Hussain Muhammad Ershad

এরশাদের দলে নেতৃত্বের নাটক

তিন বছর আগে সাবেক সেনাশাসক জেনারেল এরশাদের মৃত্যুর পরে দলের চেয়ারম্যান পদ নিয়ে তাঁর স্ত্রী বেগম রওশন এরশাদ এবং ভাই জি এম কাদেরের অনুগামীদের মধ্যে বিতণ্ডা চরমে ওঠে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০২৩ ০৭:১০
Share:

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। —ফাইল চিত্র।

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের দল জাতীয় পার্টির প্রধান কে, তা নিয়ে মঙ্গলবার বাংলাদেশে দিনভর রহস্য ও নাটক চলল। সন্ধ্যা ঘনাবার পরে নাটকের এক রকম যবনিকা পতন হলেও ঘনীভূত রহস্যের কুয়াশা কাটল না।

Advertisement

তিন বছর আগে সাবেক সেনাশাসক জেনারেল এরশাদের মৃত্যুর পরে দলের চেয়ারম্যান পদ নিয়ে তাঁর স্ত্রী বেগম রওশন এরশাদ এবং ভাই জি এম কাদেরের অনুগামীদের মধ্যে বিতণ্ডা চরমে ওঠে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যস্থতায় ঠিক হয়, বিরোধী নেত্রী হিসাবে রওশন জাতীয় পার্টির সংসদীয় কমিটির প্রধান হবেন, আর কাদের চেয়ারম্যান হিসাবে সংগঠন দেখবেন। বিজেপির আমন্ত্রণে জি এম কাদের রবিবার দিল্লি পৌঁছেছেন। সেখানে সোমবার বিজেপি নেতৃত্ব এবং ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের কর্তাদের সঙ্গে তাঁর বৈঠক হয়েছে। মঙ্গলবার কাদের দেখা করেছেন প্রাক্তন বিদেশসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলার সঙ্গে। এ দিকে মঙ্গলবার একটি প্রেস বিবৃতি সংবাদ মাধ্যমগুলির দফতরে প্রচার করা হয়, যেখানে বেগম রওশন এরশাদ ঘোষণা করছেন, কাদেরকে অব্যাহতি দিয়ে তিনি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। দলের চার কো-চেয়ারম্যান ও সিনিয়র নেতাদের সমর্থন ও উপস্থিতিতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এর পরেই জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু জানান, এমন কিছু ঘটেনি। দলের কো-চেয়ারম্যানেরা তাঁকে জানিয়েছেন, তাঁরা এমন কোনও প্রস্তাবের কথা জানেনও না। জাতীয় পার্টির অন্যতম কো-চেয়ারম্যান, ঢাকার সাংসদ সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা আনন্দবাজারকে বলেন, “আমি বা অন্য কোনও নেতা এমন প্রস্তাবের কথাই শুনিনি। জি এম কাদেরের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশ নেবে। দলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা বেগম রওশন এরশাদের আশীর্বাদ নিয়ে, তাঁকে সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা জানিয়ে দল এগিয়ে চলবে। ওই বিবৃতিটি ভুয়ো। তাতে যা লেখা আছে সবই ভিত্তিহীন।” যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক সুজন দে বলেন, “কোনও একটি মহল ভোটের মুখে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে আজকের এই কাজ করেছে। জাতীয় পার্টিকে হেয় করাই তাদের উদ্দেশ্য।”

Advertisement

এর পরে যে বেগম রওশনের নামে সেই ‘বিবৃতি’, তাঁর রাজনৈতিক সচিব গোলাম মসীহ সন্ধ্যায় ঘোষণা করেন— “বিবৃতির বিষয়ে ‘ম্যাডাম’ নিজেই অন্ধকারে। সংবাদ মাধ্যমের খবর দেখে তিনি বিস্মিত। বিবৃতিটি ভিত্তিহীন ও ভুয়ো। এটি একটি চক্রান্ত।”

চেয়ারম্যান কাদেরের দিল্লি সফরের সঙ্গে এই ‘চক্রান্তের’ যোগ পাচ্ছেন জাতীয় পার্টির একাংশ। তাঁদের দাবি, বাংলাদেশের ‘সর্বোচ্চ ক্ষমতাধারী’ সামরিক গোয়েন্দা বাহিনী ডিজিএফআই-এর হাতের ছাপ স্পষ্ট এই ‘ভুয়ো বিবৃতি’ প্রচারে।

নাটকের যবনিকা পড়লেও কিছু রহস্য রয়েই গেল। ধন্দ কাটাতে রওশন এরশাদের কেন বেলা গড়াল? তাঁর কিছু অনুগতের উল্লাসই বা কেন বেগমের নজরে পড়ল না। তবে কি দলে অভ্যুত্থানের চেষ্টাই হয়েছিল, সুবিধা করতে না পেরে বিবৃতিকে ভুয়ো প্রতিপন্ন করা হল?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন