চর-বিতর্ক নিয়েই চতুর্থ ইনিংস শুরু পুতিনের

রবিবার রাত। মস্কোর রেড স্কোয়ারের কাছে উপচে পড়ছে ভিড়। বহু দূর থেকেও শোনা যাচ্ছে ‘রাশিয়া’ ‘রাশিয়া’ চিৎকারটা। ভিড়ের মাঝে দাঁড়িয়ে ৬৫ বছরের ভ্লাদিমির ভ্লাদিমিরোভিচ পুতিন বললেন, ‘‘এই ঐক্যটা বজায় রাখা খুব প্রয়োজন। আমাদের মহান মাতৃভূমির ভবিষ্যতের চিন্তা এখান থেকে শুরু হোক।’’

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মস্কো শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৮ ০৩:০৬
Share:

রবিবার রাত। মস্কোর রেড স্কোয়ারের কাছে উপচে পড়ছে ভিড়। বহু দূর থেকেও শোনা যাচ্ছে ‘রাশিয়া’ ‘রাশিয়া’ চিৎকারটা। ভিড়ের মাঝে দাঁড়িয়ে ৬৫ বছরের ভ্লাদিমির ভ্লাদিমিরোভিচ পুতিন বললেন, ‘‘এই ঐক্যটা বজায় রাখা খুব প্রয়োজন। আমাদের মহান মাতৃভূমির ভবিষ্যতের চিন্তা এখান থেকে শুরু হোক।’’

Advertisement

আরও এক বার রাশিয়া শাসনের ভার তাঁরই হাতে তুলে দিয়েছে জনতা। রবিবার রাতেই সেন্ট্রাল ইলেকশন কমিশন ঘোষণা করেছে, বিপুল সংখ্যক ভোট পেয়ে (প্রায় ৭৭ শতাংশ) চতুর্থ বারের জন্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন পুতিন। তাঁর নিকট প্রতিদ্বন্দ্বী কমিউনিস্ট নেতা পাভেল গ্রুদিনিন পেয়েছেন ১৩%ভোট। আর জাতীয়তাবাদী নেতা ভ্লাদিমির ঝিরিনোভস্কির ঝুলিতে রয়েছে মাত্র ৬% ভোট।

২০১৪ সালে ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধে জেতা ক্রিমিয়ার ৯২% মানুষও পুতিনকেই ভোট দিয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের তথ্য বলছে, এ বার পুতিন যত ভোট পেয়েছেন, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পরে কোনও নেতা এত ভোট আর কখনও পাননি।

Advertisement

আরও পড়ুন: খুশি নয়া প্রজন্ম, রইল কাঁটাও

রেকর্ড আরও আছে। পুতিনের আগে একমাত্র সোভিয়েত একনায়ক জোসেফ স্তালিনই একটানা এত বছর ক্ষমতায় ছিলেন। আর কোনও রাষ্ট্রনায়ক ২৪ বছর ধরে ক্ষমতার শীর্ষে থাকার সুযোগ পাননি। ভোটে অবশ্য ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ এনেছেন বিরোধীরা। যদিও নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য, কয়েকটি বুথে কিছু অসঙ্গতি থাকলেও মোটের উপর গোটা নির্বাচন সুষ্ঠু ভাবেই হয়েছে।

কাল প্রেসিডেন্টের কাছে এক সাংবাদিকের প্রশ্ন ছিল, ২০২৪-এর পরেও কি ভোটে দাঁড়াবেন? হেসে সরাসরি জবাব না দিয়ে পুতিন বলেন, ‘‘আপনাদের কি মনে হয়? একশো বছর পর্যন্ত আমি দায়িত্ব নিজের হাতে রেখে দেব?’’

পুতিনের জয়ে উচ্ছ্বসিত চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং। তিনি আজ জানিয়েছেন, রুশ প্রেসিডেন্টের এই জয়ে দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক অন্য মাত্রা নেবে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও অভিনন্দন জানিয়েছেন পুতিনকে। জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে শুভেচ্ছা জানিয়ে ফোন করেও সেই সঙ্গে রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহার নিয়ে রাশিয়াকে সতর্ক করেছেন। তাতে পুতিনের জবাব জানা যায়নি, তবে এই স্ক্রিপাল বিতর্ক যে সহজে তাঁর পিছু ছাড়বে না, তা বোধহয় ভাল ভাবেই বুঝছেন পুতিন।

ক্রিমিয়া নিয়ে ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ আর সিরিয়ায় আসাদ বাহিনীকে সমর্থনের সময় থেকে পশ্চিমী দেশগুলির সঙ্গে রাশিয়ার দূরত্ব বাড়ছে। সম্প্রতি ব্রিটেনে প্রাক্তন রুশ চর সের্গেই স্ক্রিপাল আর তাঁর মেয়ের উপর রাসায়নিক হামলার ঘটনায় সেই সম্পর্ক আরও তলানিতে ঠেকেছে। উল্টে বেড়েছে আমেরিকার চাপানো আর্থিক নিষেধাজ্ঞার বোঝা।

দেশে বাড়তে থাকা দারিদ্রের সঙ্গে এই নয়া নিষেধাজ্ঞা পুতিনের কপালে ভাঁজ ফেলবে কি? সে সব সামলে চতুর্থ ইনিংসে পুতিন কতটা সাবলীল ব্যাট করেন, সেটাই দেখার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন