ধর্ষণ বিতর্ক

পুলিশি তৎপরতায় ক্ষুব্ধ সৌদি রাষ্ট্রদূত

সৌদি কূটনীতিকের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া দুই নেপালি মহিলার উপর ধর্ষণের প্রমাণ মিলল ডাক্তারি পরীক্ষায়। প্রাথমিক রিপোর্টের ভিত্তিতে ধর্ষণের অভিযোগও দায়ের করেছে পুলিশ। কিন্তু সৌদি দূতাবাস আজ সাফ জানিয়ে দিয়েছে, তাদের কর্মীর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যে। এমনকী পুলিশি তৎপরতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে আজ বিদেশ মন্ত্রকের যুগ্মসচিবের সঙ্গে দেখাও করেন ভারতে সৌদির রাষ্ট্রদূত মহম্মদ আলসতি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০২:৫২
Share:

সৌদি কূটনীতিকের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া দুই নেপালি মহিলার উপর ধর্ষণের প্রমাণ মিলল ডাক্তারি পরীক্ষায়। প্রাথমিক রিপোর্টের ভিত্তিতে ধর্ষণের অভিযোগও দায়ের করেছে পুলিশ। কিন্তু সৌদি দূতাবাস আজ সাফ জানিয়ে দিয়েছে, তাদের কর্মীর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যে। এমনকী পুলিশি তৎপরতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে আজ বিদেশ মন্ত্রকের যুগ্মসচিবের সঙ্গে দেখাও করেন ভারতে সৌদির রাষ্ট্রদূত মহম্মদ আলসতি। কূটনৈতিক রক্ষাকবচ থাকা সত্ত্বেও যে ভাবে ওই দূতাবাস কর্মীর বাড়িতে পুলিশ জোর করে ঢুকে পড়েছিল, তার কড়া সমালোচনা করেন আলসতি।

Advertisement

ঘটনার সূত্রপাত সোমবার রাতে। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার থেকে খবর পেয়ে গুড়গাঁওয়ের ডিএলএফ ফেজ-২-এর এক আবাসনে হানা দেয় হরিয়ানা পুলিশের দল। প্রথমে বাধার মুখে পড়লেও ছ’তলার এক ফ্ল্যাট থেকে পাওয়া যায় দুই নেপালি মহিলাকে। সম্পর্কে তাঁরা মা ও মেয়ে। ওই দুই মহিলা পুলিশকে জানিয়েছেন, ভূমিকম্পের পর থেকেই দেশছাড়া তাঁরা। কল্পনা নামে এক জন তাঁদের বিক্রি করে দেয় আনোয়ার নামে ভারতের এক দালালের কাছে। তার হাত ঘুরে, মাস চারেক আগে এই বাড়ির কাজে যোগ দেওয়ার পর তাঁদের প্রথমে জেড্ডায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানে সব ঠিকঠাকই ছিল। কিন্তু ভারতে ফিরে আসার পর থেকে শুরু হয় অত্যাচার। দিনের পর দিন ধর্ষণ, অতিথিদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে বাধ্য করা, ঘরে আটকে
রাখা, খেতে না দেওয়া— বাদ যায়নি কিছুই। কোনও শব্দ করলেও ছুরি নিয়ে ভয় দেখাত বাড়ির মালিক।

অল্প কয়েক দিন আগে আরও এক নেপালি মহিলা তাঁদের সঙ্গেই কাজ যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু অত্যাচারের বহর দেখে তিন দিনের মাথাতেই পালিয়ে যান তিনি। যোগাযোগ করেন এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে। বুদ্ধি করে নিজের ফোনটি ওই বাড়িতে ফেলে রেখে এসেছিলেন তিনি। সেই সূত্র ধরেই যোগাযোগ করা হয় বাকি দু’জনের সঙ্গে। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটিই খবর দেয় পুলিশে। গত পরশু রাতে নেপাল দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে গুড়গাঁওয়ের ওই আবাসনে হানা দেয় হরিয়ানা পুলিশের প্রায় ৪০ জনের একটি দল।

Advertisement

পর দিন দায়ের করা হয় ধর্ষণের অভিযোগ। কিন্তু সৌদি রাষ্ট্রদূতের কড়া প্রতিক্রিয়ার পর আজ অনেকটাই সুর নরম করেছে পুলিশ।

ভিয়েনা সনদ অনুযায়ী, কোনও বিদেশি রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকরা ফৌজদারি মামলার ক্ষেত্রে কিছু বিশেষ রক্ষাকবচের সুবিধে পান। গুরুতর অভিযোগ উঠলে এ দেশের বিদেশ মন্ত্রক সৌদি দূতাবাসকে তা জানাতে পারে। একমাত্র তাদের সম্মতি থাকলে পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে পারবে। আর না হলে সেই দূতাবাস যদি নিজের কর্মীকে দেশে ফিরে যাওয়ার অনুমতি দেয়, সে ক্ষেত্রে আর কিছুই করার থাকবে না পুলিশের।

ফার্স্ট সেক্রেটারি পর্যায়ের ওই সৌদি কূটনীতিকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ ভুয়ো বলে তাদের রাষ্ট্রদূতের বিবৃতির পর এ দিন পুলিশ কমিশনারও জানান, এফআইআর মানেই অপরাধ প্রমাণ হওয়া নয়।

বুধবার রাতে অবশ্য জানা যায়, দু’টি ডাক্তারি পরীক্ষার রিপোর্ট-সহ ঘটনার বিস্তারিত বিররণ বিদেশ মন্ত্রককে আজই ই-মেলে পাঠিয়েছে পুলিশ। পাশাপাশি, আবাসনের সিসিটিভি ফুটেজ জোগাড়েরও চেষ্টা চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন