Qamar Javed Bajwa

নজরে কাশ্মীর, নয়া পাক সেনাপ্রধান বাজওয়া

বাজিমাত করলেন বাজওয়া। পাকিস্তানের পরবর্তী সেনাপ্রধান হিসেবে লেফ্টেন্যান্ট কোমার জাভেদ বাজওয়াকে বেছে নিলেন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। বাজওয়া এখন পাক সেনার ইনস্পেক্টর জেনারেল ট্রেনিং অ্যান্ড ইভলিউশন পদে আছেন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৬ ২০:৫০
Share:

কোমার জাভেদ বাজওয়া। ছবি: সংগৃহীত।

বাজিমাত করলেন বাজওয়া। পাকিস্তানের পরবর্তী সেনাপ্রধান হিসেবে লেফ্টেন্যান্ট কোমার জাভেদ বাজওয়াকে বেছে নিলেন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। বাজওয়া এখন পাক সেনার ইনস্পেক্টর জেনারেল ট্রেনিং অ্যান্ড ইভলিউশন পদে আছেন। এ ছাড়াও সেনার ১০ কর্পস-এর দায়িত্ব ছিল বাজওয়ার হাতেই। এটি পাক সেনার সব চেয়ে বড় কর্পস। নিয়ন্ত্রণরেখার দায়িত্বে আছে এই কর্পস-এর হাতে। পাকিস্তানের বর্তমান সেনাপ্রধান রাহিল শরিফ অবসর নিচ্ছেন ২৯ নভেম্বর। তার পরে সংখ্যার দিক থেকে পৃথিবীতে ষষ্ঠ পাক সেনার দায়িত্ব সামলাবেন বাজওয়া।

Advertisement

উত্তপ্ত নিয়ন্ত্রণরেখা। হামলা, পাল্টা-হামলা চলছে। দু’পক্ষের প্রাণহানির তালিকা দ্রুত বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে পাক সেনার দায়িত্ব নিচ্ছেন বাজওয়া। তবে এ ক্ষেত্রে তীব্র প্রতিযোগিতা ছিল। পাক সেনা ও প্রশাসনিক মহলে চারটি নাম ঘোরাঘুরি করছিল। বয়সের দিক থেকে এগিয়েছিলেন লেফ্টেন্যান্ট জেনারেল জুবাইর মাহমুদ হায়াত। তিনি এখন চিফ অব জেনারেল স্টাফ। এর পরেই ছিলেন লেফ্টেন্যান্ট জেনারেল ইসফাক নাদিম আহমেদ। ইসফাক বর্তমানে মুলতান কর্পসের কমান্ডার। আর ছিলেন ভাওয়ালপুর কর্পসের কমান্ডার লেফ্টেন্যান্ট জাভেদ ইকবাল রামদাই। তবে নওয়াজ ভরসা রাখলেন বাজওয়া-র উপরেই।

বাজওয়া দীর্ঘ দিন নিয়ন্ত্রণরেখা ও কাশ্মীরের দায়িত্বে ছিলেন। তার পরেও বাজওয়া ভারতের থেকে চরমপন্থাকে পাকিস্তানের বড় বিপদ বলে মনে করেন। এখন পরিস্থিতি যে দিকে গড়াচ্ছে তাতে কাশ্মীর সম্পর্কে অভিজ্ঞ লোক নওয়াজের দরকার পড়বে। সেই সূত্রেই হয়তো বাজওয়াকে বাছলেন নওয়াজ। তা ছাড়া বাজওয়া রাজনীতিতে আগ্রহী নন এবং সাধারণত লোকচক্ষুর আড়ালেই কাজ করতে ভালবাসেন। এই দু’টি দিকও নওয়াজের পছন্দের কারণ হতে পারে। এই নিয়ে পাকিস্তানের ষষ্ঠ সেনাপ্রধানকে বেছে নিলেন নওয়াজ।

Advertisement

রাষ্ট্রপুঞ্জের হয়ে কঙ্গোয় দায়িত্ব নিয়ে গিয়েছিলেন বাজওয়া। সেখানে তিনি ব্রিগেড কমান্ডার হিসেবে কাজ করেছিলেন। সেই সময়ে প্রাক্তন ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল বিক্রম সিংহও কঙ্গোয় ছিলেন। ফলে ভারতীয় সেনা আধিকারিকদের সঙ্গে বাজওয়ার সুসম্পর্ক থাকার সম্ভাবনা। বাজওয়া বালোচ রেজিমেন্ট থেকে কাজ শুরু করেছিলেন। জেনারেল আয়ুব খান, জেনারেল আসলাম বেগ, জেনারেল কিয়ানি-র পরে এ নিয়ে এই রেজিমেন্ট থেকে চতুর্থ ব্যক্তি হিসেবে পাক সেনার দায়িত্ব নেবেন বাজওয়া।

তবে শুধু ভারতই নয়, নতুন সেনাপ্রধানের সামনে বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। পঠানকোট হামলা, উড়ির হামলার পরে বিশ্বে পাকিস্তান কোণঠাসা। বিশ্বের সামনে পাকিস্তানের ভাবমূর্তি বেশ খারাপ। সেটাকে উদ্ধার করার দায়িত্ব থাকবে বাজওয়ার হাতে। রাহিল শরিফের পথে চিনের সঙ্গে সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে তাঁকে। আর সবচেয়ে বেশ জরুরি ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি করা। ট্রাম্প যদি তাঁর ঘোষিত নীতিই মেনে চলেন তবে পাকিস্তান তথা পাক সেনার সমূহ সমস্যা। সেই সমস্যাকে ঠিকমতো সামলানোর দায়িত্বও বাজওয়ার।

একই সঙ্গে জুবাইর মাহমুদ হায়াতকে জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে। সামরিক বাহিনী, বায়ুসেনা ও নৌবাহিনীর প্রধানকে নিয়ে এই কমিটি তৈরি হয়। যুদ্ধের সময়ে তিন বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় রক্ষা করা এই কমিটির কাজ। জুবাইর মাহমুদ হায়াত এর আগে ডিরেক্টর জেনারেল অব স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যান ডিভিশনের প্রধান ছিলেন। এই অংশটি পারমাণবিক অস্ত্রের দায়িত্ব থাকে। ফলে কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে হায়াত তীব্র সঙ্কটের সময়ে ঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন বলে পাক প্রশাসনের আশা। তবে নওয়াজের ইচ্ছা ছিল এ বার বায়ুসেনা বা নৌবাহিনীর প্রধান এই পদটি পান। তা ছাড়া শুধু সেনার হাতে না থেকে পদটি তিন বাহিনীর মধ্যে ঘুরতে থাকুক। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেনার ইচ্ছাকেই সম্মান দিতে হল।

আরও পড়ুন:ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতি ফিদেলের ছিল গভীর শ্রদ্ধা

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন