সাবেক গভর্নরের নাতি নিহত জঙ্গি

ঢাকার কল্যাণপুরের জঙ্গি ডেরায় নিহতদের মধ্যে তিন জন বেসরকারি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিল। এর মধ্যে আফিকুজ্জামান নামে এক জঙ্গি পূর্ব পাকিস্তানের সাবেক গভর্নর মোনেম খানের নাতি। তার বাবার নাম সাইফুজ্জামান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঢাকা শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৬ ০৪:০২
Share:

ঢাকার কল্যাণপুরের জঙ্গি ডেরায় নিহতদের মধ্যে তিন জন বেসরকারি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিল। এর মধ্যে আফিকুজ্জামান নামে এক জঙ্গি পূর্ব পাকিস্তানের সাবেক গভর্নর মোনেম খানের নাতি। তার বাবার নাম সাইফুজ্জামান। এ বছরের গোড়ার দিকে গুলশনের বাড়ি থেকে নিখোঁজ হওয়ার পরে পরিবার পুলিশে ডায়েরি করেছিলেন।

Advertisement

তৎকালীন পাক প্রেসিডেন্ট আয়ুব খানের অনুগত বলে পরিচিত আব্দুল মোনেম খান ১৯৬২-র ২৮ অক্টোবর থেকে ১৯৬৯-এর ২৩ মার্চ পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর ছিলেন। স্বাধীনতাকামী মানুষের উপর নির্যাতনে তাঁর ন্যক্কারজনক ভূমিকা ছিল। ১৯৭১-এর ১৩ অক্টোবর মুক্তিবাহিনী ঢাকায় তাঁর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মোনেম খানকে গুলি করে হত্যা করে। তাঁর নাতি আফিকুজ্জামান জঙ্গি দলে নাম লেখানোর পিছনে সেই ঘটনার প্রতিশোধ নেওয়াটা কারণ হতে পারে বলে মনে করছে পুলিশ।

কালই সাত জঙ্গির নাম প্রকাশ করেছিল পুলিশ। বৃহস্পতিবার অষ্টম জঙ্গির পরিচয় প্রকাশ করে পুলিশের জঙ্গি-প্রতিরোধ শাখার প্রধান মনিরুল ইসলাম জানান, রায়হান কবির ওরফে তারেক নামে এই তরুণ জেএমবি (জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ)-এর ঢাকা শাখার সমন্বয়কের দায়িত্বে ছিল। দাগী এই জঙ্গি বিভিন্ন নামে পরিচিত ছিল। গুলশনের হোলি আর্টিজান বেকারির হামলাকারীদের সে গাইবান্ধার একটি চর অঞ্চলে নিয়ে গিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র চালনা ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে মানুষ খুনের প্রশিক্ষণ দিয়েছিল। সেখানে মোট সাত জঙ্গিকে প্রশিক্ষণ দেয় রায়হান ও তার এক সঙ্গী। রংপুরে জাপানি নাগরিক কুনিও হোশি খুনের প্রধান আসামি মাসুদ রানার সহযোগী ছিল এই তারেক। এ ছাড়াও দু’টি খুনের আসামি হিসেবে তারেকের নাম রয়েছে পুলিশের খাতায়।

Advertisement

মনিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, তারেকের নাম যে রায়হান কবির, পুলিশ তা জানা ছিল না। কল্যাণপুরের ডেরায় পাওয়া তার জাতীয় পরিচয় পত্র থেকে তার এই নাম জানা গিয়েছে। রংপুরের পীরগাছা এলাকায় তার বাড়ি। একই পাড়ায় মাসুদ রানা-সহ জেএমবি-র তিন কট্টর জঙ্গির বাড়ি। তাদের সকলেই এখন পুলিশের হাতে ধরা পড়ে জেলে রয়েছে। রায়হানের মা জানিয়েছেন, গত বছর ইদের পর দিন সে রাগ করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। তার পরে আর বাড়ির সঙ্গে তার কোনও যোগাযোগ ছিল না।

পুলিশ জানিয়েছে, এ পর্যন্ত পরিচয় পাওয়া জঙ্গিদের তিন জন ঢাকার বাসিন্দা। তারা সকলেই বিতর্কিত বেসরকারি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিল। ঢাকার বাইরের যে চার জঙ্গির পরিচয় পাওয়া গিয়েছে, তারা বিভিন্ন মাদ্রাসার ছাত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন