ভারতীয় সময় বিকেল সাড়ে ৫টায় লন্ডনের উইনসর প্রাসাদে আজ বিয়ে প্রিন্স হ্যারি এবং মেগান মার্কলের।
কাউন্টডাউন শেষ। ২০১১-র পর ২০১৮, ফের রাজকীয় বিয়েতে মেতে উঠেছে লন্ডন। রাজপরিবারের ভিতরে তো বটেই, বাইরেও ভিড় করেছেন শ’য়ে শ’য়ে মানুষজন। আজই ভারতীয় সময় বিকেল ৫টায় সেন্ট জর্জ’স চ্যাপেলে বিয়ে হল যুবরাজ হ্যারি এবং মেগান মার্কলের। ২০১১ সালেও ঠিক এমনই আনন্দ এবং সাজে মেতে উঠেছিল লন্ডন। প্রিন্স উইলিয়াম এবং কেট মিডলটনের বিয়েতে।
একেবারে স্বতন্ত্র রয়্যাল ওয়েডিং
প্রতিটা রয়্যাল ওয়েডিংয়েই কিছু না কিছু ভিন্নতা থাকে। তবে এই বিয়ে রাজপরিবারের অন্য সমস্ত বিয়ের থেকেই আলাদা। আর একে স্বতন্ত্র করেছে প্রিন্স হ্যারি এবং মেগানের কিছু সিদ্ধান্ত। এই প্রথম এত কাছ থেকে রাজকীয় বিয়েতে যোগদান করতে পারছেন সাধারণ মানুষ।
এর জন্য ‘রয়্যাল’ তালিকার বাইরে আলাদা করে ১২শো সাধারণ মানুষকে নিমন্ত্রণ করা হয়েছে। উইনসর প্রাসাদের গ্রাউন্ড থেকে রয়্যাল ওয়েডিং চাক্ষুস করার সুযোগ পাচ্ছেন তাঁরা। তবে তাঁরা প্রাসাদের অন্দরে ঢুকতে পারবেন না। প্রাসাদের গ্রাউন্ডে দাঁড়িয়ে প্রিন্স হ্যারি এবং মেগানের প্রাসাদে পৌঁছনো এবং বেরনো দেখতে পাচ্ছেন। এই সুযোগ এর আগে কখনও আসেনি আমজনতার কাছে।
‘ছক-ভাঙা’ রয়্যাল ওয়েডিং
রাজপরিবারে যা রীতি-নীতি, অন্যদের মতো হ্যারি-মেগান অতটা কঠিন ভাবে তা পালন করেননি। এনগেজমেন্ট ঘোষণার পর তাঁদের ক্যামেরা সামনে প্রথম ইন্টারভিউয়ে তার প্রমাণ পাওয়া যায়। ইন্টারভিউয়ের সময় উইলিয়াম এবং কেটের কথোপকথনে যেখানে পরিমিত এবং রয়্যাল ছাপ অনেক বেশি ছিল। দূরত্ব বজায় রেখে তাঁরা ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে কথা বলছিলেন এবং একে অপরকে স্পর্শ করেননি। হ্যারি এবং মেগান কিন্তু নিজেদের মধ্যে অনেক বেশি খোলামেলা ছিলেন। পাশাপাশি এবং একে অন্যের হাতে হাত রেখে তাঁরা বসেছিলেন। প্রতিটা প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন একে অন্যের দিকে তাকিয়ে।
আরও পড়ুন: হ্যারি-মেগানের বিয়ে, রয়্যাল ওয়েডিংয়ের এই নিয়মগুলো জানেন?
এমনকী বিয়ের দিনেও শপথবাক্য পাঠেও সামান্য বদল আনেন মেগান। ‘ওবে’ হার হাসব্যান্ড অর্থাৎ স্বামীকে মান্য করে চলা— শপথ থেকে এই শব্দটিও বাদ দিয়েছেন মেগান। তবে জানা গিয়েছে, ‘ওবে’ শব্দটি বাদ দেওয়ার এই রীতি প্রিন্স ডায়না প্রথম চালু করেছিলেন। কেট মিডলটনও এই শব্দটি বাদ দিয়েছিলেন।
উইনসর প্রাসাদের বাইরে অপেক্ষায় আমজনতা
অতিথি তালিকা
৬০০ জনকে বিশেষ নিমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছিল। এর বাইরেও ২০০ জন অতিথি থাকছেন সান্ধ্য অনুষ্ঠানে। বিনোদনের জন্য থাকছে কিছু স্পাইস গার্ল-ও।
তবে মেগান মার্কলের বাবা টমাস মার্কল বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারবেন না। জানা গিয়েছে, সদ্য তাঁর হার্ট সার্জারি হয়েছে। সেই অসুস্থতার জন্যই তিনি অনুপস্থিত থাকছেন। তবে মা ডোরিয়া গত বুধবারই মেয়ের বিয়েতে যোগ দিতে লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে লন্ডন পৌঁছেছেন।
তবে জানা যাচ্ছে, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে এবং লেবার লিডার জেরেমি করবিনের নাম অতিথি তালিকায় নেই। আমন্ত্রণ পেয়েছেন ১২০০ জন সাধারণ মানুষ।
মোগানের বান্ধবী বিসেবে এই বিয়েতে উপস্থিত থাকছেন বলি নায়িকা প্রিয়ঙ্কা চোপড়া।
সেজে উঠেছে সেন্ট জর্জ’স চ্যাপেল। এই পথ ধরেই প্রবেশ করবেন মেগান
উপাধি
ইতিমধ্যেই রানি এলিজাবেথ পরিবারের এই নতুন সদস্যর জন্য উপাধি ঘোষণা করে দিয়েছেন। বিয়ের পর মেগান হবেন ডাচেস অফ সাসেক্স। ডিউক অফ সাসেক্স এখন প্রিন্স হ্যারি।
নো ফ্লাই পিরিয়ড
ভারতীয় সময় অনুযায়ী বিকেল সাড়ে ৫টায় বিয়ে। বাবা না আসতে পারায় হবু শ্বশুর চার্লস রাজপরিবারের রীতি মেনে উইনসোর প্যালেসে মেগানকে নিয়ে এসেছেন। মেগানের প্রাসাদের উদ্দেশে রওনা দেওয়া এবং প্রাসাদে প্রবেশ করা এই পুরো সময়টায় এই প্রাসাদের উপর দিয়ে কোনও বিমান যাতায়াত করবে না। ভারতীয় সময় বিকেল সাড়ে ৪টে থেকে ‘নো ফ্লাই পিরিয়ড’ শুরু হয়।