ফিরে যান, শরণার্থীদের বার্তা ট্রাম্পের

সামনের বছরে ভোট আমেরিকায়। নির্বাচনী প্রচার শুরু হয়ে গিয়েছে এখন থেকেই। আর এই মুহূর্তে সীমান্তে অভিবাসী এবং শরণার্থী সমস্যাকেই পাখির চোখ করতে চাইছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ক্যালিফর্নিয়া শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৯ ০০:৫২
Share:

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি- রয়টার্স

সামনের বছরে ভোট আমেরিকায়। নির্বাচনী প্রচার শুরু হয়ে গিয়েছে এখন থেকেই। আর এই মুহূর্তে সীমান্তে অভিবাসী এবং শরণার্থী সমস্যাকেই পাখির চোখ করতে চাইছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত সপ্তাহেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট হুমকি দিয়েছিলেন মেক্সিকো সীমান্ত পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়ার। এ বার মেক্সিকোর সীমান্ত পেরিয়ে যে সব শরণার্থী আমেরিকায় ঢোকার চেষ্টা করছেন, তাঁদের প্রতি তাঁর বার্তা, ‘‘আমাদের দেশ পুরো ভর্তি। আর একটুও লোক নেওয়ার অবস্থা নেই আমাদের। তাই আপনারা ফিরে যান। ওটাই একমাত্র সমাধানের রাস্তা।’’ নির্বাচনী প্রচারেও ট্রাম্প এই কথাগুলিকেই অস্ত্র করতে চলেছেন বলে মনে করছেন অনেকে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার ক্যালিফর্নিয়ার ক্যালেক্সিকোতে গিয়েছিলেন ট্রাম্প। সীমান্তরক্ষী বাহিনীর আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক ছিল তাঁর। সেখানেই তিনি জানান, মধ্য আমেরিকা থেকে যে সংখ্যায় অভিবাসীরা মেক্সিকো সীমান্ত পেরিয়ে এখনও আমেরিকায় ঢুকতে চাইছেন, তা ভয়াবহ। এত লোক নেওয়ার ক্ষমতা আমেরিকার নেই।

ক্যালিফর্নিয়া সীমান্তের গা ঘেঁষা উত্তর মেক্সিকোর মেক্সিকালি শহরের মানুষ জানতেন ট্রাম্পের ক্যালেক্সিকো সফরের কথা। ট্রাম্পের এই বার্তায় যে মেক্সিকোর শরণার্থীরা খুশি নন, তা স্পষ্ট হয়েছে তাঁদের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে। যে রাস্তা দিয়ে প্রেসিডেন্টের কনভয় যাওয়ার কথা ছিল, শ’দুয়েক মানুষ সেখানে প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের নিশানায় ছিল ট্রাম্পের কঠোর শরণার্থী নীতি। শিশুরূপী ট্রাম্পের বেলুন দেখা যায় কারও হাতে। কারও হাতে প্ল্যাকার্ড, ‘পরিবারকে বিচ্ছিন্ন করা বন্ধ করুন’। কোনওটায় আবার লেখা, ‘‘আপনি দেওয়াল তুললে আমার প্রজন্ম তা ভেঙে দেবে।’ তবে উল্টো ছবিটাও ছিল। ক্যালেক্সিকোর বাসিন্দাদের বেশির ভাগই আবার ট্রাম্পের শরণার্থী নীতিকে সমর্থন করেন। ‘দেওয়াল তুলুন’ প্ল্যাকার্ড হাতে তাঁরা তাঁদের শহরে স্বাগত জানিয়েছেন প্রেসিডেন্টকে।

Advertisement

তবে ওয়াশিংটন ফিরে যাওয়ার আগে সীমান্ত নীতি নিয়ে সুর কিছুটা নরম করেছেন ট্রাম্প। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত হোয়াইট হাউসের আধিকারিকরা ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন, সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া নিয়ে চরম কিছু সিদ্ধান্ত নিতে চলেছেন প্রেসিডেন্ট। ক্যালেক্সিকোতে কাল কিন্তু সে কথা বললেন না ট্রাম্প। বরং জানালেন, সীমান্ত বন্ধের হুমকি দেওয়ার পরে গত চার-পাঁচ দিনে শরণার্থী অনুপ্রবেশ অনেকটাই আটকানো গিয়েছে। সে জন্য মেক্সিকো সরকারের প্রশংসাও করেন প্রেসিডেন্ট। বলেন, ‘‘মেক্সিকো সত্যিই দারুণ কাজ করেছে।’’ এর পরেই অবশ্য তিনি মাদকের চোরাচালানে রাশ টানার জন্য মেক্সিকো সরকারকে হুঁশিয়ারি দেন। সেই সঙ্গেই তাঁর বার্তা, মেক্সিকো কথা না শুনলে গাড়ি করে যে সব পণ্য মেক্সিকো থেকে আমেরিকায় ঢোকে, তার উপরে ২৫ শতাংশ মাসুল বসানোর কথা ভাবছেন তিনি।

মেক্সিকোর সঙ্গে আমেরিকার আর্থিক লেনদেন হয় চুক্তির মাধ্যমে। যার শরিক পড়শি কানাডাও। ট্রাম্প আচমকা এখন পণ্য মাসুল বাড়িয়ে দিলে মেক্সিকো তো বটেই কানাডার অর্থনীতিতেও তার একটা প্রভাব পড়বে। মেক্সিকোর সাধারণ মানুষ স্বভাবতই ট্রাম্পের এই নতুন হুমকিতে চিন্তিত। কারণ দেশের অর্থনীতিতে এর বিরাট প্রভাব পড়তে চলেছে। তবে মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট আন্দ্রে মানুয়েল লোপেজ় ওব্রাডর দেশবাসীকে আশ্বস্ত করেছেন, ‘‘শান্ত থাকুন। আমেরিকার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক খুবই ভাল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন