ওরা ভয়ে চুপ

ওদের কথায় মায়ের সম্মান ধুলোয় লুটোয়। শয়তানরা আস্কারা পায়। জনপদ হয় নন্দিত নরক। মাটিতে বাতাসে মেশে বিষ। লক্ষ লক্ষ মানুষের রক্তে দেশমাতার মুক্তি তারা মানে না। পারলে দেশটাই বেচে দেয়। তাদের কাছে অর্থ ছাড়া সব কিছুই অর্থহীন।

Advertisement

অমিত বসু

শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৬ ১৭:০১
Share:

ওদের কথায় মায়ের সম্মান ধুলোয় লুটোয়। শয়তানরা আস্কারা পায়। জনপদ হয় নন্দিত নরক। মাটিতে বাতাসে মেশে বিষ। লক্ষ লক্ষ মানুষের রক্তে দেশমাতার মুক্তি তারা মানে না। পারলে দেশটাই বেচে দেয়। তাদের কাছে অর্থ ছাড়া সব কিছুই অর্থহীন। নিরীহ মানুষের লাশের ওপর বৈভবের উল্লাস। ভাবে, এমনি করেই দিন যদি যায় যাক না। মানুষ যেমন ভয় পাচ্ছে, পাক না। না, সেটা আর হবে না। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিনতে ভুল করেছে তারা। তাঁর ভেতরের আগুন আঁচ করতে পারেনি। একের পর এক যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি দেখে আঁতকেছে। তবে কি এবার পালানোর পালা? এত দিন যা হয়েছে তা আর চলবে না। মাতৃভূমির বিরুদ্ধে সহাস্য মন্তব্যে কঠিন শাস্তি। মুক্তি যুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করে স্বার্থ চরিতার্থের সুযোগ শেষ। দেশের মান যায় এমন কথা মুখ ফসকে বেরোলেই সাজা।

Advertisement

যাদের ভয়ে সিঁটিয়ে থাকত শান্তিপ্রিয় মানুষ, এখন তারাই আতঙ্কিত। ভয় ভাবনায় দিশেহারা। অন্যায় শাসন না চললে, তাদের চলে কী করে। রাস্তা তো একটাই। নিজেদের বদলাও, নয়ত তফাতে যাও। কালো মুখ মানুষকে দেখালেই কেলেঙ্কারি। আইন কমিশনের আইনের ধারায় স্পষ্ট, মুক্তি যুদ্ধের যথার্থ ইতিহাস বিকৃত করলে পাঁচ বছরের জেল। এক কোটির জরিমানা। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে প্রশ্ন তুললেও একই শাস্তি। স্বাধীনতার ঘোষণার ইতিহাস মানতে হবে অক্ষরে অক্ষরে। তার বিরুদ্ধে বিবৃতি দিলেই গ্রেফতার।

খসড়ায় বলা হয়েছে, ১৯৭১’ এর ১ মার্চ থেকে ১৯৭১’এর ১৬ ডিসেম্বর প্রকাশিত, মুক্তি যুদ্ধের যে দলিল, তার অপব্যাখ্যা করলে রক্ষে নেই। মাথার ওপর শাস্তির খাঁড়া নামবে। ১৯৭১-এর ১ মার্চ থেকে ২৫ মার্চের ঘটনা অস্বীকার করাটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

Advertisement

১৯৭০-এর ১২ নভেম্বর প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাসে পূর্ব পাকিস্তানের উপকূলীয় অঞ্চলে লক্ষ লক্ষ মানুষের মৃত্যু। সেই ক্ষয়ক্ষতির পরোয়া না করেই এক মাসের মধ্যে নির্বাচন ঘোষণা, পশ্চিম পাকিস্তানের। বাঙালি তখন দুর্যোগের ধাক্কা সামলাতে নাজেহাল। তবুও সেই বছরের ৭ ও ১৭ ডিসেম্বরের জাতীয় পরিষদ, প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে বিপুল জয়ে বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমান গোটা পাকিস্তানের নায়ক। সে জয় মানতে পারেনি পশ্চিম পাকিস্তান। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর পর মুজিবের মতো প্রবল পরাক্রমী বাঙালি নেতার আবির্ভাব তাদের কল্পনার বাইরে ছিল। বিপাকে পরে তারা মুজিবের সঙ্গে আপোস করতে চেয়েছে। আপোসহীন মুজিব তাতে সাড়া দেননি। বাংলাদেশের জয়কে সুনিশ্চিত করে তিনি বিশ্ববন্দিত হয়েছেন। রাষ্ট্রপুঞ্জে তাঁর বাংলার ভাষণ শুনে মুগ্ধতা চেপে রাখতে পারেননি দুনিয়ার কূটনীতিকরা।

মুজিবের কাজে সামরিক, কূটনৈতিক পরাজয়ের পর তাঁকে শেষ করতে চায় পাকিস্তান। বাংলাদেশের বিশ্বাসঘাতকরা সেই কাজে সহায়ক হয়। মুজিবের মৃত্যুর পরও তারা থেমে থাকেনি। মুজিবের ইমেজ চূর্ণ বিচূর্ণ করার সঙ্গে সঙ্গে মুক্তি যুদ্ধের মহান গরিমা খর্ব করতে তৎপর হয়। এত দিন ছলে বলে কৌশলে সেই কাজটা তারা চালাচ্ছিল। আর নয়। তাদের এবার চুপ করতেই হবে। পাকিস্তানের সহায়ক শক্তি রাজাকার, আলবদর, আলশামসের সমর্থনে যুক্তি খাড়া করলেও দণ্ড।

অপরাধ দ্বিতীয়বার করলে শাস্তি দ্বিগুণ। আইনের জাল এতটাই কঠিন আর নিপুণ হচ্ছে, ফাঁক গলে বেরনোর রাস্তা নেই। বিরূপ শক্তির বিনাশে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের জয়জয়কার। প্রাণের আবেগে ধ্বনিত চিরদিনের সেই অকৃত্রিম স্বর, জয় বাংলা।

আরও পড়ুন...

বাংলাদেশ সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক কেলেঙ্কারি: ইস্তফা দিলেও পার পেতে পারেন না প্রাক্তন গভর্নর

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন