Agitation at Bangladesh

ঢাকায় নারী নিগ্রহের প্রতিবাদে মিছিল, পুলিশের লাঠিচার্জ

দেশে ক্রমবর্ধমান নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে ‘ধর্ষণ ও নিপীড়ণের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ নামে একটি মঞ্চ আজ গণপদযাত্রার ডাক দিয়েছিল। ওই কর্মসূচিতে পড়ুয়া এবং মহিলাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০২৫ ০৭:২০
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

দেশজুড়ে নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে একটি মিছিলকে কেন্দ্র করে রীতিমতো উত্তপ্ত হল বাংলাদেশ। ওই মিছিলে বেধড়ক লাঠিচার্জ করে পুলিশ। ইউনিফর্ম পরা পুলিশকর্মীদের পাশাপাশি, সাদা পোশাকেও পুলিশকর্মী নামানো হয়েছিল। অভিযোগ, পুলিশি নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পাননি মিছিলে থাকা ছাত্রী-মহিলারাও। তাঁদের শ্লীলতাহানি করা হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। যদিও পুলিশের দাবি, মিছিলকারীরাই প্রথমে পুলিশের উপরে হামলা চালিয়েছে। এরই মধ্যে আজ বাংলাদেশের একটি আদালত নির্দেশ দিয়েছে, সুধা সদন-সহ শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার।

Advertisement

দেশে ক্রমবর্ধমান নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে ‘ধর্ষণ ও নিপীড়ণের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ নামে একটি মঞ্চ আজ গণপদযাত্রার ডাক দিয়েছিল। ওই কর্মসূচিতে পড়ুয়া এবং মহিলাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। স্থানীয় সময় বেলা পৌনে ৩টে নাগাদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে পদযাত্রা শুরু হয়। ৯ দফা দাবি নিয়ে স্মারকলিপি জমা দিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের উদ্দেশ মিছিল এগোতে থাকে। সেটি শাহবাগ মোড় অতিক্রম করে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের পাশে পৌঁছলে পুলিশ বাধা দেয়। সেই সময় পুলিশি বাধা অতিক্রম করে এগোতে চেষ্টা করেন প্রতিবাদকারীরা। তখনই মিছিল ছত্রভঙ্গ করতে লাঠি চালাতে শুরু করে পুলিশ। মিছিলকারীদের অভিযোগ, বিনা প্ররোচনায় ঝাঁপিয়ে পড়ে পুলিশ বাহিনী। যে ভাবে মারধর করা হয়েছে তা এক কথায় বেনজির। মহিলাদের চুলের মুঠি ধরে রাস্তায় ফেলে সাদা পোশাকের পুলিশ মারধর করে বলে অভিযোগ।

রাস্তায় দাঁড়িয়ে রীতিমতো উত্তেজিত ভাবে এক ছাত্রী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘আমাদের মেয়েদের জামা ছিঁড়ে দিয়েছে পুলিশ। পুরুষ পুলিশকর্মীরা মেয়েদের গায়ে হাত তুলেছে।’’ অনেকেই বলেছেন, হাসিনার আমলে এর চেয়ে বেশি গণতন্ত্র ছিল। রাস্তায় বসে এক প্রতিবাদীকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘স্মারকলিপি পেশের মতো গণতান্ত্রিক কাজও যদি এই সরকার করতে না দেয়, রক্ত ঝরিয়ে আন্দোলন করে কী লাভ হল? ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য, বৈষম্য দূর করার জন্য এই সরকারকে তো আমরাই প্রতিষ্ঠা করেছিলাম। আর তারাই স্বৈরাচারের দোসরদের লেলিয়ে দিয়ে আমাদের রক্তাক্ত করল।’’

Advertisement

আজকের অশান্তির পুরো দায় মিছিলকারীদের উপর চাপিয়েছে পুলিশ প্রশাসন। রমনা থানার ওসি গোলাম ফারুক বলেন, ‘‘মিছিলকারীরা প্রথমে পুলিশের উপর হামলা চালিয়েছে। তাতে রমনা অঞ্চলের সহকারী কমিশনার-সহ পাঁচ পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন।’’ এ দিকে, নারী নির্যাতন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। তারা বলেছে, সরকার অবিলম্বে ন্যায়বিচার, সুরক্ষা এবং মানবাধিকার রক্ষায় সচেষ্টা হোক। নারী ও শিশুদের উপর নির্যাতনে সরকার যে ‘শূন্য সহনশীলতা’র কথা বলেছে তার বাস্তব প্রয়োগ প্রয়োজন।

শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিজনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ জারি রেখেছে ইউনূস প্রশাসন। আজ দুর্নীতি দমন কমিশনের আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহম্মদ জাকির হোসেন গালিবের আদালত হাসিনার সুধা সদন-সহ তাঁর পরিবারের সদস্যদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের আদেশ দেন। বাজেয়াপ্তের আদেশ দেওয়া উল্লেখযোগ্য সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে সুধা সদন; যা শেখ হাসিনার ছেলে জয় ও মেয়ে পুতুলের নামে। গুলশান আবাসিক এলাকায় টিউলিপ সিদ্দিকের একটি ফ্ল্যাট, শেখ রেহানার নামে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ১০ শতাংশ জমি, সেগুনবাগিচায় ফ্ল্যাট।

হাসিনার বিরুদ্ধে বিষোদ্গার চালিয়ে যাচ্ছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূস। একটি ব্রিটিশ সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘‘হাসিনার শাসনকালে কোনও সরকার ছিল না, ছিল ডাকাতের একটি পরিবার। কর্ত্রীর কাছ থেকে যে কোনও আদেশ এলেই তা কার্যকর করা হত। কেউ সমস্যা সৃষ্টি করছে? তাদের গায়েব করে দেব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement