Nuclear Power Plant

উত্তর কোরিয়ার পরমাণু কেন্দ্র থেকে বিকিরণ-শঙ্কা

উত্তর কোরিয়ার উত্তর হামজিয়োং প্রদেশে অবস্থিত এই পাংগেই-রি গবেষণা কেন্দ্র। ওই পরমাণু কেন্দ্রের আশপাশে রয়েছে, চিন, জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়ার মতো অন্য দেশের কিছু শহরও।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

সোল শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৭:২২
Share:

উত্তর কোরিয়ার উত্তর হামজিয়োং প্রদেশে অবস্থিত পাংগেই-রি গবেষণা কেন্দ্র। প্রতীকী ছবি।

সাল ২০০৬ থেকে ২০১৭। এই সময়ের মধ্যে মাটির তলার গোপন পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র থেকে কম করে ছ’বার পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছিল কিম জং উনের দেশ উত্তর কোরিয়া। অন্তত দক্ষিণ কোরিয়া এবং আমেরিকার সরকার সেই দাবিই এত দিন করে এসেছে। এ বার দক্ষিণ কোরিয়ার একটি মানবাধিকার সংস্থা দাবি করেছে, ওই পরীক্ষাগুলি করার ফলে উত্তর কোরিয়ার পাংগেই-রি পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র ও তার আশপাশের ভূগর্ভস্থ জলে এত পরিমাণ তেজস্ত্রিয় পদার্থ ছড়িয়ে গিয়েছে যে, উত্তর কোরিয়ার কমপক্ষে দশ লক্ষ মানুষের জীবন এখন সঙ্কটে। আজই এ নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে ‘ট্রানজ়িশনাল জাস্টিস ওয়ার্কিং গ্রুপ’ নামে ওই মানবাধিকার সংস্থা। তাদের আরও দাবি, তেজস্ক্রিয় বিকিরণের ভয় রয়েছে চিন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশে বসবাসকারী বাসিন্দাদেরও। তার অন্যতম কারণ হল, উত্তর কোরিয়ার সীমান্তবর্তী এই দেশগুলিতে কাঁটা তার পেরিয়ে চোরাপথে মাছ থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের আনাজ নিয়মিত এই সব দেশে পাচার করা হয়।

Advertisement

উত্তর কোরিয়ার উত্তর হামজিয়োং প্রদেশে অবস্থিত এই পাংগেই-রি গবেষণা কেন্দ্র। এর আশপাশে উত্তর কোরিয়ার আটটি শহর রয়েছে, যার বাসিন্দারা নিয়মিত খাওয়া ও রান্নার জন্য সেখানকার মাটির তলার জল ব্যবহার করেন। শুধু উত্তর কোরিয়ার শহরই নয়, ওই পরমাণু কেন্দ্রের আশপাশে রয়েছে, চিন, জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়ার মতো অন্য দেশের কিছু শহরও। বিভিন্ন বিজ্ঞানী, পরমাণু গবেষক এবং পরিবেশবিদদের গবেষণার ফলাফলের কথা নিজেদের রিপোর্টে উল্লেখ করেছে ওই মানবাধিকার সংস্থা। সংস্থার প্রধান হুবার্ট ইয়ং-হন লি সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘‘শুধু নিজেদের দেশই নয়, উত্তর কোরিয়ার ওই পরমাণু পরীক্ষার ফলে আশপাশের অন্য কয়েকটি দেশের বাসিন্দাদের জীবনও এখন ঝুঁকির মুখে।’’ উত্তর কোরিয়ার সরকার অবশ্য সঙ্গে সঙ্গেই ওই রিপোর্টের দাবি খারিজ করে দিয়েছে। পিয়ংইয়্যাংয়ের দাবি, তাদের দেশের কোনও এলাকার ভূগর্ভস্থ জলে তেজস্ক্রিয় বিকিরণের প্রমাণ মেলেনি। অথচ সংবাদমাধ্যমের কাছে এই দাবির সপক্ষে কোনও প্রমাণ পেশ করতে পারেনি তারা।

তবে রিপোর্ট দেখে নড়েচড়ে বসেছে চিন ও জাপানের মতো দেশ। তারা তেজস্ক্রিয় বিকিরণের উপরে পরীক্ষা ও নজরদারির গতি বাড়াচ্ছে বলে জানিয়েছে। এর আগে, ২০১৫ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার খাদ্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা তাদের একটি রিপোর্টে দাবি করেছিল, উত্তর কোরিয়া থেকে চিন হয়ে ঘুরপথে যে মাশরুম তাদের দেশের বাজারে আসে, তাতে স্বাভাবিকের তুলনায় ন’গুণ বেশি তেজস্ক্রিয় আইসোটোপের অস্তিত্ব মিলেছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে কিম সপ্তম বারের জন্য পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা করতে চলেছেন বলে বার বার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে আমেরিকা ও দক্ষিণ কোরিয়া প্রশাসন। আশঙ্কা সত্যি হলে উত্তর কোরিয়ার সাধারণ মানুষের বিপদ আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন