এ বার আরব সাগরে ঢুকছে চিন, ২০০০ একর জমি দিল পাকিস্তান

আরব সাগরে ঘাঁটি গাড়তে চায় চিন। ব্যবস্থা করে দিল পাকিস্তান। ইরানের কাছাকাছি পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তের গোয়াদরে চিন বন্দর তৈরি করবে বলে কথা চলছিল অনেক দিন ধরেই। তার জন্য চিনকে এ বার ২০০০ একর জমি দিল পাকিস্তান।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৫ ১৯:৪৫
Share:

আরব সাগরে ঘাঁটি গাড়তে চায় চিন। ব্যবস্থা করে দিল পাকিস্তান। ইরানের কাছাকাছি পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তের গোয়াদরে চিন বন্দর তৈরি করবে বলে কথা চলছিল অনেক দিন ধরেই। তার জন্য চিনকে এ বার ২০০০ একর জমি দিল পাকিস্তান। আরব দুনিয়ার কাছে বন্দর বানিয়ে আমেরিকার একাধিপত্যে থাবা বসানো আর ভারতকে ঘিরে ফেলার চেষ্টা— গোয়াদরে চিনা বন্দর বানানোর মূল লক্ষ্য এই দু’টিই। বলছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা।

Advertisement

বেজিং আর ইসলামাবাদের তরফে বলা হচ্ছে, দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক সুদৃঢ় করতেই গোয়াদরে চিনা বন্দর তৈরির ব্যবস্থা। চিনের জিনজিয়াং প্রদেশের কাশগড় শহরের সঙ্গে সড়কপথে জুড়তে চলেছে পাকিস্তানের গোয়াদর। দু’দেশই বলছে এটি একটি অর্থনৈতিক করিডর। এই করিডর এবং গোয়াদর বন্দরের সুবাদে মধ্যপ্রাচ্যে পণ্য রফতানি এবং সেখান থেকে খনিজ তেল আমদানির খরচ অনেকটা কমাতে পারবে চিন। নতুন বন্দরের দৌলতে বাণিজ্য বাড়বে পাকিস্তানেরও। কিন্তু আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশারদরা বলছেন, এই করিডর এবং বন্দর তৈরির পিছনে চিনের মূল উদ্দেশ্য মোটেই অর্থনৈতিক নয়। চিন স্বীকার না করলেও সামরিক কারণেই যে পাকিস্তানের গোয়াদরে বন্দর নির্মাণ করছে তারা, তা নিয়ে ওয়াকিবহাল মহলের কোনও সন্দেহ নেই।

এই করিডর নিয়ে ইতিমধ্যেই আপত্তি তুলেছে ভারত। শুধু সড়ক যোগাযোগ নয়, গোয়াদর থেকে বালুচিস্তানের ভিতর দিয়ে, গিলগিট-বাল্টিস্তান হয়ে চিনের কাশগড় পৌঁছচ্ছে খনিজ তেলের পাইপলাইন। এই গিলগিট-বাল্টিস্তান পাক অধিকৃত কাশ্মীরের অংশ। ওই এলাকা ভারতের না পাকিস্তানের তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে জেনেও, সেখানে রাস্তা তৈরি এবং পাইপলাইন বসানোর কাজ চিন কী করে শুরু করছে, ভারতের তরফে সেই প্রশ্নই তোলা হয়েছে। বেজিং সে সব কথায় কান দিতে নারাজ। চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র জানিয়েছেন, চিন ও পাকিস্তান পারস্পরিক উন্নতির লক্ষ্যে গোয়াদরে বন্দর এবং চিন-পাক অর্থনৈতিক করিডর গড়বেই।

Advertisement

বন্দর তৈরির জন্য বালুচিস্তানে ২০০০ একর জমি অধিগ্রহণ করে পাকিস্তান তা চিনের সংস্থাকে হস্তান্তরও করেছে। পাঁচ বছরের মধ্যে বন্দর ও করিডর নির্মাণের কাজ শেষ করা হবে বলেও চিনের তরফে জানানো হয়েছে। এই বন্দর তৈরি হয়ে গেলে, আরব সাগরে স্থায়ী আস্তানা বানাতে পারবে চিন। আপাতত আরব সাগরে দাপট আমেরিকা আর ভারতেরই। মধ্যপ্রাচ্যের একাধিক দেশে আমেরিকার সেনা মোতায়েন থাকায় এবং একাধিক মার্কিন রণতরী ওই এলাকায় নিয়মিত টহল দেওয়ায়, তেল সাম্রাজ্য এখন আমেরিকার নিয়ন্ত্রণে। কৌশলগত কারণে এমন গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্রে নিজেদের অনুপস্থিতি মেনে নিতে পারছে না চিন। তাই গোয়াদরে বন্দর তৈরির ব্যবস্থা। ইরানের খুব কাছে অবস্থিত গোয়াদর থেকে এ বার আরব সাগরে নজরদারির প্রস্তুতি শুরু করল চিন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন