বছর ঘুরলেও ফেরেনি বোকো হারামের হাতে পণবন্দি নাইজেরিয়ার ২১৯ জন স্কুলছাত্রী। ব্রিটেনের এক মানবাধিকার সংগঠন আজ দাবি করেছে, গত বছরের শুরু থেকে এখনও পর্যন্ত ২ হাজারেরও বেশি মহিলা ও কিশোরীকে অপহরণ করেছে জঙ্গিরা। গত কালই ‘মিসিং চাইল্ডহুড’ নামে বিশেষ একটি রিপোর্ট পেশ করেছে ইউনেস্কো। সেই রিপোর্ট মোতাবেক, বোকো হারামের অত্যাচার থেকে রেহাই পায়নি শিশুরাও। সন্ত্রাস এড়াতে এই মুহূর্তে গোটা দেশে ঘরছাড়া অন্তত ৮ লাখ শিশু।
স্বভাবতই অভিযোগ উঠছে সরকারি নিষ্ক্রিয়তার। প্রশাসনের কাছে সদুত্তর নেই। দেশের সদ্য নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মুহাম্মাদু বুহারি আজ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘অপহৃতদের জন্য প্রার্থনা করা ছাড়া কোনও উপায় নেই। জানি না, আদৌ উদ্ধার করা যাবে কিনা! ’’
২০১৪-য় ঠিক আজকের দিনেই দেশের দক্ষিণ-পূর্বের বর্নো প্রদেশের চিবকের একটি স্কুল থেকে অপহরণ করা হয় ২৭৬ জন ছাত্রীকে। তাদের মধ্যে ৫৭ জন পালিয়ে বাঁচলেও, ২১৯ জন এখনও আটক। এক বছরেও কেন তাদের উদ্ধার করা গেল না, প্রশ্ন উঠছেই। সমালোচনায় সরব হয়েছে নোবেলজয়ী মালালা ইউসুফজাই-ও। ঘটনার বর্ষপূর্তিতে খোলা চিঠি লিখে সে কাঠগড়ায় দাঁড়় করিয়েছে নাইজেরিয়া-সহ বিশ্ব নেতৃত্বকেই। নিখোঁজ ছাত্রীদের উদ্দেশে তার বক্তব্য, ‘‘আমার ধারণা, জঙ্গিদের হাত থেকে তোমাদের ছাড়িয়ে আনতে কেউ চেষ্টাই করেনি।’’ তাই মালালার আর্জি, এ বার সক্রিয় হোক প্রশাসন। আলোচনায় এগিয়ে আসুন বিশ্ব নেতৃত্ব। মানবাধিকার সংগঠনটির দাবি, এই মুহূর্তে তিন-চারটি ভাগে আলাদা-আলাদা ডেরায় রাখা হয়েছে ছাত্রীদের। বিশেষ কয়েকটি জায়গাও চিহ্নিত করেছেন তাঁরা। নাইজেরীয় সেনার দাবি, এ তথ্য তাঁদের কাছেও রয়েছে। তবু কেন সেনা অভিযান চালানো হচ্ছে না? সেনার উত্তর— ঝুঁকি রয়েছে বলেই নির্দেশ মেলেনি। প্রশাসনের এই মনোভাবকেও আজ কটাক্ষ করেছে মালালা।
গত মে মাসে শেষ বার অপহৃত ছাত্রীদের দেখা গিয়েছিল জঙ্গিদেরই প্রকাশ করা এক ভিডিওতে। জঙ্গিনেতা আবু বকর শেকাও সেখানে দাবি করে, এদের সবাইকে ধর্মান্তরিত করা হয়েছে। মুসলিম পাত্রের সঙ্গেই বিয়ে দেওয়া হয়েছে প্রত্যেক স্কুলপড়ুয়ার। চিবকের এই ঘটনাই শুধু নয়, গত এক বছরে এ রকম ৩৮টি গণ-অপহরণের ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি ওই সংগঠনটির। অপহরণের পর ধর্ষণ, জোর করে বিয়ে দেওয়ার মতো অভিযোগও মিলেছে।