আফগানিস্তান-পাকিস্তান সীমান্তে এলাকায় মার্কিন সেনার সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে জঙ্গি ছাড়াও নিহত হয়েছিলেন আল কায়দার হাতে বন্দি দুই ব্যক্তিও। আজ এই তথ্য জানিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে গোটা ঘটনার দায়িত্ব স্বীকার করলেন বারাক ওবামা। সরকারের তরফে এই ঘটনার জন্যে ক্ষমাও চেয়ে নেন তিনি।
আজ সকাল ১০টায় হোয়াইট হাউসের ব্রিফিং রুম থেকে একটি বিবৃতি দেন ওবামা। তাতে তিনি জানান, গত জানুয়ারিতে মার্কিন ড্রোন হানায় আফগানিস্তানে যে দুই বন্দির মৃত্যু হয়েছিল তাদের মধ্যে এক জন মার্কিন নাগরিক। নাম ওয়ারেন ওয়েইনস্টাইন। অন্য জন হলেন গিয়োভানি লো পোর্তো। তিনি ইতালির নাগরিক। হোয়াইট হাউস সূত্রের খবর, গতকালই ওবামা ওয়েইনস্টাইনের স্ত্রী এলেন এবং ইতালির প্রধানমন্ত্রী মাত্তেও রেনজির সঙ্গে সরাসরি কথা বলে তাঁদের কাছে দুঃখপ্রকাশ করেন।
ওই দুই বন্দি ছাড়াও ওই একই এলাকায় মার্কিন ড্রোন হানায় নিহত হয়েছিল আল কায়দার সদস্য দু’জন মার্কিন নাগরিক। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, তাদের নাম আহমেদ ফারুক এবং অ্যাডাম গাডান।
একটি মার্কিন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মী ওয়েইনস্টাইন পাকিস্তানে গিয়েছিলেন যুদ্ধবিধ্বস্তদের সাহায্য করতে। ২০১১ সালের অগস্টে আল কায়দার হাতে বন্দি হন তিনি। ইতালির একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মী গিয়োভানিকে আল কায়দা বন্দি করেছিল ২০১২ সালে।
মার্কিন আধিকারিকেরা জানান, আফগানিস্তান-পাকিস্তান সীমান্ত এলাকায় আল কায়দা কোনও বন্দিকে রাখতে পারে— এমন কোনও তথ্য তাঁদের কাছে ছিল না। এমনকী ওই এলাকায় ফারুক এবং গাডানের মতো মার্কিন জঙ্গিদের উপস্থিতি নিয়েও তথ্য ছিল না সেনাবাহিনীর কাছে। গোয়েন্দাদের হাতে মজুত নথিপত্র বিশ্লেষণ করে বোঝা যাচ্ছে, ড্রোন হানায় ওই দুই বন্দির মৃত্যু দুর্ঘটনা ছাড়া আর কিছুই নয়। ওয়ারেন ও গিয়োভানির দেহও উদ্ধার হয়নি। ফলে ডিএনএ পরীক্ষাও হয়নি। গোয়েন্দা রিপোর্ট এবং পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করা হচ্ছে।
মার্কিন ও পাক সরকারের বোঝাপড়ায় ওয়ারেন ফিরে আসবেন বলে বিশ্বাস করতেন তাঁর স্ত্রী এলেন। মার্কিন সরকারের ঘোষণা সেই স্বপ্ন ভেঙে দিয়েছে।
ওবামা বলেন, ‘‘এক জন স্বামী এবং বাবা হিসেবে আমি বুঝতে পারছি ওয়েইনস্টাইন এবং লো পোর্তো পরিবার এখন কী অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন।’’ মার্কিন সরকারের তরফে সত্য স্বীকার করার প্রয়োজনীয়তা বুঝেই ওবামা আজ বিবৃতি দিয়েছেন বলে হোয়াইট হাউসের তরফে জানানো হয়েছে। এই বিষয়ে পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রক কোনও মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।