ফেরি ডুবে যাওয়ার পর নদীর স্রোতে ভেসে যাচ্ছেন যাত্রীরা। ছবি: ভিডিয়ো থেকে নেওয়া
ইরাকে নৌকাডুবিতে মৃত্যু হল অন্তত ৭১ জনের। নিখোঁজ আরও অনেকে। মৃতদের মধ্যে মহিলা ও শিশুর সংখ্যাই বেশি। বেসরকারি সূত্রে মৃতের সংখ্যা আরও বেশি। ১৯ শিশু-সহ অন্তত ৬৭ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে বলে ইরাকের প্রশাসনিক সূত্রে খবর। বৃহস্পতিবার মসুলের কাছে টাইগ্রিস নদীতে অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই একটি ফেরি ডুবে গেলে এই দুর্ঘটনা ঘটে। উদ্ধারে নেমেছে ইরাকের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। ইরাকের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রকের মুখপাত্র মেজর জেনারেল সাদ মান সংবাদ মাধ্যমে বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবারের ঘটনায় অন্তত ৭১ জনের মৃত্যু হয়েছে।’’ ঘটনায় শোকপ্রকাশ করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন ইরাকের প্রধানমন্ত্রী আদিল আবদুল মাধি।
ইরাক, ইরান-সহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে পার্সি এই সময় নতুন বছর হিসেবে পালিত হয় ‘নওরোজ’। ইরাকের নৌকাডুবিতে উদ্ধারকারী দলের সূত্রে খবর, সেই উপলক্ষ্যেই অন্তত ২০০ জন যাত্রী নিয়ে ওই ফেরিটি টাইগ্রিস নদী পেরিয়ে একটি বিনোদন দ্বীপে যাচ্ছিল। অধিকাংশ যাত্রীই নতুন বছরের উৎসবে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন। সেই সময়ই মাঝ নদীতে ডুবে যায় ফেরিটি। খবর পেয়ে পৌঁছয় উদ্ধারকারী দল। একাধিক স্টিমার বোটের পাশাপাশি হেলিকপ্টার নামানো হয় উদ্ধারে। তার আগে স্থানীয়রাও উদ্ধারে হাত লাগান।
নৌকাডুবির পর মোবাইলে তোলা একাধিক ভিডিয়ো ছড়িয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তাতে দেখা যাচ্ছে, প্রবল জলস্রোতে ভেসে যাচ্ছেন প্রচুর মানুষ। সাহায্যের জন্য আর্ত চিৎকার করছেন। যে যা পেয়েছেন, সেটাই আঁকড়ে ধরে বাঁচার চেষ্টা করছেন। উল্টে যাওয়া ফেরিটিও দেখা গিয়েছে ওই সব ভিডিয়োতে। তবে তার মধ্যেই কয়েক জনকে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে উদ্ধারে নামার ছবিও ধরা পড়েছে।
আরও পড়ুন: আজ তাঁদের নববর্ষ, কলকাতার পার্সিরা মেতেছেন উৎসবে
আরও পড়ুন: টাকা দিয়ে মার্কিন গ্রিনকার্ড কিনতে ভিড় ভারতীয়দের, সংখ্যা বাড়ল ৩০০ শতাংশ
প্রধানমন্ত্রী মাধি একটি বিবৃতি দিয়ে ঘটনায় শোক প্রকাশ করে বলেছেন, ‘‘অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে’ এই ঘটনার উপর নজর রাখছি। সরকারি তরফে নিখোঁজদের উদ্ধার এবং বেঁচে যাওয়া যাত্রীদের চিকিৎসার সব রকম ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত করে কার গাফিলতি তা খুঁজে বার করতে নির্দেশ দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দফতর।
আরও পড়ুন: মুকুলদের হতাশ না করেও সঙ্ঘের দাপট প্রার্থীতালিকায়, রাজনৈতিক মুখেই বেশি আস্থা রাখল বিজেপি
ইরাকের উদ্ধারকারী দলের একটি সূত্রে খবর, টাইগ্রিস নদীতে জলস্ফীতি এবং তীব্র জলস্রোতের সতর্কবার্তা ছিল। কারণ, মসুলের নদীবাঁধের গেট খুলে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ফেরিচালক সংস্থা সে সব উপেক্ষা করেই অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে ওই বিনোদন দ্বীপের উদ্দেশে রওনা দেয় ফেরিটি। মাঝ পথেই বিপর্যয়। ইরাকের নিরাপত্তা বাহিনীর এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ফেরির বহন ক্ষমতার অন্তত দ্বিগুন যাত্রী তোলা হয়েছিল। যদিও অন্য একটি সূত্রের দাবি, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণেই এই ঘটনা।