পাশে রানি, বিতর্কের পরে এলেন মে-ও

মঙ্গলবার রাতে গ্রেনফেল টাওয়ারের অগ্নিকাণ্ডে এক লহমায় তছনছ হয়ে গিয়েছে যাঁদের জীবন, তাঁদের কাছে পৌঁছে গেলেন ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। সঙ্গে ছিলেন তাঁর নাতি ডিউক অব কেমব্রিজও।

Advertisement

শ্রাবণী বসু

লন্ডন শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৭ ০২:৫৮
Share:

সমবেদনা: আক্রান্তদের সঙ্গে দেখা করতে নর্থ কেনসিংটনে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। সঙ্গে নাতি রাজকুমার উইলিয়াম। শুক্রবার। ছবি: রয়টার্স।

রানি পারলেন। অথচ প্রধানমন্ত্রী পারলেন না। তাই নিয়েই লন্ডনে শুরু হয়েছে বিক্ষোভ।

Advertisement

মঙ্গলবার রাতে গ্রেনফেল টাওয়ারের অগ্নিকাণ্ডে এক লহমায় তছনছ হয়ে গিয়েছে যাঁদের জীবন, তাঁদের কাছে পৌঁছে গেলেন ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। সঙ্গে ছিলেন তাঁর নাতি ডিউক অব কেমব্রিজও। ওয়েস্টসাইড সেন্টারে আজ তাঁরা অগ্নিদগ্ধ বাসিন্দাদের কথা শুনেছেন। অথচ ঠিক সেই কাজটাই করে উঠতে পারেননি প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে।

এমনিতে ভোটের ফল বেরোনোর পর থেকে টেরেসার জনপ্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সরকার গড়তে গিয়ে কম বেগ পেতে হচ্ছে না তাঁকে। তার উপরে গ্রেনফেল টাওয়ারের এই বিপর্যয়ের পরে তিনি ঘটনাস্থলে গেলেও দেখা করেননি ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের সঙ্গে। বিষয়টি নিয়ে চূড়ান্ত অসন্তোষ তৈরি হয়েছে সব মহলেই। রানি এবং রাজকুমার উইলিয়াম যেখানে বিপর্যস্ত মানুষদের সঙ্গে আধ ঘণ্টা ধরে কথা বলে তাঁদের দুর্দশা বোঝার চেষ্টা করেছেন, নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে সেখানে গিয়েই উঠতে পারেননি টেরেসা। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশ্নের ঝড়, রানি তো দিব্যি ঘুরে এলেন। টেরেসা কেন পারলেন না?

Advertisement

ঘটনাস্থলে গিয়ে টেরেসা কাল আপৎকালীন কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেই দায় সেরেছেন। ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করার কথাও ঘোষণা করেছেন। কিন্তু তাতে ক্ষোভ থামছে না। ভোটের আগে যে সব ব্রিটিশ দৈনিক তাঁর পাশে ছিল, সমালোচনায় মুখর তারাও। বিরোধী নেতা জেরেমি করবিন বা লন্ডনের মেয়র সাদিক খান কিন্তু সে ভুল করেননি। মানুষের ক্ষোভের মুখে পড়লেও তাঁরা পিছু হটেননি। প্রাক্তন এক মন্ত্রী টেরেসার কাজের সমালোচনায় বলেছেন, ‘‘গোছানো একটা পরিস্থিতি তৈরি করে তবে উনি যেতে চেয়েছিলেন। মানুষের আবেগটা বুঝবেন না? উল্টে সেই আক্রান্তদের ভয়ে পিছিয়ে গেলেন?’’ এত দিক থেকে চাপ হওয়ায় শেষমেশ শুক্রবার সকালে হাসপাতালে গিয়ে কয়েক জন আহতের সঙ্গে দেখা করেছেন টেরেসা।

স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। মৃতের সংখ্যা বেড়ে এখন ৩০। নিখোঁজ অন্তত ৭০ জন। তদন্তকারীদের ধারণা মৃত বেড়ে ৬০ হতে পারে। কালই বলা হচ্ছিল মৃতের সংখ্যা ১০০ ছোঁয়াও অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু মেট্রোপলিটান পুলিশ কম্যান্ডার স্টুয়ার্ট কান্ডি বলছেন, ‘‘আমরা যাঁরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে কাজ করছি, তাঁদের পক্ষে বিষয়টা খুবই স্পর্শকাতর। আশা রাখছি সংখ্যাটা তিন অঙ্কের হবে না।’’

দমকলবাহিনী এখনও গ্রেনফেল টাওয়ারের সব দিক ছুঁতে পারেনি। বিশেষ করে উপর দিকের তলাগুলোয় এগোতে ভয়ই পাচ্ছে তারা, কারণ কাঠামো কতটা নড়বড়ে হয়েছে, সেটা এখনও স্পষ্ট নয়। তাই কাজে নেমেছে ড্রোন ও প্রশিক্ষিত কুকুর। ২৪ তলা থেকে মিলেছে ছ’টি দেহ। ভিতরে আরও ১১টি দেহ দেখতে পেলেও সেগুলো সরানো সম্ভব হয়নি।

বাড়িঘর হারিয়ে যাঁরা এক রাতের তফাতে আকাশের নীচে এসে দাঁড়িয়েছেন, তাঁদের চিন্তা দূর করতে স্থানীয় কাউন্সিল জানিয়েছে ওই এলাকার আশপাশেই ১২০টি পরিবারকে থাকার সুযোগ দেওয়া হবে।
অনেকেই মাথা গুঁজেছেন হোটেলে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন