প্রতীকী ছবি।
মুঠোফোন ছাড়া আর সব কিছুকেই যে আমরা হাতছাড়া করতে পারি অনায়াসে, তা টের পেয়ে বিশ্ব জুড়ে মোবাইল ফোনের ‘দাদাগিরি’কে মেনে নিল কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ও! কেমব্রিজের মোটাসোটা, খুব ভারী ডিকশনারিতে এ বার মোবাইল ফোনের জন্য বরাদ্দ হল একটি শব্দ। ‘নোমোফোবিয়া’। বিশেষ একটি রোগের নাম।
বিশ্ব জুড়ে মোবাইল ফোন নিয়ে গত কয়েক বছরের উন্মাদনা এই প্রথম স্বীকৃতি পেল কেমব্রিজের মানদণ্ডে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রেস বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, জনপ্রিয়তার নিরিখে এ বছর মানুষের মুখে মুখে সবচেয়ে বেশি ঘুরেছে একটিই শব্দ। ‘নোমোফোবিয়া’। তাই এই শব্দটিকে এ বার ঢোকানো হচ্ছে কেমব্রিজ ডিকশনারির একেবারে হালের সংস্করণে।
অনেক ‘ফোবিয়া’তেই তো ভুগি আমরা সারাটা জীবন। তা হলে হঠাৎ কেন এই ‘নোমোফোবিয়া’র সংযোজন?
কেমব্রিজ ডিকশনারি যাঁরা বানান, তাঁদের তরফে বলা হয়েছে, এটা একটা রোগের নাম। একেবারে হালে যে রোগের গ্রাসে চলে গিয়েছেন প্রায় গোটা বিশ্বেরই মানুষ। যার অর্থ, ‘মোবাইল ফোন সঙ্গে না থাকা বা তা ব্যবহার না করতে না পারা (নো মোবাইল ফোন)-র জন্য ভয় বা উদ্বেগ (ফোবিয়া)’।
আরও পড়ুন- ৮.৫ তীব্রতার ভূমিকম্পে টালমাটাল হবে হিমালয়! মহাপ্রলয়ের সতর্কবার্তা বিজ্ঞানীদের
আরও পড়ুন- এ বার চাঁদের না-দেখা পিঠেও যাচ্ছে সভ্যতা
বাবা, মা, ঘর-বাড়ি, স্বামী, স্ত্রী, সন্তান, সব কিছুই ছাড়তে রাজি আমরা! শুধু কিছুতেই ভেবে উঠতে পারি না, হাতের মুঠোয় নেই সে! মুঠো থেকে সব কিছুই ছাড়তে পারি। শুধুই ছাড়তে পারি না মুঠোফোন বা মোবাইল ফোনকে। মুঠোফোন হাতে না থাকলেই হতাশ়া, অবসাদে ডুবে যাই আমরা। খপ্পরে পড়ে যাই আরও নানা রকমের মানসিক ব্যাধিতে।
এ বছর সংযোজনের জন্য নতুন চারটি শব্দকে বেছে নিয়েছিলেন কেমব্রিজ ডিকশনারির সম্পাদকরা। সেগুলি কার কেমন পছন্দ, তা জানতে ব্লগ পাঠকদের কাছে ও সোশ্যাল মিডিয়ায় মতামত জানতে চাওয়া হয়েছিল। তাতে ছিল ‘জেন্ডার গ্যাপ’, ‘ইকোসাইড (কোনও এলাকার স্বাভাবিক প্রকৃতি, পরিবেশের ধ্বংস হয়ে যাওয়া)’, ‘নো-প্ল্যাটফর্মিং (কারও ভাবনা বা বিশ্বাসকে প্রকাশ্যে বলতে দিতে বাধা দেওয়ার অভ্যাস)-এর মতো আরও তিনটি শব্দও।
কিন্তু ভোটাররা যেই দেখেছেন প্রতিযোগী চারটি শব্দের মধ্যে রয়েছে মোবাইল কেন্দ্রিক একটি শব্দ, সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের ভোট পড়েছে ‘নোমোফোবিয়া’র পকেটেই। ফলে, সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছে হালের সবচেয়ে উদ্বেগজনক একটি সামাজিক ‘ব্যাধি’- ‘নোমোফোবিয়া’ই!