এক বাক্যেই জবাব দেওয়া যেত। কিন্তু, ‘থিওরি’র বদলে তিনি ‘প্রাক্টিক্যাল’ করে দেখিয়েছিলেন। আর তাঁর সেই হাতেকলমে দেখানোর চোটে আহত হলেন বেশ কয়েক জন। এমনকী, শেষমেশ চাকরি থেকেও সাসপেন্ড হতে হয়েছে পাক পুলিশের এক কনস্টেবলকে।
করাচির অ্যান্টি টেররিজম কোর্টে গত সোমবারের ঘটনা। ভরা আদালত। কোর্ট রুমে তখন বিচারপতি, আইনজীবী, পুলিশ, আসামী, আদালত কর্মী, কিছু সাধারণ মানুষ— শুনানি চলছে। কাঠগড়ায় পুলিশের এক কনস্টেবল। বিচারপতি তাঁকে মামলা সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশ্ন করছেন। সেই প্রশ্নমালায় নিরীহ একটি কৌতূহলও ছিল। গ্রেনেড কী ভাবে কাজ করে? কৌতূহলমাখা এই প্রশ্নের সঙ্গে বিচারপতি জানতে চেয়েছিলেন, ‘আপনি কি জানেন, গ্রেনেড ছোড়ার আগে কী কী করতে হয়? কী ভাবে ছোড়ে?’
বিচারপতির এই প্রশ্নে চোখমুখ উজ্জ্বল হয়ে ওঠে কনস্টেবলের। বিচারপতির কৌতূহল মেটাতে তিনি কোনও ব্যাখ্যার রাস্তায় হাঁটেননি। বরং তাঁর জ্ঞান হাতেকলমে দেখাতে চেয়েছেন। আর সে কারণেই যে মামলা নিয়ে শুনানি চলছিল, সেই ঘটনায় আটক করা একটি হ্যান্ড গ্রেনেড তুলে নেন তিনি। এর পর দাঁত দিয়ে খুলে ফেলেন তার পিন। আর সঙ্গে সঙ্গেই বিকট শব্দ করে বিস্ফোরণ! গোটা কোর্ট রুম ধোঁয়ায় ধোঁয়া। সঙ্গে চিত্কার।
পর মুহূর্তে কোর্ট রুমের মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখা যায় যন্ত্রণাকাতর ওই কনস্টেবলকে। সঙ্গে আরও দু’জন। তাঁরাও রক্তাক্ত। বাকি দু’জনের এক জন পুলিশ কর্মী এবং অন্য জন আদালতের করণিক। তিন জনকেই সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় এক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পাকিস্তানের করাচিতে অ্যান্টি টেররিজম কোর্ট-এর এই ঘটনায় পাক পুলিশের কাণ্ডজ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। ওই কর্মীকে সাময়িক ভাবে সাসপেন্ড করা হয়েছে। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম যদিও দাবি করেছে, ওই গ্রেনেডটি আসলে একটি বোমা। এবং তাকে নিষ্ক্রিয় না করেই আদালতে পেশ করা হয়েছিল।
বাইরে যে সমস্ত নিরাপত্তা রক্ষীরা প্রহরায় ছিলেন, জঙ্গি হামলা হয়েছে ভেবে তাঁরা সকলেই আদালত চত্বর ঘিরে ফেলেন। যদিও পরে জানা যায় আসল ঘটনা। তত ক্ষণে বিচারপতি-সহ গোটা কোর্ট রুম জেনে গিয়েছে, গ্রেনেড কী ভাবে কাজ করে। ওই পুলিশ কর্মী জেনে গিয়েছেন, গ্রেনেডের ঘায়ে মানুষ কী ভাবে আহত হয়। এবং কিছু ক্ষণের মধ্যে তিনি এটাও জানতে পেরেছেন যে, গ্রেনেড ছুড়ে কী বাবে সরকারি চাকরি থেকে সাসপেন্ড হওয়া যায়।