এই খুনিকে নিয়েই তোলপাড় আমেরিকা
মার্কিন মুলুকে সবচেয়ে ‘ভয়ঙ্কর’ খুনি বলা হচ্ছে একে। তার হাতে খুন হয়েছেন ৯০ জন! রমরমা ব্যবসা ড্রাগ চালানেরও। বয়সের ভারে একটু নুয়ে পড়লেও, দু’চোখে এখনও খুনির ঠাণ্ডা দৃষ্টি। উচ্চতায় ৬ ফুটের বেশি বিশাল বপুর একদা বক্সার স্যামুয়েল লিটল এই মুহূর্তে মার্কিন মুলুকে অন্যতম আলোচ্য বিষয়।
এফবিআই সূত্রে জানা গেছে যে টেক্সাসের একটি জেলে আপাতত বন্দি রাখা হয়েছে স্যামুয়েলকে। যদিও তার আসল নাম স্যামুয়েল ম্যাকডাওয়েল বলে জানানো হয়েছে। ডিএনএ পরীক্ষা হয়েছে স্যামুয়েলের। পুলিশি জেরায় স্যামুয়েল জানিয়েছে, ১৯৭০ সাল থেকে সে এই নির্বিচারে খুন শুরু করেছে।
বেশিরভাগ শিকারের নাম ও পরিচয় কিছুই মনে করতে পারেনি স্যামুয়েল। কিন্তু কোন শহরে কত জনকে হত্যা করেছে সে, তা প্রায় পরিষ্কার মনে করে বলতে পারে সে। এফবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসার ক্রিস্টিয়ানা পালাজোর কথায়, ১৯৭০ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত আমেরিকার নানা জায়গায় এই হত্যালীলা চালিয়েছে স্যামুয়েল। ৯০ জনের মধ্যে ৩৪ জনকে শনাক্ত করেছে পুলিশ ও গোয়েন্দারা। বাকিদের নাম নিজেই জানাতে পারেনি হত্যাকারী স্যামুয়েল।
আরও পড়ুন: রাশিয়াকে যুদ্ধের হুমকি ইউক্রেনের
মাদক পাচারের দায়ে ২০১২ সালে কেন্টাকি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল তাকে। তবে প্রমাণের অভাবে ছাড়া পেয়ে যায় সে। পরে, আশ্রয় নেয় এক শরণার্থী শিবিরে। নিজে মাদক পাচারের সাথে জড়িত থাকলেও মূলত মাদকাসক্ত এবং যৌনকর্মীদেরই খুন করত স্যামুয়েল। তবে কী কারণে এই খুন, সেই নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। তদন্তকারীদের কথায়, একাধিক অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত ছিল সে।
যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিত হয়েছে স্যামুয়েল। সে বিকৃত মানসিকতার শিকার বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। মিসিসিপি ও ফ্লোরিডাতে ১৯৮০ সালে একাধিক মহিলা যৌনকর্মীকে খুন করেছিল সে। খুনের পর সেই দেহগুলো লুকিয়েও রেখেছিল সুকৌশলে। ১৯৮৭-১৯৮৯ সালের মধ্যে লস অ্যাঞ্জেলসে তিন জন মহিলা খুন হন তার হাতে। প্রত্যেককেই মারধরের পর শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: শরণার্থী বিদ্বেষ। ইংল্যান্ডের স্কুলে সিরিয়ান ছাত্র মার খেল সহপাঠীর কাছে!
শুধু মহিলা নয়, নানা সময় পুরুষরাও রেহাই পায়নি তার হাত থেকে। খুনের ধরনেও ছিল বৈচিত্র। সব সময় একই ভাবে খুন করতো না স্যামুয়েল। পুলিশ জানিয়েছে, স্যামুয়েলের কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
জেরায় সে আরও অনেক অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত থাকার অপরাধ স্বীকার করে নিয়েছে। তদন্ত এখনও অনেক বাকি বলে জানানো হয়েছে পুলিশের তরফে।