নিষেধাজ্ঞার বোঝা চাপিয়ে তাদের বিপাকে ফেলতে চাইলে আমেরিকার সঙ্গে যাবতীয় সহযোগিতা বন্ধের হুঁশিয়ারি দিল পাকিস্তান। সম্প্রতি আফগান নীতি ঘোষণা করতে গিয়ে ইসলামাবাদকে ‘সন্ত্রাসবাদীদের স্বর্গরাজ্য’ বলেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পাকিস্তানকে আর্থিক অনুদান বন্ধের হুমকিও দেন তাঁর বিদেশসচিব রেক্স টিলারসন। ক্ষোভ প্রকাশ করলেও এ নিয়ে এত দিন সরাসরি মুখ খোলেনি পাকিস্তান। পাক বিদেশ মন্ত্রক এ বার জানাল, আমেরিকা নিষেধাজ্ঞা চাপাতে চাইলে সে দেশের বিরুদ্ধেও কড়া অবস্থান নিতে প্রস্তুত তারা।
ট্রাম্প প্রশাসনকে কোণঠাসা করতে তিনটি বিকল্পের কথা ভেবেছে পাক সরকার। সূত্রের খবর, প্রথম বিকল্প হিসেবে আমেরিকার সঙ্গে কূটনৈতিক সহযোগিতা কমিয়ে আনার কথা ভাবা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, সন্ত্রাসবাদ রুখতে দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতায় লাগাম টানা। ও তৃতীয় তথা মোক্ষম চালটি হলো, পাক মাটি ব্যবহার করে আফগানিস্তানে নিযুক্ত ন্যাটো বাহিনীর রসদ সরবরাহের সব রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া। এখন দেশের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির অনুমোদন পেলে তবেই আমেরিকার সঙ্গে এই কূটনৈতিক লড়াইয়ে যেতে পারবে পাক সরকার।
আফগানিস্তান নিয়ে নয়া নীতি ঘোষণার সময়েই সন্ত্রাস দমনে পাকিস্তানের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে ওয়াশিংটন। ট্রাম্প অভিযোগ করেন, হক্কানি নেটওয়ার্ক-সহ অফগান জঙ্গিদের নিশ্চিত আশ্রয় হয়ে উঠেছে পাকিস্তানের মাটি। কড়া সুরে তিনি এ-ও শুনিয়ে রাখেন ‘‘সন্ত্রাসবাদে মদত দিলে পাকিস্তানকে অনেক কিছু হারাতে হবে। জঙ্গিদের ঠাঁই দেয় এমন কোনও দেশের সঙ্গেই কোনও বোঝাপড়ায় যাওয়ার প্রশ্ন নেই।’’ মার্কিন সেনেটর জন ম্যাকেনও জানান, হক্কানি নেটওয়ার্ক-সহ অন্য জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির উপর থেকে সমর্থন তুলে না নিলে নিষেধাজ্ঞার খাঁড়া নেমে আসবে পাকিস্তানের উপর। দক্ষিণ এশিয়ার জন্য নয়া নিরাপত্তা পরিকল্পনা সাজাতে গিয়ে সেই একই ধরনের হুঁশিয়ারি দেন ট্রাম্পও। জানিয়ে দেন, সন্ত্রাস দমনে পাকিস্তান কড়া পথে না হাঁটলে ন্যাটো বহির্ভূত প্রধান মিত্রদেশের মর্যাদাও হারাবে পাকিস্তান।
আগামী কাল রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভার অধিবেশনে হাজির থাকবেন পাক-মার্কিন দু’দেশের শীর্ষ প্রশাসনিক নেতারা। সেখানেই মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের সঙ্গে মুখোমুখি হওয়ার কথা পাক প্রধানমন্ত্রী শাহিদ খকান আব্বাসির। মনে করা হচ্ছে, সেখানেই দুই দেশের মধ্যে এই চলতি সঙ্কটের প্রসঙ্গ তুলবেন রাষ্ট্রনেতারা।