হাইড্রোজেন বোমা ফাটিয়ে বন্ধু চিনেরও চিন্তা বাড়িয়ে দিল উত্তর কোরিয়া

সত্যিই কি হাইড্রোজেন বোমা ফাটিয়েছে উত্তর কোরিয়া? না, এই প্রশ্নের এখনও সদুত্তর মেলেনি। কিন্তু কূটনৈতিক মহলে বিশেষ ভাবে বেশ চাপে পড়ে গিয়েছে চিন। চিন কী করবে তার দিকে অনেকেই তাকিয়ে আছেন। তবে বৃহস্পতিবারও দেশ নির্বিশেষে নিন্দার ঝড় কমেনি। এই বোমা ফাটিয়ে উত্তর কোরিয়া যে সব নিষেধাজ্ঞাকে উলঙ্ঘন করেছে তা নিয়ে সবাই এক মত।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০১৬ ১৯:২৯
Share:

সত্যিই কি হাইড্রোজেন বোমা ফাটিয়েছে উত্তর কোরিয়া? না, এই প্রশ্নের এখনও সদুত্তর মেলেনি। কিন্তু কূটনৈতিক মহলে বিশেষ ভাবে বেশ চাপে পড়ে গিয়েছে চিন। চিন কী করবে তার দিকে অনেকেই তাকিয়ে আছেন। তবে বৃহস্পতিবারও দেশ নির্বিশেষে নিন্দার ঝড় কমেনি। এই বোমা ফাটিয়ে উত্তর কোরিয়া যে সব নিষেধাজ্ঞাকে উলঙ্ঘন করেছে তা নিয়ে সবাই এক মত।

Advertisement

আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহলে নিষেধাজ্ঞা জর্জরিত উত্তর কোরিয়া বরাবরই চিনকে পাশে পেয়েছে। চিনের সাহায্য ছাড়া উত্তর কোরিয়ায় কিম বংশের এই শাসন কার্যত অস্তিত্বের সঙ্কটে পড়ে যেত। নানা সময়ে নানা হুমকি দিয়ে, অস্ত্র পরীক্ষা করে বিশ্বের চক্ষুশূল হয়েছে উত্তর কোরিয়া। নিষেধাজ্ঞার বহর ক্রমেই বেড়েছে। কিন্তু চিনের ‘স্নেহের হাত’ কখনও সরে যায়নি। সব কিছু থেকেই নানা ভাবে মধ্যস্থতা করে উত্তর কোরিয়াকে সামলে দিয়েছে চিন। তাই চিনের শাসকদের সঙ্গে বরাবরই সু-সম্পর্ক বজায় রেখেছে উত্তর কোরিয়া।

আরও পড়ুন- পরমাণু বোমার কাছে হাইড্রোজেন বোমা ‘দানব’!

Advertisement

হাইড্রোজেন বোমা ফাটাল উত্তর কোরিয়া

কিম জং ইল-এর শাসনের সময়ে চিনের সঙ্গে সম্পর্ক বিষয়টি দেখভালের অন্যতম দায়িত্ব ছিল চাং সং থেক-এর উপরে। যিনি সম্পর্কে বর্তমান প্রেসিডেন্ট কিম জং উন-এর কাকা। কিন্তু ২০১২-এ ক্ষমতায় বসার পরে নিজের ক্ষমতাকে নিরঙ্কুশ করার জন্য উন পুরনো প্রশাসনের অনেকেই নিকেশ করেন। সেই তালিকায় ছিলেন কাকা চাং সং থেকও। উনের সময়ে সব মিলিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ৭০ জন উচ্চপদস্থ কর্তা। এর মধ্যে অনেকেই চিনের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। এতে চিনের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার সম্পর্ক বেশ খানিকটা ধাক্কা খায়। ক্ষমতায় বসার পরেও তিন বছরে পেরিয়ে গেলেও উন এখনও চিনে আসেননি। এমনকী চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং-এর সঙ্গে দেখাও করেননি। আগের মাসের উত্তর কোরিয়ার মহিলা ব্যান্ডের একটি দল চিনে অনুষ্ঠান করতে আসে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে অনুষ্ঠান না করেই দলটি চিন ছাড়ে। চিনের তরফ থেকে যদিও ভুল বোঝাবুঝির কারণ দেখানো হয়েছিল। কিন্তু দু’দেশের সম্পর্কের শীতলতা অনেকেরই চোখ এড়ায়নি।

সূত্রের খবর, উন আসলে উত্তর কোরিয়ার উপরে চিনের দীর্ঘ দিনের দাদাগিরিকে মেনে নিতে চান না। উনের আশা পারমাণবিক শক্তিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলে চিনের সঙ্গে সমানে সমানে কথা বলা যাবে। যাতে ভিতর বা বাইরে যে কোন দিক থেকেই উন-এর শাসন দুর্বল না হয়।

উন-এর আচরণে ক্ষুব্ধ হলেও কোনও বড়সড় পদক্ষেপ করেনি চিন। এমনকী কয়েক মাস আগেই মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য উত্তর কোরিয়ার নিন্দা করে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে পেশ হওয়া সনদকে কিছুটা নরম করার ব্যর্থ চেষ্টা করেছিল চিন। কিন্তু উত্তর কোরিয়ায় সাম্প্রতিক পারমাণবিক পরীক্ষা চিনকেও মুখ খুলতে বাধ্য করল। সাহায্যে করলেও উত্তর কোরিয়া আরও শক্তিশালী হয়ে উঠুক তা চিনের কাক্ষিত নয়। উত্তর কোরিয়া কোনও সামরিক সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ুক তাও চিনের কাম্য নয়।

তা হলে কী করবে চিন?

চিন কী করবে তার আভাস পাওয়া যাবে নিরাপত্তা পরিষদে চিনের আচরণে। নিরাপত্তা পরিষদের অনেক নিষেধাজ্ঞাই চিন ঠিকমতো পালন করে না। চিনের সঙ্গে নানা উত্তর কোরিয়ার নানা অর্থনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, চিন এ বার সেই নিষেধাজ্ঞাগুলিকে ব্যবহার করতে পারে। সে ক্ষেত্রে বড়সড় চাপে পড়ে যাবে উত্তর কোরিয়া। উত্তর লুকিয়ে আছে সময়ের গর্ভে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন