পুঁজিবাদী বৈভব আর ‘সমাজতান্ত্রিক বাজার অর্থনীতি’র চিনে এখন অনেকটাই মুছে গিয়েছেন মাও জে দং। কিন্তু আগামী কাল থেকে মধ্য চিনের যে ওয়াহান শহরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং-এর ‘ঘরোয়া’ আলোচনা শুরু হচ্ছে, সেটি কিন্তু মাও-এর স্মৃতি বিজড়িত!
ওয়াহান শহরে ইস্ট লেকের পাশে যে বাংলোয় মোদী উঠেছেন সেখানে মাও আসতেন অবকাশ যাপনে। ১৯৬৬ সালে রটে গিয়েছিল তিনি গুরুতর অসুস্থ। হঠাৎই এখানে দেখা যায় মাওকে। এই লেকে তিনি সাঁতারও কেটেছিলেন। এই শহর থেকেই শুরু হয়েছিল চিনের সাংস্কৃতিক বিপ্লব। ওয়াহানে বার্ষিক সাঁতার উৎসব আজও চিনা কমিউনিস্ট পার্টির একটি গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি।
বিদেশ মন্ত্রকের এক কর্তার মতে, ‘‘এই বৈঠকের যে ঘরোয়া আঙ্গিক, তার সঙ্গে এই নিসর্গ খাপ খায়।’’ দিল্লির চিনা রাষ্ট্রদূত লুও ঝাংহুই-এর দেশের বাড়িও ওয়াহানে। একটি ভিডিও বার্তায় তিনি জানিয়েছেন, ‘‘আমার নিজের শহরে এই যে ঐতিহাসিক বৈঠকটি হচ্ছে, এটা আমারও গর্বের বিষয়।’’
বৈঠকের তাগিদটা কিন্তু বেশি নয়াদিল্লির। লোকসভা ভোটের আগে ডোকলামের মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তিতে ফের মুখ পোড়াতে চায় না মোদী সরকার। পাশাপাশি বাণিজ্য প্রশ্নে আমেরিকা ও ইউরোপের রক্ষণশীলতায় একটি অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে চিনের সঙ্গে বাণিজ্যের নতুন দরজা খুলতে পারলে দিল্লির লাভ হবে।
আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধ চলাকালীন ভারতের বিশাল বাজারকে ধরতে পারাটাও শি চিনফিং-এর অগ্রাধিকারের মধ্যে পড়ছে। ভারত সরকার বেশ কিছু ক্ষেত্রে চিনা পণ্যের উপর শুল্ক না বসিয়েও আমদানির ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকম বাধা তৈরি করছে বলে অভিযোগ বেজিংয়ের। এই বিষয়ে জোর দেবেন চিনা প্রেসিডেন্ট।