ব্রেক্সিটকে কেন্দ্র করে ব্রিটেনে দাঙ্গার পরিস্থিতি তৈরি হলে ব্রিটিশ রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ-সহ পুরো রাজপরিবারকে রাজপ্রাসাদ ‘বাকিংহাম প্যালেস’ থেকে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হতে পারে। রবিবার সানডে টাইমস-সহ ব্রিটেনের দু’টি সংবাদপত্রে এমন খবরই প্রকাশিত হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে মন্ত্রিসভার এক আধিকারিক বলেন, ‘‘জরুরিভিত্তিতে রাজপরিবারের সদস্যদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ঠাণ্ডাযুদ্ধের সময় থেকেই কার্যকর রয়েছে। প্রয়োজন হলে ব্রেক্সিট পরবর্তী সময়ে তা ফের প্রয়োগ করা হতে পারে।’’
২৯ মার্চ ইউরোপীয় ইউনিয়ন(ইইউ) ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার কথা ব্রিটেনের। ব্রেক্সিট নিয়ে ক্রমেই পারদ চড়ছে ব্রিটেন জুড়ে। গত মাসেই প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে’র ব্রেক্সিট প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছিলেন ব্রিটিশ এমপিরা। পার্লামেন্টে টেরেসার চুক্তির পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন মাত্র ২০২ জন এমপি। আর বিপক্ষে ভোট পড়েছিল ৪৩২টি। ব্রিটিশ সংসদীয় ইতিহাসে এত বড় হারের আর কোনও নজির নেই। তাঁর নিজের দল ও জোটসঙ্গী নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের ডিইউপি দলের শতাধিক এমপি-ও টেরেসার বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছিলেন। পরের দিন এক আস্থাভোটে কোনও ক্রমে নিজের গদি বাঁচান টেরেসা।
আয়ারল্যান্ড সীমান্তের মতো গুরুত্বপূর্ণ ও জটিল বিষয় নিয়ে আটকে রয়েছে ব্রেক্সিট চুক্তি। ব্রেক্সিট প্রস্তাবে ব্রিটেনের অংশ নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড এবং স্বাধীন রাষ্ট্র রিপাবলিক অব আয়ারল্যান্ডের মধ্যে সীমান্ত নিয়ে যা বলা হয়েছে, তাতেই আপত্তি রয়েছে অনেকের। ১৯৯৯ সালের বেলফাস্ট চুক্তি অনুযায়ী, এখন এই দুই ভূখণ্ডের মধ্যে কোনও বেড়া নেই, এ-দিক থেকে ও-দিক যেতেও ব্রিটিশ বা আয়ারল্যান্ডের নাগরিকদের কোনও বাধার সম্মুখীন হতে হয় না। বাণিজ্যের পথ একই রকম সুগম। কনজ়ারভেটিভ ও ডিইউপি এমপিরা চান, ইইউ থেকে ব্রিটেন বেরিয়ে আসার পরেও একই রকম সহজ থাকুক দুই ভূখণ্ডের মধ্যে যাতায়াত। অন্তত যত দিন রিপাবলিক অব আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে ব্রিটেনের নতুন সীমান্ত চুক্তি তৈরি না হচ্ছে।
আরও পড়ুন: নেপাল-ভূটান ভারতের অংশ! ফের বেফাঁস মন্তব্য ট্রাম্পের
আরও পড়ুন: টাইগারের সঙ্গে গল্ফ খেললেন ট্রাম্প
আস্থাভোটে জেতার পরেই বিভিন্ন দলের সঙ্গে আলোচনা শুরু করে দিয়েছিলেন টেরেসা। যদিও বিরোধী দলনেতা জেরেমি করবিনের দাবি, প্রধানমন্ত্রী শুধু নানাবিধ রাজনৈতিক চাল চেলে যাচ্ছেন। ব্রিটিশ নাগরিকের কথা ভেবে কোনও পদক্ষেপই করছেন না। পাশাপাশি, দেশের বিভিন্ন ব্যবসায়িক গোষ্ঠীগুলো বলছে, ব্রেক্সিট পরিকল্পনা দীর্ঘ হলে ব্যবসা-বাণিজ্যে ব্যাপক নৈরাজ্য দেখা দিতে পারে। ব্রেক্সিট চুক্তি কার্যকর হলে ইইউ থেকে আমদানি পণ্য নতুন করে কাস্টমসের তল্লাশির মুখে পড়তে পারে। এর ফলে ওষুধ এবং খাদ্য ঘাটতি হতে পারে।
(আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, আন্তর্জাতিক চুক্তি, আন্তর্জাতিক বিরোধ, আন্তর্জাতিক সংঘর্ষ- সব গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের আন্তর্জাতিক বিভাগে।)