নরেন্দ্র মোদী।
নিরঙ্কুশ বাম সমর্থন নিয়ে কে পি শর্মা ওলি নেপালের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে কপালে ভাঁজ পড়েছিল সাউথ ব্লকের। গত কয়েক বছর ধরে ওলির প্রকাশ্য ভারত-বিরোধিতা এবং চিন ঘনিষ্ঠতা, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে ক্রমশই ঘোলা করেছে বলেই মনে করেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞেরা। কিন্তু চলতি মাসে ওলির ভারত সফর কিছুটা বরফ গলিয়েছে। সম্পর্কে আরও গতি আনতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আগামী মাসের গোড়াতেই কাঠমান্ডু যাচ্ছেন। এখনও চূড়ান্ত ঘোষণা হয়নি। তবে সূত্রের খবর, মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে নেপালের জনকপুরেও যাওয়ার কথা রয়েছে মোদীর।
ক্ষমতায় আসার পরে ২০১৪ সালে সার্ক সম্মেলনে যোগ দিতে মোদী যখন নেপাল যান, তাঁর ইচ্ছে ছিল রামায়ণ-বর্ণিত জনকপুরে যাওয়ার। নেপাল-বিহার সীমান্তের কাছে এই জায়গাটিতে রাম-সীতার বিয়ের বর্ণনা রয়েছে রামায়ণে। কিন্তু নেপাল সরকারের আপত্তিতে জনকপুরে যাওয়ার মনস্কামনা পূর্ণ হয়নি মোদীর। কাঠমান্ডুর সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি সেই সময়েই কিছুটা শুরু হয়ে গিয়েছিল।
এ বার যাতে মোদী সেখানে যেতে পারেন, তার জন্য যাবতীয় সক্রিয়তা শুরু করে দিয়েছেন ভারতীয় কর্তারা। দু’দেশের রাজনৈতিক স্তরে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। সূত্রের খবর, এ ব্যাপারে ইতিবাচক সাড়াই পাওয়া গিয়েছে নেপাল সরকারের পক্ষ থেকে। মদেশীয় বিক্ষোভের সময়ে ভারতের বিরুদ্ধে আর্থিক অবরোধের অভিযোগ উঠেছিল নেপালে। বিদেশ মন্ত্রকের দাবি, এর ফলে নেপালে ভারত-বিরোধী মনোভাব সাময়িক ভাবে তৈরি হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু সাউথ ব্লক বরাবরই এই প্রতিবেশী রাষ্ট্রটিকে বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে এসেছে। ক্ষমতায় আসার পরে দু’বার নেপাল গিয়েছেন মোদী। ওলির সদ্যসমাপ্ত ভারত সফরে দু’দেশের মধ্যে আস্থা অনেকটাই ফিরে পাওয়া গিয়েছে, এমনটাও দাবি করা হচ্ছে।
বিদেশ মন্ত্রকের কর্তাদের মতে, স্থিতিশীল ও আর্থিক ভাবে উন্নত নেপাল ভারতের স্বার্থের পক্ষে অনুকূল। কিন্তু সে দেশের সরকার যদি অতিরিক্ত চিন-ঘনিষ্ঠতার পথে হাঁটে, তবে তা দিল্লির পক্ষে অস্বস্তিকর। তবে চিন-নেপাল ঘনিষ্ঠতা কমাতে, দোষারোপ না করে নয়াদিল্লির দিক থেকে সক্রিয়তা অনেকটাই বাড়াতে হবে— এমনটাই মনে করছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। তাই বিষয়টিকে ফেলে না রেখে নেপালে গিয়ে শীর্ষ পর্যায়ের যোগাযোগ বহাল রাখতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী।