ক্ষেপণাস্ত্রের হুঙ্কার আগেই শুনিয়েছিল উত্তর কোরিয়া। তার পর হাইড্রোজেন বোমার হুঙ্কার। এ বার উত্তর কোরিয়া গর্জন আরও বাড়াল। রাষ্ট্রপ্রধান কিম জং উন জানালেন, ক্ষেপণাস্ত্রের মাথায় লাগানোর উপযুক্ত আকারের পরমাণু অস্ত্র তৈরি। এখন যে কোনও মুহূর্তে বহু দূরের ভূখণ্ডেও পরমাণু হামলা চালাতে প্রস্তুত উত্তর কোরিয়া।
পরমাণু বোমা এবং ক্ষেপণাস্ত্র হাতে থাকলেই ক্ষেপণাস্ত্রের সাহায্যে পরমাণু হামলা চালানো যায় না। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের হিরোশিমা এবং নাগাসাকি শহরে পরমাণু হামলা আমেরিকা ক্ষেপণাস্ত্রের সাহায্যে চালায়নি। যুদ্ধবিমান থেকে পরমাণু বোমা ফেলা হয়েছিল জাপানে। কারণ সব পরমাণু বোমাকে ক্ষেপণাস্ত্রের মাথায় লাগানো যায় না। ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে পরমাণু হামলা চালাতে হলে, পরমাণু অস্ত্রকে ক্ষেপণাস্ত্রে লাগানোর উপযুক্ত আকারে গড়ে তুলতে হয়। পরমাণু অস্ত্রের ওজনও ক্ষেপণাস্ত্রের বহন ক্ষমতার কথা মাথায় রেখেই স্থির করতে হয়। আকার এবং ওজনের কথা মাথায় রাখতে গিয়ে পরমাণু বোমার শক্তি কমিয়ে দেওয়াও যায় না। তাই ক্ষেপণাস্ত্রে বহনযোগ্য পরমাণু অস্ত্র তৈরি করার জন্য খুব উন্নত প্রযুক্তির প্রয়োজন হয়।
আরও পড়ুন:
ক্ষমতা জাহির করতে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়ল ইরান
উত্তর কোরিয়া আগেও বেশ কয়েক বার দাবি করেছে, দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে তারা পরমাণু হামলা চালাতে প্রস্তুত। কিন্তু ক্ষেপণাস্ত্রে ব্যবহার্য পরমাণু অস্ত্র বা মিনিয়েচারাইজড নিউক্লিয়ার ওয়ারহেড তাদের হাতে রয়েছে কি না, সে বিষয়ে স্পষ্ট করে আগে কিছু জানায়নি পিয়ংইয়ং। এই প্রথম উত্তর কোরীয় সংবাদমাধ্যম খোলাখুলি দাবি করেছে, ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে নিক্ষেপের উপযুক্ত নিউক্লিয়ার ওয়ারহেড তারা তৈরি করে ফেলেছে।
উত্তর কোরিয়ার সরকারি সংবাদ সংস্থায় কিম জং উনকে উদ্ধৃত করে জানানো হয়েছে, উত্তর কোরিয়া এ বার সত্যিকারের পরমাণু শক্তিধর দেশ হয়ে উঠেছে। শাসক দল ওয়ার্কার্স পার্টির কাগজ রদং সিনমুন প্রথম পাতায় কিম জং উনের বিশাল ছবি প্রকাশ করেছে। একটি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে সামরিক অফিসারদের সঙ্গে নিয়ে আকাশে কিছু দেখছেন কিম— এমনই একটি ছবি প্রকাশ্যে এনেছে রদং সিনমুন। বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে, পরমাণু হামলা চালানোর উপযুক্ত ক্ষেপণাস্ত্র সফলভাবে আকাশে উড়েছে। কিম সেই উৎক্ষেপনই দেখছেন।