Ayodhya

নেপালকে কাছে টানতে সিয়ারাম কূটনীতি দিল্লির

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

জনকপুর শেষ আপডেট: ১২ মে ২০১৮ ০৪:০৩
Share:

প্রার্থনা: জনকপুরের মন্দিরে ওলির সঙ্গে মোদী। শুক্রবার। ছবি: এএফপি

নেপালের মন রাখতে মরিয়া নরেন্দ্র মোদী সে দেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে ঘোষণা করলেন— ভারতের ‘প্রতিবেশী প্রথম’ নীতিতে সবার আগে এই দেশের স্থান। কূটনীতির অঙ্গনে টেনে আনলেন রাম-সীতাকেও।

Advertisement

কথিত, নেপালের জনকপুরেই জন্ম সীতার। তরাই অঞ্চলের এই ছোট্ট শহরটিকে সাজিয়ে গুছিয়ে তোলার জন্য ১০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি ওলিকে পাশে নিয়ে উত্তরপ্রদেশের রামের জন্মস্থান হিসেবে কথিত অযোধ্যা থেকে জনকপুর পর্যন্ত একটি আন্তঃরাষ্ট্রীয় বাস যোগাযোগের সূচনাও করেন মোদী। বলেন— নেপালের কন্যা সীতাকে বাদ দিয়ে ভারতের রাম যেমন অসম্পূর্ণ, তেমনই নেপালের ইতিহাসকে বাদ দিয়ে ভারতের ইতিহাসও অসম্পূর্ণ।

নেপালে রাজতন্ত্রের পতনের পর থেকেই ভারতের সঙ্গে সম্পর্কে বড়সড় টানাপড়েন শুরু হয়েছে। কয়েক মাস আগে প্রথম সাধারণ নির্বাচনে ভারত-বন্ধু হিসেবে পরিচিত নেপালি কংগ্রেসের পরাজয়ের পরে কে পি ওলির নেতৃত্বে যে বামেরা ক্ষমতায় এসেছেন, তাদের সঙ্গে চিনের যোগাযোগ বেশি। নেপালে প্রভাব বাড়াতে পরিকাঠামো ক্ষেত্রে বিপুল বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বেজিং। তার পরেই নেপাল নিয়ে তৎপর হতে হয়েছে দিল্লিকে। ২০১৪-য় ক্ষমতায় আসার পরে এটা মোদীর তৃতীয় নেপাল সফর। আগের বার তিনি জনকপুরে আসতে চাইলেও হয়ে ওঠেনি। এ বার সেটা হল। এই সফরে তাঁর মুক্তিনাথেও যাওয়ার কথা।

Advertisement

এ দিন জনকপুরে নেপালি ও মৈথিলি ভাষায় বক্তৃতা করেন মোদী। শুরুতেই তিন বার বলেন, ‘জয় সিয়ারাম!’ জানান, ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নয়, এ বারে তিনি নেপালে এসেছেন তীর্থযাত্রী হিসেবে। তবে দু’দেশের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করে তুলতে ব্যবসা বাণিজ্য, প্রযুক্তি ও যোগাযোগ বাড়ানোয় জোর দেন তিনি। বলেন, সঙ্কটে বরাবর পাশাপাশি থেকেছে ভারত ও নেপাল। দু’দেশের মধ্যে সড়ক, রেল, আই-ওয়ে (ইন্টারনেট), বিদ্যুৎ সংযোগ, এমনকি জল ও আকাশ পথে যোগাযোগের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর সরকারের। বিহারের রক্সৌল থেকে কাঠমান্ডু পর্যন্ত রেললাইন সম্প্রসারণ বাস্তবায়িত হলে যাত্রী ও পণ্য পরিবহণের নতুন দিগন্ত খুলে যাবে। দু’দেশের মধ্যে হিন্দু, বৌদ্ধ ও জৈন তীর্থস্থানগুলিকে জুড়ে সার্কিট গড়ে তোলা গেলে হাজার হাজার যুবকের যেমন জীবিকার সংস্থান হতে পারে, আধ্যাত্মিক সুতোয় বাঁধা পড়তে পারে ভারত ও নেপালের মানুষ।

নেপালের প্রধানমন্ত্রী ওলি দিল্লি সফরে এসে তাঁকে যে মৈথিলি কুর্তাটি উপহার দিয়েছিলেন, এ দিন সে’টি পরেই অনুষ্ঠানে এসেছিলেন মোদী। প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী লালবাবু রাউত ১২১ কিলোগ্রামের একটি মালা পরিয়ে তাঁকে অভ্যর্থনা জানান। মদেশিয়-প্রধান তরাইয়ে মোদীর সফর নিয়ে উন্মাদনাও ছিল চোখে পড়ার মতো। কিন্তু তরাইয়ের এই উত্তাপ পাহাড়ি নেপালের অধিকাংশ বাসিন্দাদের মধ্যে সঞ্চারিত হলে তবেই সফল হতে পারে মোদীর সফর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন