সংগৃহীত ছবি
আরব বিশ্বে কাতার একঘরে হওয়ার পর নিঃশব্দে কূটনৈতিক দৌত্য শুরু করল নয়াদিল্লি। ঘটনার পরেই বিদেশমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, এটি নেহাতই আরব বিশ্বের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ঘটনার জেরে কোনও ভারতীয় সমস্যায় পড়লে সাহায্য করবে সাউথ ব্লক। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পশ্চিম এশিয়ার এই জট ছাড়াতে নিজের মতো করে সক্রিয় হচ্ছে নয়াদিল্লি।
বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, সৌদি-সহ বিভিন্ন দেশ, কাতার এবং আমেরিকার সঙ্গেও বিভিন্ন সূত্রের মাধ্যমে যোগাযোগ করছে সাউথ ব্লক। আজ কাতার পরিস্থিতি নিয়ে নীরবতা কাটিয়ে একটি বিস্তারিত এবং সতর্ক বিবৃতি দিয়েছে বিদেশ মন্ত্রক। তাতে এক দিকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের নিন্দা করা হয়েছে, অন্য দিকে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে আরব দেশগুলিকে অনুরোধ করা হয়েছে। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র গোপাল ওয়াগলে জানিয়েছেন, ‘‘সৌদি আরব এবং বেশ কিছু দেশ কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। আমরা ঘটনার উপরে নজর রাখছি। আমরা মনে করি মতপার্থক্যের বিষয়গুলি আলোচনার মাধ্যমে মেটানো সম্ভব।’’
এটা ঘটনা যে নরেন্দ্র মোদী সরকারের গত তিন বছরের বিদেশনীতিতে যেটুকু সাফল্য এসেছে তার মধ্যে প্রধান হলো পশ্চিম এশিয়ার সঙ্গে লাভজনক সম্পর্ক তৈরি হওয়া। সৌদি আরব এবং কাতার, এই দু’টি রাষ্ট্রের সঙ্গেই পৃথক ভাবে ভারতের সম্পর্ক যে ভাল তা গত সপ্তাহেই জোর গলায় বলেছেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যদি কোনও রাষ্ট্র সরব হয় (যে অভিযোগ কাতারের বিরুদ্ধে) তাহলে গলা না-মেলানো ছাড়া উপায় নেই ভারতের। তাই পশ্চিম এশিয়ার এই পরিস্থিতিতে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রেখেই চলতে হচ্ছে মোদী সরকারকে।
কূটনৈতিক শিবিরের দাবি, কাতারকে সামনে রেখে আসলে ইরানের উপর চাপ সৃষ্টি করতে চাইছে সৌদি। সেই কাজে সম্পূর্ণ মদত রয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের। কিন্তু আমেরিকার পক্ষেও শেষ পর্যন্ত কাতারের বিরুদ্ধে কোনও বড় পদক্ষেপ করা সম্ভব নয়। কারণ, মার্কিন সেনার একটি বড় ঘাঁটি রয়েছে কাতারে। আমেরিকা ও কাতার, এই দু’দেশের মধ্যে কূটনৈতিক বোঝাপড়াও এতদিন ধরে মসৃণই থেকেছে। সূত্রের খবর, নয়াদিল্লির কর্তাদের সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের কর্তাদের কথা হয়েছে। পশ্চিম এশিয়ার সঙ্গে ভারতের স্বার্থ যে ওতপ্রোতভাবে মিশে রয়েছে তা আজ মনে করিয়ে দিয়েছে সাউথ ব্লক। বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতিতেও বলা হয়েছে, ‘‘গাল্ফ কো-অপারেশন কাউন্সিল বা জিসিসি-ভুক্ত দেশগুলির সঙ্গে ভারতের বহু পুরনো বন্ধুত্বের সম্পর্ক। আট লক্ষ অনাবাসী ভারতীয় এই দেশগুলিতে থাকেন। ফলে এখানকার শান্তির সঙ্গে ভারতের জাতীয় স্বার্থ জড়িত। আমাদের সরকার সংশ্লিষ্ট সমস্ত দেশগুলির সঙ্গে কথা বলছে।’’