গত বছর ইজরায়েলে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্যালেস্তাইনের নামোচ্চারণও করেননি। এমনকী যৌথ বিবৃতিতেও ইজরায়েল-প্যালেস্তাইন সংঘর্ষের কথা উল্লেখ না করে শুধু ‘আঞ্চলিক শান্তি’-র প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।
ইজরায়েলের মন রাখতে গিয়ে প্যালেস্তাইনের সঙ্গে সম্পর্কের শৈত্য এ বার ঝেড়ে ফেলতে চলেছে মোদী সরকার। ১০ ফেব্রুয়ারি মোদী সেখানে পা রাখতে চলেছেন। মোদীই ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী, যিনি প্যালেস্তাইন পৌঁছবেন। প্রধানমন্ত্রীর ত্রিদেশীয় (প্যালেস্তাইন, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, ওমান) সফরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল রামাল্লায় ভারত-প্যালেস্তাইন দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক বৈঠক। অনেকেই মনে করছেন, এক দিকে আন্তর্জাতিক অন্য দিকে ঘরোয়া রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা— দু’টি কারণেই ইজরায়েলের সঙ্গে গভীর সখ্যতার পাশাপাশি প্যালেস্তাইনকেও গুরুত্ব দিতে হচ্ছে মোদীকে।
বিদেশ মন্ত্রক আজ জানিয়েছে, মোদীর ‘মাইল ফলক সফর’ ভারতের ‘ঘরোয়া’ ও ‘আন্তর্জাতিক’ কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত। যে চারটি দিককে এর সঙ্গে জোড়া হচ্ছে, তা হল, ১) এটি প্যালেস্তাইনের রাজনৈতিক আকাঙ্খার প্রতি ভারতের দীর্ঘদিনের প্রতিশ্রুতির প্রতীক। ২) সেখানকার পরিকাঠামো, দক্ষতা বাড়াতে বেশ কিছু চুক্তিপত্রে সই। ৩) সন্ত্রাসবাদ দমন, কৃষি, তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। ৪) আন্তর্জাতিক স্তরে প্যালেস্তাইনের দাবিকে সমর্থনের বার্তা। কূটনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, চতুর্থ কারণটি নয়াদিল্লির কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইজরায়েলের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক ধাপে ধাপে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন মোদী। কিন্তু সাউথ ব্লক বুঝছে, এর ফলে পশ্চিম এশিয়ার মুসলিম দেশগুলির কাছে অন্য রকম বার্তা পৌঁছচ্ছে। সে কারণেই ভারসাম্য বজায় রাখাটা জরুরি।
রাজনৈতিক সূত্রের মতে, দেশের সংখ্যালঘুদের আবেগকেও অগ্রাহ্য করতে চাইছে না সরকার। সে কারণেই ডিসেম্বরে রাষ্ট্রপুঞ্জে ডোনাল্ড ট্রাম্পের আনা প্যালেস্তাইন-বিরোধী প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে ভারত। মোদীর সফরে সেই ‘ভোটদান’-কে বড় করে তুলে ধরা হবে বলে ইঙ্গিত মিলেছে।