ওভাল অফিসে বারাক ওবামা। এএফপি-র তোলা ছবি।
একেই বোধহয় বলে বিপদের নাম আইএস।
না হলে প্রেসিডেন্টের মেয়াদ কালের মধ্যে যে তিনি, বারাক হুসেন ওবামা ওভাল অফিসের চৌহদ্দিতে পা দিয়েছেন বার দুয়েক, সেই তাঁকেও সেখানে আসতে হয়! জঙ্গি দমন কতটা কোমর বেঁধে নেমেছেন তিনি তা জানাতেই রবিবার ওভাল অফিস থেকে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন ওবামা।
জঙ্গি সংগঠন আইএসকে জব্দ করতে তিনি যে বদ্ধপরিকর তা ফের আরও একবার বোঝান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামা। মার্কিন জনগণের নিরাপত্তা প্রশ্নে তিনি যে কোন আপস করতে রাজি নয় তাই জানিয়েছেন তিনি। তবে এই লড়াইয়ে আমেরিকা যে একা নয় তাও জানাতে ভোলেননি ওবামা। আমেরিকার নেতৃত্বাধীন আরও ৬৫ দেশও তাঁর পাশে আছে, এ দিনের ভাষণে সে কথাই বলেন ওবামা। এই লড়াইয়ে তিনি মুসলিম সমাজকেও পাশে চেয়েছেন। তিনি বলেন, ইসলামের কথা বলে না আইএস। তারা ঠগ, তারা খুনি। বিশ্বের কোটি কোটি মুসলিমের মধ্যে আইএস-এর ভাবধারায় অনুপ্রাণিত মাত্র কয়েকাংশ। সিংহভাগই তাঁদের ভাবধারাকে মানে না। সন্ত্রাস হানার শিকার যাঁরা তাঁদেরও সিংহভাগও মুসলিম তাই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মুসলমান সমাজকে বাদ দিয়ে নয় তাঁদেরকে পাশে নিয়ে একসঙ্গে চলতে চান ওবামা। আমেরিকা ইসলাম বিরোধী— আইএস-এর এই স্ট্র্যাটেজিকে এই ভাবেই রোধ করতে চাইলেন ওবামা।
তবে যুদ্ধের স্ট্র্যাটেজি নির্ধারণে নিজের পূর্বসুরি বুশের ভুলের পুনরাবৃত্তি যে তিনি আর করবেন না তাও ঠারেঠুরে বোঝালেন দুঁদে রাজনীতিক ওবামা। ইরাকে পদাতিক সেনা পাঠানোর সিদ্ধান্ত যে ভুল তা মানলেন তিনি। তাই আইএসদের শিক্ষা দিতে পদাতিক সেনা পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতিকে বিপদের মুখে যে ঠেলে দেবেন না তা জানাতে ভোলেননি তিনি। তবে সেনা না পাঠালেও আইএসকে দমন করতে তিনি যে কঠোর ব্যবস্থা নিতেও পিছপা নন তা জানিয়েছেন ওবামা।
কী ভাবে আইএস দমনের কথা ভাবছেন ওবামা?
মূলত তিনটি উপায় অবলম্বন করেই আইএস দমনের কথা ভাবছে আমেরিকা। প্রথমত, পদাতিক সেনা না পাঠিয়ে বিমানহানার মাধ্যমে ইরাক এবং সিরিয়ায় আইএস ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়া। প্রয়োজন অনুসারে স্পেশ্যাল ট্রুপ পাঠানো হবে। দ্বিতীয়ত, আইএসদের আর্থিক মদত বন্ধ করে দেওয়া এবং যাতে নতুন লোক জঙ্গি সংগঠন না নিতে পারে তার ব্যবস্থা করা। তৃতীয়ত, স্থানীয় আইএস বিরোধী সেনাদের প্রশিক্ষণ এবং অত্যাধুনিক সামরিক সরঞ্জাম দিয়ে সাহায্য করা। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে দেশের সব রাজনৈতিক দলই যে এককাট্টা সেই বার্তা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ওবামা। এর জন্য কংগ্রেসে ভোটাভুটি করার ডাক দিয়েছেন তিনি। বুধবারের সান বের্নার্দিনোর হামলা যে জঙ্গি হামলা তাও ফের একবার বলেন ওবামা। এবং এই ধরণের হামলা ঠেকাতে অস্ত্র আইনও কঠোর করার ভাবছেন ওবামা। সেই সঙ্গে ভিসা আইনেও রদবদল করার কথা ভাবছেন তিনি।