রাষ্ট্রপুঞ্জে মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি
সিরিয়া সরকারের বিরুদ্ধে আরও মারমুখী হচ্ছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। কোনও রাখঢাক না করেই এ বার আমেরিকা সাফ জানাল, প্রেসিডেন্ট বাসার আল আসাদ যত দিন ক্ষমতায় থাকবেন, তত দিন সিরিয়ায় শান্তি ফেরা সম্ভব নয়। তাই বর্তমান পরিস্থিতিতে আসাদকে ক্ষমতা থেকে সরানোর কথা ভাবছে ওয়াশিংটন। একই সুরে ব্রিটেনও বলেছে, যে নেতা তাঁর দেশবাসীকে মারতে রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগ করেন, তাঁর নেতৃত্ব কোনও ভাবেই দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে না।
আসাদ সরকারকে পথে আনতে প্রয়োজনে সিরিয়ার উপর আরও হামলার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন রাষ্ট্রপুঞ্জে মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি। এ বার আরও এক ধাপ সুর চড়ালেন তিনি। মার্কিন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি সরাসরি বললেন, ‘‘সিরিয়াকে শান্ত করতে আসাদ বিদায় অবশ্যম্ভাবী। ক্ষমতা বদলের সময় এসে গিয়েছে সে দেশে।’’
মঙ্গলবার বিদ্রোহী অধ্যুষিত খান শেখুতে রাসায়নিক হামলার আগে অবশ্য এ ভাবে সরাসরি আক্রমণের পথে হাঁটেনি আমেরিকা। নির্বাচনের আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, একই সঙ্গে আইএস জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াই করা ও আসাদকে সরাতে চাওয়া ‘মূর্খামি’। কিন্তু, এই প্রথম সিরিয়ার বিমান ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে আসাদের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধের পথেই হেঁটেছে পেন্টাগন। খান শেখুতে হামলার পাঁচ দিন আগেই তিনি বলেছিলেন, ‘‘আসাদ কবে ক্ষমতা থেকে সরবেন তার অপেক্ষায় পথ চেয়ে থাকার কথা আর ভাবছি না আমরা।’’ তাহলে আমেরিকার পরবর্তী পদক্ষেপ কী? নিকির কথায়, ‘‘অবশ্যই শুধুমাত্র আসাদ নয়। আইএস জঙ্গিদের নিকেশ করার কথাও আমাদের মাথায় আছে। তবে আসাদ ক্ষমতায় থাকাকালীন সিরিয়ায় শান্তি আসবে, এমন আশা আর করছি না। অন্য দিকে, সিরিয়ার পিছনে যেভাবে লাগাতার মদত জুগিয়ে চলেছে ইরান, তা বন্ধ করতে হবে অবিলম্বে। তবেই শেষমেশ সিরিয়া নিয়ে রাজনৈতিক সমাধানে যাওয়া যাবে।’’ তাঁর মতে, সিরিয়ার সঙ্কট কাটাতে রাজনৈতিক সমাধানই এক মাত্র উপায়।
রাশিয়ার উপর চাপ বাড়াতে আমেরিকার সঙ্গে আলোচনা করে মস্কো সফর বাতিল করেছেন ব্রিটিশ বিদেশসচিব রবিস জনসনও। তবে এই সপ্তাহেই রাশিয়া যাচ্ছেন মার্কিন বিদেশসচিব রেক্স টিলারসন। রবিবার ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা সচিব মিশেল ফ্যালন বলেন, ‘‘রাসায়নিক হামলায় নিরপরাধ মানুষের মৃত্যুর জন্য আসাদ সরকারের প্রধান মদতদাতা ক্রেমলিনই পরোক্ষে দায়ী।’’ তাঁর বক্তব্য, বিদ্রোহী অধ্যুষিত ইদলিবের উপর মঙ্গলবারের গ্যাস হামলা ‘বর্বরোচিত, অনৈতিক ও অবৈধ’। এর জবাব দিতে ট্রাম্পের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সিদ্ধান্ত একেবারে সঠিক। রুশ প্রশাসনকে দুষে তিনি বলেন, ‘‘গত ছ’বছরে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ বন্ধ করার জন্য সব রকম সুযোগ ছিল মস্কোর হাতে। কিন্তু তারা উদ্যোগী হয়নি।’’ আমেরিকার সুরে ব্রিটেনও বলছে, এ বার আসাদ-হীন সরকার গঠনের সময় এসেছে। তা কঠিন হলেও অসম্ভব নয়।