—প্রতীকী ছবি।
ধর্মীয় পোশাক পরে আমেরিকার শিকাগো শহরের একটি সাবওয়ে স্টেশনে দ্রুত গতিতে হেঁটে যাচ্ছিলেন তিনি। মুখ ঢাকা। পিঠে ছিল ভারী ব্যাগ। তা দেখেই নাকি জঙ্গি হিসাবে সন্দেহ হয় কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীদের। দৌড়ে গিয়ে এক ধাক্কায় মেঝেয় ফেলে একটানে তাঁর হিজাব খুলে ফেলে পুলিশ। তন্ন তন্ন করে তল্লাশি চালানো হয়েছিল তাঁর ব্যাগে। ঠিক এক বছর আগে। কিন্তু সেই অপমান ভুলতে পারেননি ওই মহিলা। ন্যায়-বিচার চেয়ে এবার সেই পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করলেন তিনি।
শুক্রবার তাঁর উপরে বল প্রয়োগ, মিথ্যা অভিযোগ এবং ধর্মীয় বিশ্বাস প্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করার অভিযোগে শিকাগো পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করলেন ওই মুসলিম ধর্মাবলম্বী মহিলা ইতেমিদ আল মাতার।
আরও পড়ুন: আকাশ থেকে পাতাল, জঙ্গি হানা ঠেকাতে ভয়ঙ্কর অস্ত্র ব্রিটেনের
সাংবাদিকদের ওই মহিলা জানান, গত বছরের ৪ জুলাই তিনি শিকাগো শহরের এক সাবওয়ে স্টেশনে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। মাথায় হিজাব পরা ছিল। কাঁধে একটি ব্যাগ ছিল। সাবওয়ে স্টেশন দিয়েই যখন হেঁটে যাচ্ছিলেন তখন হঠাত্ই তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন কয়েকজন পুলিশকর্মী। মেঝেয় ফেলে তাঁর মাথার হিজাব টেনে খুলে দেওয়া হয়। ব্যাগ খুলে তল্লাশি চালানো হয়। আচমকাই এমন ব্যবহারে হতভম্ব হয়ে যান তিনি। কেন তাঁর সঙ্গে এই দুর্ব্যবহার তাও তাঁকে জানানোর প্রয়োজন মনে করেনি পুলিশ। তারপর কোনও কারণ ছাড়াই মিথ্যা অভিযোগ এনে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযোগ আনা হয়, তিনি নাকি জঙ্গি। আত্মঘাতী হামলা চালানোর উদ্দেশেই এখানে ঘোরাফেরা করছিলেন। সাবওয়েতে লাগানো সিসিটিভি ফুটেজেও এই একই চিত্র ধরা পড়েছে।
পরে অবশ্য কোনও প্রমাণ না পেয়ে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই অপমান ভুলতে পারেননি ইতেমিদ। শুধুমাত্র তিনি মুসলিম ধর্মাবলম্বীর বলেই কি তাঁকে অকারণে জঙ্গি বলে ‘ভুল’ করা হল? শুধুমাত্র তাঁর মাথায় হিজাব পরা ছিল বলেই কি তাঁকে এরকম হেনস্থার শিকার হতে হল? প্রশ্নটা বারবার ঘুরপাক খাচ্ছিল তাঁর মনে। এবার তাই বিচার চেয়ে সরাসরি শিকাগো পুলিশের বিরুদ্ধেই ‘যুদ্ধ’ ঘোষণা করলেন ইতেমিদ।