শেরিন ম্যাথিউস
সপ্তাহ দু’য়েক হতে চলল, খোঁজ নেই শেরিন ম্যাথিউসের। দু’বছর আগে ভারতের একটি অনাথ আশ্রম থেকে বছর তিনেকের এই মেয়েটিকে টেক্সাসের রিচার্ডসন সিটির বাড়িতে নিয়ে এসেছিলেন ম্যাথিউস দম্পতি। এমনিতে হাসিখুশি, কিন্তু কথা বলার কিছু সমস্যা ছিল শেরিনের। গত ৭ অক্টোবর নিজের বাড়িতেই তাকে শেষ দেখা গিয়েছিল। গোড়ায় এমনই কিছু তথ্য হাতে নিয়ে শেরিনকে খুঁজতে নেমেছিল টেক্সাস পুলিশ। আজ ম্যাথিউসদের বাড়ির কাছে সকাল ১১টা নাগাদ একটি নালার মধ্যে মিলল মোটামুটি ওই বয়সেরই একটি মেয়ের দেহ।
এই দেহ কি শেরিনেরই? প্রাথমিক তদন্তে এমনটাই মনে করছে টেক্সাস পুলিশ। তবে মৃতের পরিচয় এখনও প্রকাশ করেনি পুলিশ। শুধু ইঙ্গিতে জানিয়েছে, এটা অন্য কারও মৃতদেহ মনে করার কারণ নেই। চলছে ময়না-তদন্ত। নতুন করে জেরা করা হচ্ছে সেরিনের পালক বাবা ভারতীয় বংশোদ্ভূত ওয়েসলি ম্যাথিউসকে (৩৭)। শেরিন নিখোঁজের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে গত বৃহস্পতিবারই ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ জানান, এ নিয়ে হিউস্টনের কনসাল জেনারেল অনুপম রায়ের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন তিনি।
পুলিশ জানিয়েছে, মেয়ে নিখোঁজ হওয়ার প্রায় ঘণ্টা পাঁচেক পরে রিপোর্ট লেখাতে আসেন ওয়েসলি। কেন এত দেরি? শেরিন-রহস্যের কিনারা করতে গিয়ে এখন কোনও সূত্রই হাতছাড়া করতে চাইছেন না তদন্তকারীরা। ওয়েসলি পুলিশকে জানিয়েছিলেন— দুধ খেতে চাইছিল না বলে রাত তিনটে নাগাদ তিনিই মেয়েকে বাড়ির বাইরের উঠোনে লম্বা একটা গাছের নীচে দাঁড়িয়ে থাকতে বলেন। তার মিনিট পনেরো পরে সেখানে ফিরে গিয়ে দেখেন— মেয়ে উধাও। ওই চত্বরে বুনো কুকুর আর শেয়ালের যথেচ্ছ যাতায়াত রয়েছে। তা জেনেও এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণের জন্য সে দিনই তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। যদিও আড়াই লক্ষ ডলার দিয়ে বন্ডে তার পরের দিনই ছাড়া পেয়ে যান ওয়েসলি।
শেরিনের খোঁজে এলাকার বাড়ি-বাড়ি গিয়ে জোর তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। ১০ অক্টোবর আসে ডগ-স্কোয়াড, ড্রোন, এমনকী হেলিকপ্টারও। পুলিশ জানতে পারে, যে দিন মেয়েটি নিখোঁজ হয়েছিল, সে দিনই ভোর ৪টে থেকে ৫টার মধ্যে ম্যাথিউসদের একটি গাড়ি বাড়ির বাইরে যায়। কার গাড়ি, কোথায় গিয়েছিল— খোঁজ চলছে। শেরিনের পালক মা সিনি ম্যাথিউসের বিরুদ্ধে অবশ্য এখনও কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। কারণ পুলিশকে সিনি জানিয়েছেন,ওই দিন ঘটনার সময়ে তিনি বাড়িতে ঘুমিয়ে ছিলেন। স্বামী কী করছেন, কিছুই জানতেন না।