিশ্বের প্রতিটি খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী মানুষকে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়ে রেখেছেন, তাঁর দেশে বেড়াতে এলে তিনি নিজে ট্যুর গাইড হয়ে খ্রিস্টানদের পবিত্রস্থানগুলি ঘুরিয়ে দেখাবেন।

বিতর্কের সঙ্গে সঙ্গে জেরুসালেম একই সঙ্গে তিন ধর্মাবলম্বী মানুষের কাছে খুবই পবিত্র স্থান। মুসলিম, খ্রিস্টান আর ইহুদিরা জেরুসালেমের মাটিকে তীর্থ ক্ষেত্র বলে মনে করেন। বড়দিন উপলক্ষে বিশ্বের নানা প্রান্তে থাকা খ্রিস্টানদের কাছে তাই কাছে টানার বার্তা দিয়েছেন নেতানিয়াহু। ভিডিওটিতে তাঁকে বলতে দেখা গিয়েছে, ‘‘ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী হয়ে আমি গর্বিত। আমরা প্রথমেই দেশের নাগরিকদের এবং তার পরে গোটা বিশ্বের খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী মানুষকে বড়দিনের শুভেচ্ছা জানাই। ইজরায়েল এমন এক দেশ যেখানে খ্রিস্টধর্ম শুধু বেঁচে থাকেনি, বরং দিন দিন সমৃদ্ধ হয়েছে।’’ একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, প্রত্যেকের নিজ ধর্মের প্রতি আনুগত্য দেখানোর অধিকার রয়েছে। এর পরেই তিনি বিশ্বের সব খ্রিস্টানদের আহ্বান জানান, ইজরায়েলে আশার জন্য। প্রত্যেকের নিজস্ব গাইড হয়ে তিনি পবিত্রস্থানগুলি ঘুরিয়ে দেখানোর প্রতিশ্রুতিও দেন।

Advertisement

এক দিকে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী যখন বড়দিনের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন, অন্য দিকে তখন প্যালেস্তাইনে খ্রিস্টানদের আর এক পবিত্রস্থান বেথলেহেমে বড়দিন কেটেছে একেবারেই অনাড়ম্বর ভাবে। খ্রিস্টানরা এই শহরকেই যিশু খ্রিস্টের জন্মস্থান বলে মনে করেন। অন্যান্য সময় মাঝরাতের প্রার্থনার সময় গির্জায় তিল ধারণের জায়গা থাকে না। কিন্তু এ বার বেথলেহেমের সেই চেনা ছবিটাই খুঁজে পাওয়া যায়নি। একে ইজরায়েলের সঙ্গে গত কয়েক দিন ধরে ব্যাপক সংঘর্ষ চলছে তাদের। ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত মানে না তারা। সেই সঙ্গেই রয়েছে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া। উৎসবের দিনে সংঘর্ষ এড়াতে নিরাপত্তা বাহিনীর কড়া টহলদারিও ছিল চোখে পড়ার মতো। বড়দিন আজ বেথলেহেমের বেশির ভাগ মানুষ ঘরেই কাটিয়েছেন।

জনপ্রিয় ম্যানগের স্কোয়ারে দোকান রয়েছে মাইকেল কুসিয়েহ-এর। ট্রাম্পের নাম করে তিনি তো বলেই ফেললেন, ‘‘উনি তো খালি সমস্যা তৈরি করেন। কোনো সমাধান বার করেন না।’’

বড়দিনের কেনাকাটার বাজারও ছিল মন্দা। শহরের মেয়রের মুখেও একই কথা। রোমান ক্যাথলিক মেয়র অ্যানটন সলমন বলেই দিলেন, মধ্য এশিয়ার শান্তি প্রক্রিয়ায় আর আমেরিকার হস্তক্ষেপ চান না তাঁরা। তাঁর কথায়, ‘‘ট্রাম্পের ঘোষণা মেনে নেওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই। বেথলেহেমের সঙ্গে গোটা প্যালেস্তাইন তাঁর এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ছিল, এখনও আছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন