ন’বছর ধরে খোঁজার পরে জানা গেল, খুনই হয়েছিল লিন্ডসে বাউম।
কয়েক গজ দূরেই বন্ধুর বাড়ি। সে-টুকুর মধ্যেই উধাও হয়ে গিয়েছিল দশ বছরের লিন্ডসে বাউম। ন’বছর ধরে খোঁজার পরে জানা গেল, খুনই হয়েছিল মেয়েটি।
২০০৯-এর ২৬ জুন। আমেরিকার সব থেকে উত্তর-পশ্চিম রাজ্য ওয়াশিংটনের ম্যাকক্লিয়ারি শহরতলিতে বাড়ি ছিল লিন্ডসের। রাত ন’টা নাগাদ বন্ধুর বাড়ি থেকে বেরোয় সে। তিন-চার মিনিটের রাস্তা। কিন্তু সওয়া ন’টার মধ্যেও বাড়ি না ফেরায়, চিন্তা করতে শুরু করেন মা। খবর যায় পুলিশে। শুরু হয় খোঁজ।
বছরের পর বছর কেটেছে। খোঁজ মেলেনি মেয়েটির। সেপ্টেম্বরে ওয়াশিংটনের এক জঙ্গল থেকে কিছু মানব দেহাংশ পান শিকারিরা। এফবিআইয়ের পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছিল সেগুলো। জানানো হয়েছে, দেহাবশেষ লিন্ডসের।
লিন্ডসে যখন হারিয়ে যায়, ম্যাকক্লিয়ারিতে তখন হাজার দেড়েক লোকের বাস। নিরিবিলি শহরতলিতে যে এমন কোনও ঘটনা ঘটতে পারে, তা ভাবতেই পারেননি ম্যাকক্লিয়ারির বাসিন্দারা। গ্রেজ় হারবার কাউন্টির শেরিফ রিক স্কটের কথায়, ‘‘বাচ্চারা রাস্তায় খেলত। স্কুলের বাস থেকে নেমে একা একা হেঁটে বাড়ি থেকে ফিরত। একটা ঘটনা এলাকার আবহাওয়াটাই পাল্টে দিল।’’
পুলিশ প্রথমে ভেবেছিল, মজা করার জন্য লুকিয়ে রয়েছে লিন্ডসে। ‘লিন্ডসে, বাড়ি ফিরে এসো। কেউ তোমায় কিছু বলবে না’— এই বার্তা দিয়ে চতুর্দিকে পোস্টারও দিয়েছিল তারা। কিন্তু পুলিশের সেই তত্ত্ব গোড়াতেই উড়িয়ে দিয়েছিলেন তার মা মেলিসা। তাঁর কথায়, ‘‘কথা না বলে থাকতেই পারে না আমার মেয়ে। কী করে ও গা ঢাকা দিয়ে থাকবে!’’ লিন্ডসের বাবা ছিলেন মার্কিন সেনাবাহিনীতে। অগস্ট মাসে ইরাক চলে যাওয়ার আগে তিনি সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘‘কাল আমার মেয়ের জন্মদিন। কয়েক দিন পরেই আমায় আবার ইরাক চলে যেতে হচ্ছে। লিন্ডসেকে দয়া করে ফিরিয়ে আনুন।’’
প্রথম থেকেই তদন্তের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন স্কট। তিনি এক সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘‘লিন্ডসেকে বাড়ি ফেরাতে ফিরেছি। তবে তার পরিবার এবং আমরা তাকে যে অবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছিলাম এবং প্রার্থনা করছিলাম, সেই অবস্থায় তাকে ফেরাতে পারলাম না। এটাই খুব দুঃখের।’’ তাঁর কথায়, ‘‘লিন্ডসের খোঁজ শেষ হল। শুরু হল আর একটা নতুন তদন্ত— তার খুনির খোঁজে।’’